অবশেষে ধর্মঘট মিটল মারুতি-সুজুকির মানেসর কারখানায়। শুক্রবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় হরিয়ানা সরকার, মারুতি কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের। যেখানে সমাধানসূত্র হিসেবে ৩০ জন বাদে কারখানার সমস্ত স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মীকেই কাজে ফেরাতে রাজি হয় মারুতি-সুজুকি। তার পরেই গত ২১ দিন ধরে চলতে থাকা এই ধর্মঘট তোলার কথা জানান কর্মীরা। এই খবরে শুক্রবার মারুতি-সুজুকির দর ১.৫৩% বেড়ে শেয়ারে ১,০৯২.৩০ টাকা দাঁড়ায়।
মানেসর কারখানায় অচলাবস্থা কাটাতে গত ক’দিন ধরেই হরিয়ানা সরকারের মধ্যস্থতায় কথা চলছে সংস্থা কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের। এ দিন রফাসূত্র মেলায় শনিবার থেকেই পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে। মারুতিতে ধর্মঘট মেটায় মানেসর-গুড়গাঁও গাড়ি শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানাগুলিতেও ধর্মঘট তোলার কথা জানিয়েছেন সেখানকার কর্মীরা। ফলে সুজুকি মোটর সাইকেল এবং সুজুকি পাওয়ার ট্রেন-সহ ওই কারখানাগুলিতেও উৎপাদন শুরু হবে শনিবার। |
শুক্রবার ধর্মঘট ওঠার পর। মানেসরে। ছবি: পিটিআই |
গত ৭ অক্টোবর থেকে ১,২০০ অস্থায়ী কর্মী-সহ ৪৪ জন ছাঁটাই হওয়া স্থায়ী কর্মীকে বিনা শর্তে কাজে ফেরানোর দাবিতে ধর্মঘট চালাচ্ছিলেন মারুতি কর্মীরা। কিন্তু ফেরানো দূর অস্ৎ, তার পরে ধর্মঘট করে কাজে অসহযোগিতার কারণ দর্শিয়ে আরও ৫০ জনকে ছাঁটাই করে সংস্থা। শুক্রবারের চুক্তি অনুযায়ী এই ৯৪ জনের মধ্যে ৬৪ জনকেই কাজে ফেরাবে জানিয়েছে মারুতি-সুজুকি। তবে তাদের দাবি, বাকি ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তাই তাঁদের এখনই ফেরানো হবে না। ১০ দিনের মধ্যে ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পূর্ণ হবে। বৈঠকের পর রাজ্যের শ্রম কমিশনার সৎবন্তী আলাওয়াৎ জানান, সব অস্থায়ী কর্মীকেই ৭-১০ দিনের মধ্যে কাজে ফেরানো হবে।
চুক্তি মেনে ভবিষ্যতে শ্রমিক সমস্যা মেটাতে সংশ্লিষ্ট পক্ষের অভিযোগ শোনার জন্য একটি কমিটি তৈরি করা হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন মারুতি-সুজুকি। যেখানে সংস্থা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক ছাড়াও থাকবেন হরিয়ানার শ্রম দফতরের এক জন প্রতিনিধি। যিনি পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। একই সঙ্গে, সংস্থা ও শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক রক্ষার্থে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে শ্রমিক কল্যাণ কমিটিও গড়া হবে। পাশাপাশি গুড়গাঁও-মানেসর অঞ্চলে কর্মীদের জন্য সংস্থার নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থা ফের চালু করার কথাও এ দিন জানিয়েছে মারুতি। তবে, ধর্মঘটের দিনগুলির জন্য শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে না বলে এ দিন ফের স্পষ্ট করেছে সংস্থা।
এ দিকে, সুজুকি পাওয়ার ট্রেন ও সুজুকি মোটর সাইকেলের প্রায় ৩,০০০ কর্মীও রাজ্য সরকারের উপস্থিতিতে সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করেন। সুজুকি মোটর সাইকেলে সাসপেন্ড হওয়া ১৫ কর্মীকেই কাজে ফেরাবে সংস্থা। পাওয়ার ট্রেনের ১৮ জনের মধ্যে ১৫ জনকে ফেরানো হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ওই দুই কারখানার শ্রমিকরাও মারুতির কর্মীদের সমর্থনে ৭ অক্টোবর থেকে ধর্মঘট চালাচ্ছিলেন। |