|
|
|
|
|
|
থিম সমাজসেবা |
থিমপুজোর পাশাপাশি নানা রকম সামাজিক কর্মসূচি পালন। রাজারহাটের পুর ও
গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন পুজোর প্রস্তুতি দেখে এলেন প্রসেনজিৎ পাঠক |
কালীপুজোয় বারাসতের খ্যাতি দীর্ঘ দিনের। এ বার টেক্কা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজারহাট। তবে শুধুই উৎসব নয়, সমাজসেবার জন্যও রাজারহাটের পুর-এলাকার কালীপুজোর খ্যাতি রয়েছে। পিছিয়ে থাকে না রাজারহাটের গ্রামীণ এলাকার পুজোগুলিও।
এ বার লালকুঠির পার্থনগরীর নেতাজি সঙ্ঘে থিম শিবলিঙ্গের আধ্যাত্মিকতা। রয়েছে রিকশা, ভ্যান, প্রতিবন্ধী সহায়ক যান, ছাত্রছাত্রী ও দুঃস্থদের আর্থিক সহায়তা-সহ নানা কর্মসূচি। কৃষ্ণনগরের পুরনো এক রাজবাড়ির আদলে মণ্ডপ করছে প্রগতি সঙ্ঘ। সামনে থাকবে দু’টি কামান। এ বার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পাঠাগার ও কম্পিউটার সেন্টারে অর্থদান করা হবে।পাহাড়ের কোলে মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে নারকেল বাগান শক্তি সঙ্ঘের মণ্ডপ। দেখা যাবে গঙ্গার মর্তে আগমন। পাথরে খোদাই করা প্রতিমা। সেলাই মেশিন এবং ভ্যানরিকশা দান, দুঃস্থ ও ছাত্রছাত্রীদের অর্থ সাহায্য-সহ নানা কর্মসূচি রয়েছে। হোগলা পাতা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে গোপালপুর হাউস তরুণ সঙ্ঘের মণ্ডপ। এঁরা সাঁতার প্রশিক্ষণকেন্দ্র, দুঃস্থদের চিকিৎসা, শীতবস্ত্রদানের মতো নানা কর্মসূচি নিয়েছেন।
নারায়ণপুর ব্যবসায়ী সমিতির মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ময়ূরপঙ্খীর আদলে। খড়, বিচালি ও কলাই ঘাসের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে মহাভারতের নানা দৃশ্য। ১৫ ফুট উঁচু প্রতিমা। ছাত্রছাত্রী ও প্রতিবন্ধী সেবাকেন্দ্রে অর্থ সাহায্য করা হবে। সলুয়া নবারুণ সঙ্ঘের মণ্ডপ সাজানো হবে স্বর্গের আদলে। ভিতরে থাকবে শতাধিক দেবদেবীর মূর্তি। উদ্যোক্তাদের কম্বল, রিকশা ও ওষুধপত্র দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে।
প্লাস্টিকের ছোট-বড় বাটি ও জরির শিল্প দিয়ে তৈরি হচ্ছে নারায়ণপুর আজাদ হিন্দ পল্লির পুজোমণ্ডপ। মণ্ডপসজ্জায় চৈনিক স্থাপত্যের আভাস মিলবে। ভিতর ঝুড়ি, কুলো ও মাটির ঘট দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে। পাশাপাশি মডেলে সাগরমন্থনের দৃশ্য তুলে ধরা হবে। এঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দুঃস্থদের চিকিৎসা-সহ নানা কাজে অর্থ সাহায্যের পরিকল্পনা রয়েছে। |
|
জগদীশ স্পোর্টিং ক্লাবে মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে অসমের বাঁশ দিয়ে। মণ্ডপ কুলো, ঝুড়ি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হবে। বাঁশ ও গাছের বাকল দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। দুঃস্থদের চিকিৎসার্থে অর্থসাহায্যের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। থার্মোকলের উপর তোয়ালে দিয়ে সাজানো হচ্ছে তেঁতুলতলার পল্লিশ্রী সঙ্ঘের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। শ্যামাকালীর সঙ্গে থাকবে ষোড়শী আর বগলার মূর্তি। অনাথ শিশুদের জামাকাপড় ও কম্বল বিতরণ-সহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। থাকছে তুবড়ি প্রতিযোগিতা।পঞ্চকালী পুজো হবে রাজারহাটের দেশবন্ধু নগরের প্রতিবেশী সঙ্ঘে। মহাকালীর পাশাপাশি দেখা যাবে দক্ষিণাকালী, কৃষ্ণমাতা কালী, ভদ্রকালী ও সিদ্ধকালীর প্রতিমার।
মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে হাঁড়ি, কলসি, বাঁশ, বেত দিয়ে। দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণও করা হবে। নরেন্দ্রনগরের নেতাজি ক্লাবের থিম অসুরের দেশে মায়ের আগমন। এঁরা দুঃস্থদের স্বাস্থ্যবিমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্থ দান, রিকশা, ভ্যান-সহ নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। মতিনগর স্পোর্টিং ক্লাবে চোখে পড়বে সমুদ্রের আদলে নির্মিত মণ্ডপের উপরে মাতৃমন্দির। দেখানো হবে সুনামির পরে সমুদ্রের তলদেশ। উদ্যোক্তারা জানান, দুঃস্থদের চিকিৎসার জন্য অর্থদান ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে।ঘোষপাড়া মতিমিলন সঙ্ঘের থিম প্লাস্টিক বর্জন। বাঁশ, মাটির মডেল ও মাদুর দিয়ে সাজানো হবে মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ। পোড়ামাটির কাজ ও মাটির মডেলে পৌরাণিক দৃশ্যাবলিও তুলে ধরা হবে। উদ্যোক্তারা জানান, কম্বল, কাপড়, রিকশা বিতরণ ছাড়াও দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের অর্থসাহায্য করা হবে।
এ ছাড়াও রাজারহাট পুর-এলাকার স্বামী বিবেকানন্দ স্পোর্টিং-এর মণ্ডপ, নতুন পল্লির যুবকবৃন্দ স্পোর্টিংয়ের মাদুরকাঠির মণ্ডপ, রাধাকৃষ্ণ পল্লি সবুজ সঙ্ঘ, সাঙ্কেতিক ক্লাব, তরুণ সঙঘ, কেষ্টপুর শিবকালী স্পোর্টিং, কালী পার্কের ত্রিপুলিঙ্গ কালীমঠ মন্দিরের পুজোও উল্লেখযোগ্য।
পুর-এলাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রস্তুত গ্রামীণ এলাকাও। কাচের বয়াম, জার, ছোট-বড় ল্যাম্পের চিমনি, কাচের চুড়ি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে রাজারহাট হরেকৃষ্ণ স্মৃতি পল্লি কল্যাণ সংস্থার মণ্ডপ। উদ্যোক্তারা জানান, কাপড় ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
বিষ্ণুপুর রিক্রিয়েশন ক্লাবের থিম অ্যাকোয়ারিয়াম। মণ্ডপে থাকবে সমুদ্রের তলদেশের নানা দৃশ্য। গ্রামের মাটির বাড়ির আদলে তৈরি হচ্ছে রাজারহাটের ভাতেন্ডা সংহতি সমিতির মণ্ডপ। উদ্যোক্তারা জানান, শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
এ ছাড়া বিষ্ণুপুরের শিবতলা যুবকবৃন্দ ক্লাবের পোড়ো মন্দিরের আদলে মণ্ডপ, খামার শিবসঙ্ঘের মণ্ডপসজ্জায় বকাসুর বধ, পুতনা বধ ও কালীয়দমন দেখতেও অনেকে আসবেন বলে আশা উদ্যোক্তাদের।
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|