মনমোহন সিংহ সম্পর্কে নিজের মূল্যায়নে অনড় রইলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।
মনমোহনকে ‘দুর্বলতম’ প্রধানমন্ত্রী বলে জাতীয় রাজনীতিতে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু সে জন্য তিনি যে বিন্দুমাত্রও অনুতপ্ত নন, শুক্রবার কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে আডবাণী তা স্পষ্ট করে দিলেন। বিজেপি-র এই বর্ষীয়ান নেতা তথা দেশের প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মনমোহন সিংহ বলেছেন, আমি ওঁর সম্পর্কে খুব রূঢ় মন্তব্য করেছি। কিন্তু ওটা একটা রাজনৈতিক মন্তব্য। আমি তো কোনও খারাপ কথা ওঁর সম্পর্কে বলিনি!” এর পরে আডবাণীর ব্যাখ্যা, “সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলা অন্যায় হলে আমি অপরাধী! কিন্তু নেহরু থেকে এ পর্যন্ত যত জন প্রধানমন্ত্রীকে আমি দেখেছি, তাঁদের মধ্যে উনিই সবচেয়ে দুর্বল। আর এটা আমার কথাও নয়। সুপ্রিম কোর্টই বলেছে, প্রধানমন্ত্রী ঠিক সময়ে সক্রিয় হলে টু জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি ঘটতই না এবং সরকারের ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার লোকসান বেঁচে যেত।” দুর্নীতি-বিরোধী ‘জনচেতনা যাত্রা’র অংশ হিসাবে কলকাতায় এসেছিলেন আডবাণী। প্রসঙ্গত, তিনি মনমোহনকে ‘দুর্বলতম’ প্রধানমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করায় কংগ্রেস প্রত্যাশিত ভাবেই ‘কড়া’ প্রতিবাদ করেছিল। মনমোহনও বলেছিলেন, আডবাণীর ‘সংযত’ মন্তব্য করা উচিত। |
তার পরেও আডবাণী নিজের পুরনো মন্তব্যের ‘সাফাই’ দেওয়ায় কংগ্রেস তাঁকে ফের পাল্টা আক্রমণ করেছে। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ এ দিন কলকাতায় বলেন, “২০০৯-এ লোকসভা ভোটের আগে আডবাণী প্রধানমন্ত্রীকে দুর্বল বলেছিলেন এবং ভোটের ফল প্রকাশের পরে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। এখন তাঁর সেই কথারই পুনরাবৃত্তিকে আমরা গুরুত্বই দিচ্ছি না। আডবাণী দুর্নীতি-রোধে রথযাত্রা করছেন। অথচ, তাঁরই দলের বঙ্গারু লক্ষ্মণের ঘুষ-কাণ্ড সংবাদমধ্যম থেকে লোকে জানতে পেরেছিল। আসলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আডবাণীর যাত্রা তাঁর সঙ্গে বিজেপি-র নবীন প্রজন্মের সংঘাতের ফসল।” কংগ্রেস যতই বিজেপি-র দুর্নীতির উদাহরণ তুলে তাঁর ‘জনচেতনা যাত্রা’য় ‘কাঁটা’ দিতে চাক, আডবাণী কিন্তু দলের ‘পরিচ্ছন্ন’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে মরিয়া। যে কারণে এ দিন তিনি কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তাঁর কথায়, “আমি কর্নাটকে একটি কর্মসূচিতে গিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকে পাশে বসিয়ে বলেছিলাম, বিজেপি সর্বতো ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দলের নেতা-কর্মীদের ব্যবহার সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। কারও নাম করিনি। কিন্তু সকলেই বুঝেছিলেন, ইঙ্গিত কার দিকে।” |