বড়সড় ধাক্কা খেল মায়াবতী সরকারের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। আজ উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার তিন গ্রামের অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফেরত দেওয়ার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অন্যান্য গ্রামের যে সব কৃষকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের আরও বেশি ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেয় আদালত।
এই নির্দেশের পর আসদুল্লাপুর, ইউসুফপুর চক শাবেরি ও দেবলা গ্রামে আবাসন গড়ে তোলার কাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। একই সঙ্গে তিন গ্রামের কৃষকরা যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন, তা ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
তবে নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডা এলাকার আরও যে ৬০টি গ্রামে আবাসন গড়ে তোলার কাজ চলছে, সে সব গ্রামের কৃষকরা জমি ফেরত পাবেন না। তার পরিবর্তে তাঁদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো হবে। জমি ফেরত না পাওয়ায় অবশ্য কৃষকদের একাংশ সন্তুষ্ট নন। ইতারা গ্রামের সুরেন্দ্র যাদব নামে এক কৃষক বলেন, “বেশি ক্ষতিপূরণ পেলেও আমরা সন্তুষ্ট নই। দু’-তিন মাস আগে একই ধরনের কথা বলা হয়েছিল। এতে নতুন কিছু নেই। কাজ বন্ধ না হলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।”
৪৯১টি আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি অশোক ভূষণ, এস ইউ খান এবং ভি কে শুক্ল-র বেঞ্চ আজ ওই তিনটি গ্রামে রাজ্যের জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেয়। আদালত জানায়, আবেদনকারীরা জমি ফেরত পাবেন। পরিবর্তে তাঁরা যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন, তা রাজ্যকে ফেরত দিতে হবে। অন্যান্য গ্রামের কৃষকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও স্পষ্ট করেছে আদালত। ওই কৃষকদের আগের তুলনায় ৬৪.৭% পর্যন্ত অধিক ক্ষতিপূরণ রাজ্যকে দিতে হতে পারে। দিতে হবে ‘উন্নত’ জমির ১০%। কবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তা যত শীঘ্র সম্ভব আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। যে সব আবেদনকারী এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি, তাঁরা আগের ক্ষতিপূরণের সঙ্গে এই বাড়তি ক্ষতিপূরণও পাবেন। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে, ‘মাস্টার প্ল্যান ২০২১’-র যে কোনও পরিকল্পনায় ন্যাশনাল ক্যাপিটল রিজিয়ন প্ল্যানিং বোর্ড (এনসিআরপি)-এর অনুমোদন জরুরি। এনসিআরপি-র অনুমোদন না পেলে আর কোনও নির্মাণ কাজ চালানো যাবে না। তবে যে সব জায়গায় এনসিআরপি-র আগের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ চলছে, সেখানে কাজ চলবে।
গ্রেটার নয়ডা ও নয়ডা এক্সটেনশন এলাকায় ‘উন্নতি’-র জন্য ‘পরিকল্পনামাফিক শিল্পোন্নয়ন’-এর নামে জরুরি ধারা দেখিয়ে যে ভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেয় তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এনসিআরপি বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া গ্রেটার নয়ডা কর্তৃপক্ষ ‘মাস্টার প্ল্যান ২০২১’-র ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ করেছে, ‘জমির ব্যবহারে পরিবর্তন’ কী ভাবে করা হয়েছে, নির্মাণকারী সংস্থাদের জমি দেওয়া এবং জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ম না মেনে প্রস্তাব দেওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে তদন্ত করা হবে। |