|
|
|
|
ধৃত ৩ শবরের মুক্তি |
বাহিনীর বিরুদ্ধে ফের নির্যাতনের অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী গত ১৫ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের সভায় মাওবাদীদের সম্পর্কে প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই জঙ্গলমহলে পুলিশ-কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল-তল্লাশি বেড়েছে লক্ষ্যণীয় ভাবে। আর সেই তল্লাশি অভিযান ঘিরে উঠতে শুরু করেছে নিরীহদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ।
মাওবাদী-ডেরার সন্ধানে গিয়ে ঝাড়গ্রামের পাটাশিমুল অঞ্চলের নেকড়াবিন্ধ্যায় গত মঙ্গলবার গুলির লড়াই বেধেছিল বলে দাবি পুলিশের। তিন জনকে আটক করে সংবাদমাধ্যমে তাঁদের ‘সন্দেহভাজন মাওবাদী’ বলে দাবি করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত শবর সম্প্রদায়ভুক্ত ওই তিন জনকেই নিঃশব্দে ছেড়ে দিতে হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। কিন্তু ওই ঘটনায় ঝাড়গ্রামের আউলগেড়িয়া গ্রামের ১৬টি শবর পরিবার আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া হয়েছেন। |
|
মঙ্গলবার এঁদেরই মাওবাদী সন্দেহে আটক করে পুলিশ। ফাইল চিত্র |
টহল-তল্লাশির নামে জঙ্গলমহলে নিরীহ মানুষজনকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। সমিতির সম্পাদক বলাইচন্দ্র নায়েকের অভিযোগ, “আদিম জনগোষ্ঠীভুক্ত শবরদের মাওবাদী সাজিয়ে মিথ্যা কলঙ্কের বোঝা চাপানো হচ্ছে।” জেলাশাসকদের বক্তব্য, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মঙ্গলবার আটকদের ছবি তুলতে দিলেও ‘তদন্তের স্বার্থে’র কথা বলে পুলিশ তাঁদের পরিচয় জানাতে চায়নি সংবাদমাধ্যমে। বুধবার আটকদের আদালতে তোলা হয়নি। ঝাড়গ্রাম থানা থেকেই ব্যক্তিগত জামিনে তিন জনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
অনেক জেরার পরেও পুলিশ ওই তিন জনের ‘মাওবাদী-যোগ’ খুঁজে পায়নি। অন্য কোনও অভিযোগও ছিল না। লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি সূত্রের বক্তব্য, আটক অর্জুন শবর, মিঠুন শবর ও অমরেশ শবরের বাড়ি আউলগেড়িয়ায়। সমিতির সম্পাদক বলাই নায়েকের দাবি, মঙ্গলবার মাঝবয়সী অর্জুন বাড়ির উঠোনে বসে শালপাতা সেলাই করছিলেন। সেই সময়েই পুলিশ তাঁকে ধরে। দুই তরুণ মিঠুন ও অমরেশ মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তখনই পুলিশ ধরে। বলাইবাবুর অভিযোগ, এ ভাবে নিরীহদের মাওবাদী সাজিয়ে সামাজিক মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে পুলিশ। তাঁর প্রশ্ন, জিজ্ঞাসাবাদের আগেই পুলিশ কেন ‘মাওবাদী’ বলে অর্জুন, মিঠুন, অমরেশের ছবি তুলতে দিল আলোকচিত্রীদের। মঙ্গলবার তল্লাশির নামে লোধা-শবরদের গ্রামে গিয়ে পুলিশ বাসিন্দাদের মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন বলাইবাবুরা। এ রকম চললে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে লোধা-শবর সংগঠনটি। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার গৌরব শর্মার দাবি, “এখনও পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি। হলে খতিয়ে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|