মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত হল রোগীকল্যাণ সমিতির শুক্রবারের বৈঠকে। উপস্থিত ছিলেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী তথা কলেজের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্র, মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি প্রমুখ। ছিলেন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি, হাসপাতাল সুপার রামনারায়ণ মাইতিও। দীর্ঘ দিন ধরেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে ৩টি আধুনিক ডায়ালিসিস মেশিন অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব মেডিক্যালে ডায়ালিসিস শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রীও উদ্যোগী হবেন। বৈঠকে উপস্থিত সমিতির এক সদস্যের কথায়, “প্রশাসনিক জটিলতার কারণেই এখানে আগে ডায়ালিসিস চালু করা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি বহু বার জানানো হয়েছে। কিন্তু, আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।”
বছর দু’য়েক আগে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে ডায়ালিসিসের মেশিনগুলি কেনা হয়। তবে, পরিবেষা আর চালু হয়নি। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যে মেশিনগুলি রয়েছে তাতে এক বার ডায়লিসিস করলেই ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ পড়বে। রোগীর পরিজনেদের পক্ষে এই খরচ বহন করা অসম্ভব। অথচ এমন মেশিনও রয়েছে যেখানে এক বার ডায়ালিসিস করলে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা খরচ পড়ে। ওই মেশিনই এখানে আনার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। শুক্রবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। এই সময়ের মধ্যে ফের স্বাস্থ্যভবনে যোগাযোগ করা হবে।
এরই পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব রোগীদের কাছে প্রয়োজনীয় পরিবেষা পৌঁছে দেওয়া, মেডিক্যাল চত্বরের সৌন্দর্যায়ন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধের মতো বিষয়গুলি নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা করা হবে। এই পার্কিং জোনেই একমাত্র গাড়ি থাকবে। অন্যত্র নয়। নার্সিং কলেজে যাতায়াতের রাস্তা নতুন করে তৈরি হবে। সংশ্লিষ্ট রাস্তার এক ধারে শেড তৈরি করা হবে। যাতে ঝড়জলেও কলেজে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না হয়। জরুরি-বিভাগের অদূরে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটি বছরের অধিকাংশ সময়েই অপরিষ্কার হয়ে থাকে। চারপাশ পরিষ্কার করে সৌন্দর্যায়নেরও সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, “এ দিন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ডায়ালিসিস চালু করতে এ বার দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। সিনিয়র ডাক্তার থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীসবাই যাতে সময়মতো কাজ করেন, সে দিকেও বাড়তি নজর রাখা হবে।” তবে, মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে আগেও অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সেই মতো কাজ হয়নি। এ বার কী হয়, সেটাই দেখার। |