পাঠানো হল মেদিনীপুরে
‘মাওবাদী’ প্রকাশের নামে ৫টি মামলা, জানাল পুলিশ
‘মাওবাদী’ পরিচয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করতে যাওয়া যুবকের বিরুদ্ধে খুন, পুলিশের উপরে হামলা, মাইন বিস্ফোরণ-সহ পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে দাবি করল রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ (আইবি)। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) সূত্রের বক্তব্য, প্রকাশ আচার্য (২৪) নামে ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি অঞ্চলের টুটুহা গ্রামের ওই যুবক বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির কার্যালয়ে গিয়ে দাবি করেন, মাওবাদী কার্যকলাপ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় পুলিশ তাঁকে জড়িয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে চান। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরাই তখন তাঁকে এসটিএফের হাতে তুলে দেন। ওই যুবকের দাবির সত্যতা যাচাই করতে এসটিএফের অফিসারেরা বৃহস্পতিবার রাতে ঝাড়গ্রাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শুক্রবার সকালে তাঁকে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রকাশ আচার্য। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের দাবি, ঝাড়গ্রাম পুলিশ জানিয়েছে, সাঁকরাইল, বেলিয়াবেড়া এবং ঝাড়গ্রাম থানায় প্রকাশের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, লুঠ, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের পাঁচটি মামলা রয়েছে। সবক’টি মামলাতেই তাঁর নামে পরোয়ানা জারি হয়েছে। একই সঙ্গে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, প্রকাশ মূলত ‘পুলিশি সন্ত্রাস-বিরোধী জনগণের কমিটি’-র সদস্য হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। ‘মাওবাদী নেতা’ গোছের কোনও পরিচিতি তাঁর নেই। আত্মসমর্পণের জন্য ঝাড়গ্রাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ না করে কেন ওই যুবক সটান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন? গোয়েন্দাদের বক্তব্য, জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রকাশ জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে তিনি বাড়ি-ছাড়া। তিনি বিবাহিত। তাঁর দু’বছরের সন্তানও আছে। বাড়ি-ছাড়া হওয়ায় আর্থিক অনটনও বাড়ছে। দু’বেলা খাবারও জুটছে না। মানসিক ভাবে তিনি বিধ্বস্ত। তাঁর মনে হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি আত্মসমর্পণ করতে পারলে সহজেই ঘরে ফিরতে পারবেন এবং পুলিশও আর তাঁকে জেলে ঢোকাবে না। কী ভাবে কলকাতায় এলেন তিনি? প্রকাশ গোয়েন্দাদের জানান, বুধবার ঝাড়গ্রাম থেকে ট্রেনে চেপে তিনি হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। সেখান থেকে তিনি যান বাগবাজারে। সেখানে তাঁর এক বন্ধু মেসে থাকেন। সেখানে রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে যান কালীঘাট মন্দির দেখতে। মন্দির ঘুরে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে।
গোয়েন্দারা আরও জানান, প্রকাশের দাবি, জনগণের কমিটিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ছিলেন। পরেও তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। মাওবাদী কার্যকলাপে তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন বলেও ওই যুবক জানিয়েছেন। ঝাড়গ্রামে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ করার কথা বলায় তিনি আশার আলো দেখেন। তাঁর মনে হয়, আত্মসমর্পণ করলে সরকারি সাহায্য মিলবে। আর্থিক অনটনও দূর হবে। গোয়েন্দারা জানান, প্রকাশকে ঝাড়গ্রাম পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেখানকার পুলিশই তাঁর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। শুক্রবার রাতেই তাঁকে মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.