সাবেক-থিমের মেলামেশা
দুর্গোৎসবের চল বেশি হলেও কালীপুজোতেও কম যায় না বিধাননগর। যেমন, বিএফ-সিএফ ব্লকে মৈত্রী সঙ্ঘের পরিচালনায় শ্যামাপুজো। গত বার কলকাতায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল তারা। এ বার তাদের ভাবনায় টেরাকোটার মন্দির। প্রতিমাতেও টেরাকোটার আদল। মানানসই আলোকসজ্জা। উদ্যোক্তারা জানান, সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দু’দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মুম্বই ও কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীরা অংশ নেবেন।
বিধাননগরের কালীপুজো বলতে বহিরাগতদের মুখে এখনও যে ক’টি নাম ঘোরে, তাদের অন্যতম বিডি ব্লকে বলাকা স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো। এ বারে মণ্ডপ গড়ে উঠছে দুর্গের আদলে। ১৭ ফুট উচ্চতার শ্যামাকালী। এখানেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপর জোর দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
দুর্গোৎসবে না হলেও বিধাননগর পুরসভার দত্তাবাদ ও সংযুক্ত এলাকায় ঘটা করেই শ্যামাপুজো হয়। রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে। প্রাক সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে দত্তাবাদের নবাঙ্কুর সঙ্ঘের পুজোয় আড়ম্বর কমিয়ে সামাজিক অনুষ্ঠানের উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। সাবেক এই পুজোর মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে মন্দিরের আদলে। প্লাই, কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ।
তেমনই সুকান্তনগর এলাকায় শ্যামাপুজোর রমরমা। বাইপাস থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টরের দিকে যেতে রাস্তার উল্টো দিকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পর পর তিনটি ক্লাবের পুজো। সুকান্তনগর সেন্টার ফর কালচার অ্যান্ড স্পোর্টসের এ বারের ভাবনায় রয়েছে পাটের তৈরি মন্দির। ডাকের সাজে ১৬ ফুটের প্রতিমা।
কম যায় না নবজ্যোতি স্পোর্টিং ক্লাবও। তাদের এ বারের থিম চুলের ফিতের রঙিন খেলা, লোকশিল্পের পুতুল খেলা। রক্ষাকালী রূপে প্রতিমা তৈরি হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের তরফে স্বপন মিশ্র জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। থিম পুজো করে সাড়া ফেলে দেওয়া সুকান্তনগর স্পোর্টিং ক্লাব অবশ্য এ বার সাবেক পুজোয় ফিরেছে। তাদের ক্লাবের এক সদস্যের প্রয়াণে এ বারের পুজোয় আড়ম্বর কমছে বলে জানান উদ্যোক্তারা।
সুকান্তনগরের মতো বিধাননগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টি আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘের পুজোয় এ বার ঝুড়ি ও ঝুড়ির কাঠি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ ও প্রতিমা।
আলোকসজ্জাতেও থাকছে চমক। অন্যতম কর্মকর্তা জয়দেব নস্কর জানান, শুধু পুজোর আড়ম্বরই নয়, সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।
এর পাশাপাশি এই ব্লক (পার্ট ওয়ান), এসি, এজে, বিজে, জিডি, এফই ব্লকে হচ্ছে সাবেক পুজো। থিম কিংবা সাবেক যা-ই হোক না কেন, বিধাননগরে শ্যামাপুজোর সব চেয়ে বড় আকর্ষণ আতসবাজির প্রদর্শনী ও মুম্বই-কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান। রীতিমতো প্রতিযোগিতার পরিবেশ এ সময়ে ছড়িয়ে পড়ে বিধাননগরের বিভিন্ন এলাকার পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে।

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.