|
|
|
|
|
|
|
ভোগে বৈচিত্র
ঘণ্ট-ডালনা-পোলাও-পুঁটি। মন্দিরের
নানা ভোগের নানা গল্প
লিখছেন পাপিয়া মিত্র |
|
|
করুণাময়ী মন্দির, টালিগঞ্জ: বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের নন্দদুলাল রায়চৌধুরী তাঁর অকালপ্রয়াত কন্যা ‘করুণা’র স্মৃতিতে ১৭৬০-এ টালিগঞ্জ পশ্চিম পুঁটিয়ারি অঞ্চলে দ্বাদশ শিবমন্দির-সহ নবরত্ন কালীমন্দির স্থাপন করেন। বিগ্রহের নাম হয় করুণাময়ী কালী। পুজোর দিন সকালে কুমারী পুজো হয়। রাতে ভোগ দেওয়া হয় লুচি, ছোলার ডাল, ফুলকপির তরকারি, লাল নটেশাক-সহ সাত রকম ভাজা। থাকে খিচুড়ি, পাঁচ সব্জির তরকারি, সাদা ভাত, মোচার ঘণ্ট, এঁচোড়ের ডালনা, পোলাও, সাত রকম মাছের পদ, আলুবখরার চাটনি, পায়েস ও পান। যদুবাবুর বাজার থেকে আসে গলদা, ইলিশ, ভেটকি, ট্যাংরা, কাতলা,
পাবদা ও পার্শে। |
|
|
|
ফিরিঙ্গি কালী, বৌবাজার: ভোগে থাকে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচ রকম ভাজা, আলুরদম বা
ফুলকপির তরকারি, আমসত্ত্ব-খেজুর বা আলুবখরার সঙ্গে আমসত্ত্ব-কিসমিসের চাটনি। চালকুমড়ো,
শশা ও আখ বলি হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর কবিয়াল অ্যান্টনি এই মন্দিরে আসতেন বলে সম্ভবত মন্দিরটি
লোকমুখে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। পঞ্চমুণ্ডির আসনে প্রতিষ্ঠিত এই সিদ্ধেশ্বরী কালী। |
|
|
সিদ্ধেশ্বরী কালী, বাগবাজার: জনশ্রুতি, বহু বছর আগে কালীবর তপস্বী নামে এক সন্ন্যাসী কুমোরটুলি অঞ্চলে হোগলাপাতার ছাউনির নীচে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি তৈরি করে পুজো শুরু করেন। পরে সম্ভবত কুমোরটুলির মিত্র পরিবার মন্দিরটি নির্মাণ করে দেন। শোভাবাজারের রাজা নবকৃষ্ণ দেবের আদেশানুযায়ী আজও শোভাবাজার বাজারের সব্জি অন্নভোগের জন্য আসে। খিচুড়ি, সাদা-ভাত ভোগের মধ্যে থাকে ভাত, ডাল, পাঁচ-ভাজা, ডালনা, ছ্যাঁচড়া, মাছের ঝোল, চাটনি, পায়েস ও নানা মিষ্টান্ন। সিদ্ধেশ্বরী-তন্ত্রমতে পুজো হয়। ১৬০৪-এ শেষ নরবলি হয় এই মন্দিরে। এখন বলি হয় ছাগ, চালকুমড়ো ও আখ। পুরোহিত আদা, চানাচুর ও কারণ খেয়ে পুজোয় বসেন। |
|
|
|
|
ভবতারিণী কালী, দক্ষিণেশ্বর: ১৮৫৫-র ৩১ মে স্নানযাত্রার দিন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি। প্রথম পুজো ও অন্নভোগ দেন শ্রীরামকৃষ্ণের অগ্রজ রামকুমার চট্টোপাধ্যায়। হোমের পরে ভোগ দেওয়া হয়। খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা (আলু, বেগুন, কাঁচকলা, উচ্ছে, পটল বা ফুলকপি), পোলাও, দু’রকমের তরকারি (আলু-পটল, ফুলকপি বা এঁচোড়ের ডালনা), পাঁচ রকম মাছের পদ (কই, রুই, পার্শে, ভেটকি ও গলদা), আমসত্ত্ব-খেজুর বা টম্যাটোর চাটনি, পায়েস, দই, নানা ধরনের মিষ্টি, পান ও সুপারি। |
|
|
|
পুঁটে কালী, কালীকৃষ্ণ টেগোর স্ট্রিট: দু’রকম ভোগ দেওয়া হয়। নিরামিষ ভোগে থাকে
খাস্তাকচুরি, চানাচুর, খিচুড়ি, পোলাও, লুচি, দু’রকম তরকারি, চাটনি ও পায়েস। আমিষ
ভোগে এর সঙ্গে থাকে পাঁচ রকম মাছ (পুঁটি, রুই, ইলিশ, বোয়াল ও ভেটকি)।
কালীপুজোর পরের দিন সন্ধেবেলায় অন্নকূট ও
কুমারী পুজো হয়। |
|
|
সিদ্ধেশ্বরী কালী, ঠনঠনিয়া: জনশ্রুতি, উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক সন্ন্যাসী আনুমানিক ১৭০৩-এ এখানকার জঙ্গলে পঞ্চমুণ্ডের আসন ও ঘটে পুজো শুরু করেন। পরে শঙ্কর ঘোষের হাতে পুজোর দায়িত্ব দেন। তিনি মাটি দিয়ে তৈরি সিদ্ধেশ্বরী রূপের কালীমূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। নিজের মা পুষ্পেশ্বরীর নামে ‘পুষ্পেশ্বর’ শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন। আজও পুজোর সংকল্প হয় উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারীর নামে। ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’ সূত্রে জানা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণ কয়েকবার এই মন্দিরে এসেছেন। কালীপুজোর রাতে ভোগ দেওয়া হয় লুচি, পটলভাজা, ধোঁকা বা আলুভাজা, আলুর দম ও মিষ্টি। পশুবলি হয়। |
|
|
|
|
|
|
|