কয়লার মজুত কম। তাই বিদ্যুতের উৎপাদনও করতে হচ্ছে রয়েসয়ে। এই অবস্থায় শুক্রবার রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরকে কিছুটা স্বস্তি দিল আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুরের পরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ভাল বৃষ্টি হয়েছে। তার জন্য এক ধাক্কায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে গিয়েছে সাড়ে ৩৫০ মেগাওয়াটের মতো। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলেও রাজ্যে এ দিন বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ কমে হয়েছে ১০০ মেগাওয়াট। পুরোটাই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এলাকায়। সিইএসসি এলাকায় বৃহস্পতিবার রেকর্ড চাহিদার সময়ও ঘাটতি ছিল না। শুক্রবারেও হয়নি।
কিন্তু কয়েক দিনের মতো চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকলে এ দিন যে ভোগান্তি আরও বাড়ত, তার ইঙ্গিত সকালেই পেয়েছিলেন বিদ্যুৎ কর্তারা। এক বিদ্যুৎ কর্তা বলেন, “বৃহস্পতিবারই রাতে নিগমের সাঁওতালডিহি কেন্দ্রের ছয় নম্বর ইউনিটটি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল। সেটি শুক্রবার বিকেলে উৎপাদন শুরু করলেও, বিকল হয়ে যায় ৫ নম্বর ইউনিটটি। সাঁওতালডিহিতে ওই দু’টি ইউনিটই এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। দু’টিরই উৎপাদন ক্ষমতা ২৫০ মেগাওয়াট করে।”
কয়লা সমস্যা কিন্তু গভীর সঙ্কটের দিকেই এগোচ্ছে। এর আগে বকেয়া না মেটানোয় ইসিএল কয়লা দেওয়া বন্ধ করেছিল। এ বার কোল ইন্ডিয়া সূত্রে বলা হয়েছে, তাদের নিয়ম হল আগাম টাকা নিয়ে কয়লা দেওয়া। বিদ্যুৎ সংস্থারা আগাম ১০ দিনের কয়লার দাম জমা দিলে তবেই তাদের কয়লা পাঠানোর কথা কোল ইন্ডিয়ার। সেখানে রাজ্যের বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম আগাম দেওয়া তো দূরের কথা, আড়াই মাসের কয়লার দাম চোকায়নি বলে অভিযোগ কোল ইন্ডিয়ার। কোল ইন্ডিয়ার এক কর্তা বলেন, “বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা যদি বিলের টাকা না মেটান, তাঁদের লাইন কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু নিগম আশা করছে, তারা আড়াই মাসের টাকা না দিলেও আমরা কয়লা দিয়ে যাব। এটা চলতে পারে না।”
কোল ইন্ডিয়ার মতো অবস্থা সঙ্গীন বেঙ্গল-এমটা-রও। নিগমের কয়লা খনি থেকে তারা কয়লা তোলে নিগম আর ডিপিএল-এর জন্য। বেঙ্গল-এমটা বলে দিয়েছে, বকেয়া না পেলে এক মাস পরে আর কয়লা তোলার মতো টাকা থাকবে না তাদের। কয়লা তোলা বন্ধ হয়ে গেলে এদের কাছ থেকেও কয়লা পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে দুই বিদ্যুৎ সংস্থার। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেবল নিগমের কাছেই বেঙ্গল-এমটা-র পাওনা ছিল ৭৫ কোটি টাকা। গত ২০ দিনে আরও প্রায় ২০ কোটি টাকার পাওনা যোগ হয়েছে। |