দুর্গাপুজোর মতই কালীপুজো এবং ছটপুজোয় শহরের ঘাটগুলির পরিচ্ছন্নতা এবং দূষণরোধে বিশেষ নজর দিতে চলছে শিলিগুড়ি পুরসভা। শুধু কালীপুজোর বিসর্জন বা ছটপুজোর পর দ্রুত ঘাটগুলি পরিষ্কার করে দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার তরফে তা নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। কালীপুজোর বিসর্জন অধিকাংশই মহানন্দার লালমোহন মৌলিক ঘাটে হলেও এবার ছট পুজো হচ্ছে পুর এলাকার ১৩টি ওয়ার্ড লাগোয়া নদীর ঘাটগুলিতে। কালীপুজোর পরেই শালুগাড়া থেকে নৌকাঘাট অবধি বিস্তীর্ণ এলাকায় ছটপুজো হবে। পুরসভার পাশাপাশি শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কতৃর্র্পক্ষের (এসজেডিএ) তরফে ঘাট লাগোয়া এলাকায় রাস্তা, আলো এবং বসার জায়গা তৈরি করে দেওয়া হবে। গত সোমবারই এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য মাল্লাগুড়ির একটি সরকারি অতিথি নিবাসে বৈঠক করেছেন। রুদ্রনাথবাবু বলেন, “পুরসভার তরফে নদীঘাটের সংস্কার, দেখভাল, আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মহানন্দার দু’পারের বাসিন্দাদের দাবি মেনে আমরা ঘাট লাগোয়া এলাকার রাস্তাগুলির বালি বস্তা দিয়ে গর্ত বোঝাই, কিছু আলো এবং বসার ব্যবস্থা করব।” শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অসুস্থ থাকায় পুরসভার আসছেন না। তবে মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দুলাল দত্ত মেয়র গঙ্গোত্রীদেবী, বরো চেয়ারম্যান তথা মেয়র পারিষদ (পূর্ত) কৃষ্ণ পাল-সহ অন্যান্য মেয়র পারিষদদের সঙ্গে আলোচনা করে ঘাট সংস্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। পুরসভার ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, “পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি দূষণের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। কালীপুজো কমিটিগুলির কাজকর্ম খতিয়ে দেখে পুরষ্কার দেওয়া হবে। ছটপুজোয় বাসিন্দাদের শহর পরিষ্কার রাখার উপর জোর দিতে অনুরোধ করছি।” ইতিমধ্যে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ, পূর্ত বিভাগ মিলিয়ে ‘টিম’ তৈরি করে কাজ শুরু হয়েছে। পুরসভার সাফাই কর্মীদের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার, অফিসারদের কাজে নামানো হয়েছে। নদীর ধার ঠিকঠাক করা ছাড়াও বালির বস্তা ফেলে ঘাটগুলি চওড়া করা হচ্ছে। শহরের ১, ৪, ৫, ২৪, ৩২, ৩৫,৩৬, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬ এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে ছট পুজোর ঘাট তৈরি হয়। মহানন্দা ছাড়াও পঞ্চনই, ফুলেশ্বরী, জোড়াপানি নদীর ধারে অস্থায়ী ঘাট তৈরি করে ছটপুজো হয়। তার পরে পুজোর পর যে বিপুল পরিমাণ কলাগাছ ঘাটগুলিতে পড়ে থাকে তা সাফাই করতে কমপক্ষে দুই দিন সময় লাগে। পাশাপাশি, নদীতে মাটিফেলে বেদী তৈরি করায় চর গজিয়ে ওঠে। সেগুলিও ভেঙে নদীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে ঠিক হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা পুরসভার এরজন্য খরচ হবে। এসজেডিএ সূত্রের খবর, বাসিন্দাদের কাছে মহানন্দা সেতুই পুজোর বিসর্জন এবং ছটপুজো দেখার মূল আকর্ষনীয় এলাকা। সেই কারণে নদীর দুই ধারের ১, ২, ৩, ৪, ৪৬ এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড মিলিয়ে মোট ২১টি প্যান্ডেল করে বাসিন্দাদের বসার জায়গা তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, ওয়ার্ডগুলির অলিগলির কাচা রাস্তা এবং গর্ত বালির বস্তা দিয়ে মেরামত করা হবে। থাকবে আলোর ব্যবস্থা। সংস্থার চেয়ারম্যান রুদ্রবাবু বলেন, “আধিকারিকদের খরচের একটি হিসাব করতে বলেছি। বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য এই ব্যবস্থাগুলি করতেই হবে।” |