|
|
|
|
মিলছে না পর্যাপ্ত জল, ধুঁকছে তিস্তা বিদ্যুৎ প্রকল্প |
সঞ্জয় চক্রবর্তী ও সিদ্দিক হোসেন • শিলিগুড়ি ও ফাঁসিদেওয়া |
কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় রাজ্যে লোডশেডিং চলছেই। অথচ, স্রেফ জলের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের ‘তিস্তা ক্যানাল ফল’ (টিসিএফ) জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।
তিস্তা ক্যানালের জলের উপরে নির্ভর করে চলে এই প্রকল্প। শিলিগুড়ির অদূরে লিউসিপোখরি, হফতিয়াগছ ও কালাগছে মোট ৯টি ইউনিটের জন্য (প্রতিটি সাড়ে ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন) প্রতিদিন ক্যানাল থেকে অন্তত ৩৩০ কিউমেক হারে জলের প্রয়োজন। তিস্তা সেচ কর্তৃপক্ষ সেখানে কখনও ৫০, কখনও ৭০ কিউমেক হারে জল সরবরাহ করায় প্রতিদিন কোনও রকমে ৩টি করে ইউনিট চালানো হচ্ছে। ফলে, ৬০০ কোটি টাকা জাপানি ঋণে তৈরি প্রকল্পটি কার্যত ‘ধুঁকছে’।
রাজ্য জলবিদ্যুৎ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়র সুধাময় দে বলেন, “জল ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে কী করে? এখন যা জল মিলছে তাতে প্রতিদিন ১৫-১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে। জল বেশি পেলে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।” মঙ্গলবার বিধানসভার সেচ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধিরা শিলিগুড়ি ঘুরে যাওয়ার পরে অবশ্য তিস্তা সেচ কর্তৃপক্ষ বুধবার সকাল থেকে ‘টিসিএফ’-এ জলের পরিমাণ ১২০ কিউমেকে বাড়িয়েছেন।
১৯৭৬ সালে তৈরি হয় তিস্তা ক্যানালটি। তিস্তা সেচ দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০০৬-২০০৮ সাল পর্যন্ত ওই ক্যানাল দিয়েই প্রতিদিন যে পরিমাণ জল দেওয়া হয়েছে, তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ এক সময়ে দাঁড়িয়েছিল দৈনিক ৫৫ মেগাওয়াটে। তার পরে সাহুডাঙি এবং ফাঁসিদেওয়ায় পর পর দু’বার ক্যানালের পাড় ভেঙে যায়। ফলে, জলের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে বহু জায়গায় পাড়ের কংক্রিটের চাঁই ভেঙে পড়েছে। কিন্তু ওই ক্যানালটি থেকেই শিলিগুড়ি শহরের পানীয় জল প্রকল্পে জল সরবরাহ করতে হওয়ায়, এই মুহূর্তে সেখানে মেরামতির কাজ করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জলের পরিমাণ বাড়ালে ফের ক্যানালের পাড় ভাঙার আশঙ্কা থাকায় ‘টিসিএফ’-কে প্রতিদিন ৩৩০ কিউমেক হারে জল দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি তিস্তা সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের। তিস্তা সেচ প্রকল্পের ব্যারাজ ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “ক্যানাল মেরামতি না হওয়াতেই টিসিএফে জল দিতে সমস্যা হচ্ছে। গত বছর কিছুটা মেরামতি হয়েছে। ফের আগামী বছর মেরামতি হবে। শিলিগুড়ির পুর-কর্তৃপক্ষও সরাসরি গজলডোবা থেকে পানীয় জল আনার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তা তৈরি হয়ে গেলে সমস্যা মিটবে।” |
|
|
|
|
|