নানা থিমে জমজমাট
কালীপুজোর প্রস্তুতি জমে উঠেছে ব্যারাকপুরের মণিরামপুর। গঙ্গার ধারে প্রাচীন এই জনপদে সাড়ে তিন বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই প্রায় পঞ্চাশটি পুজো হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের থিমের পুজো। কালীপুজোর আগে থেকেই মেলা বসে যায় প্রতিটি মণ্ডপের সামনে, রাস্তার দু’ধারে। ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের। পুজোর পরেও অন্তত দু’দিন প্রতিমা ও মণ্ডপ দেখার ভিড় থাকে এখানে।
মণিরামপুরে ঢোকার মুখেই এলাকার অন্যতম পুরনো কালীপুজো হয় ব্যারাকপুর ইয়ং মেনস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে। কর্মকর্তারা জানান, ১৯৫৮-তে শুরু হওয়া এই পুজোয় এ বারের থিম মহীশূর প্যালেস। জায়গার অভাবে প্রাসাদের সামনের অংশটি তুলে ধরা হচ্ছে। একটু এগোলেই মিস্ত্রিঘাট বয়েজ ক্লাবের মণ্ডপ।
৩৯ বছরের পুজোয় থিম গুজরাতের জৈন মন্দির। মাদুর, চট, অ্যালুমিনিয়াম, তামা আর কাচ দিয়ে সাজানো হচ্ছে। বালিঘাটে নাথিং ক্লাবের পুজোর এ বার ৭৫ বছর। কাপড় ও প্লাই দিয়ে দক্ষিণের একটি গির্জার আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ।
মণিরামপুর ফ্রেন্ডস ইউনিয়নে থিম বৃদ্ধাশ্রম। বড় হয়ে ছেলে বাবা-মাকে বাড়িতে রাখতে চাইছে না। বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হচ্ছে তাঁদের। সেই ছেলেও যখন বৃদ্ধ হচ্ছে তারও এক অবস্থা হচ্ছে। এই কাহিনীই অভিনীত হবে এখানে। নদিয়া থেকে আসছেন কুশীলবেরা। দাসপাড়া অ্যাথলেটিক ক্লাবের ৯৯ বছরের পুজোয় মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। মণিরামপুর ইয়ং অ্যাসোসিয়েশনেরও মণ্ডপ কাল্পনিক মন্দিরের আদলে।
দু’পয়সার ফেরিঘাটের কাছে বটতলা স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোয় থিম দক্ষিণ ভারতের তিরুপতি মন্দির। ৫৩ বছরের এই পুজোয় মণ্ডপে খেজুর গাছের পাতা, ছাল ও পাট দিয়ে অলঙ্করণ হচ্ছে। সিদ্ধেশ্বরীতলা রোডে খেয়ালি’র পুজোর ৪৫ বছর। মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্প দিয়ে। নতুন বাজারে ইউনিভার্স ক্লাবের ৮৪ বছরের পুজোয় ৫৫ ফুটের মণ্ডপ সাজছে কাচের চুড়ি দিয়ে। কালী এখানে নৌকায়, ডাকিনী-যোগিনীরা মাঝি-মাল্লা।
সদর বাজারের নিউ সংঘশ্রী ক্লাবের পুজোয় অসমের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। হরিসভার থিম পুরনো মন্দির। থার্মোকলের মণ্ডপ ঘাস, শিকড়-বাকড়, বটের ঝুরি দিয়ে সাজানোর কাজ চলছে। এনবিএফসি ক্লাবের পুজোয় খড় আর হোগলা পাতার মণ্ডপ। মণিরামপুরের বেশির ভাগ মণ্ডপেই পূজিতা হন শ্যামাকালী। তবে রক্ষাকালীর পুজোও হয়।
ব্যারাকপুরের নোনা চন্দনপুকুর ও আনন্দপুরীতেও কয়েকটি কালীপুজো হয়। এ ছাড়াও খড়দহ, পানিহাটি, কামারহাটি এবং বরাহনগরে বেশ কিছু পুজো হয়।
বরাহনগরে দেশবন্ধু রোড সর্বজনীনের পুজো এ বার ৭৭তম বর্ষে পা দিল। সাবেক পুজোই হয় এখানে। পুজো ঘিরে এক সপ্তাহ মেলা বসে কালীতলা মাঠে। পুজোর দিনে মালসা ভোগ বিতরণ বিশেষ আকর্ষণ।
বরাহনগরে কালীপুজোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গোপাললাল ঠাকুর রোডের কাছে শতবর্ষপ্রাচীন নারায়ণী স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো। প্রতিমাই মুখ্য আকর্ষণ, দক্ষিণেশ্বরের অনুকরণে প্রতিমা। রয়েছে সিংহাসনও। এ ছাড়াও বড় পুকুর তরুণ দল, লেক পল্লি, পল্লি শান্তি সঙ্ঘ, মাঝেরবাগানের পুজো উল্লেখযোগ্য।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.