বৃষ্টি নেই। বহু বছর ধরে সংস্কারের অভাবে ডিভিসি-র ক্যানালটিও মজে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধান বাঁচাতে সমস্যায় পড়েছেন মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রাম এলাকার চাষিরা। ক্যানেল সংস্কারের দাবিতে সম্প্রতি সেচ দফতরের এক কর্মীকে তাঁর কার্যালয়ে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা।
মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যখেড়ুর, মিহি, ভেলিয়া, বসতপুর, মাঝেরগ্রাম-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা ধান চাষের উপরেই নির্ভরশীল। চাষের জল মিলত ডিভিসি-র ক্যানাল থেকেই। চাষিদের দাবি, বহু বছর ধরে সংস্কার হয় না ক্যানালটি। গভীরতা কমে যাওয়ায় ক্যানালটি আকারেও ছোট হয়ে গিয়েছে। ফলে জলধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে অনেকটাই। প্রয়োজন মতো জল না মেলায় ধান বাঁচানো নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জলের অভাবে অনেক জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। চাষি মিতুল রায়ের দাবি, “এলাকায় কয়েকটি বেসরকারি সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। এই জল কিনতে চাষিদের বিঘা পিছু ৬০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। অনেকে টাকার অভাবে জল কিনতে পারছেন না। ফলে জমিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে।” এলাকার সার ব্যবসায়ী নুর আলম শাহ বলেন, “একে তো চাষিদের রাসায়নিক সার কিনতে হয়। তার উপর জলও কিনতে হলে লোকসান তো হবেই।” |
ক্যনালের সংস্কার ও জলের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবিতে গত বুধবার দুপুরে মাঝেরগ্রামে ডিভিসি-র এক কর্মীকে তাঁর কার্যালয়ে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান প্রায় ১৫০ জন চাষি। ওই কর্মীকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যান মন্তেশ্বর থানার পুলিশ ও সেচ দফতরের কয়েক জন আধিকারিক। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে উঠে আসে সমস্যাগুলি। মেমারি ২ ব্লকের বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েত এলাকায় ক্যানালের মুখ ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। ফলে মাঝেরগ্রামে যৎসামান্য জল পৌঁছায়। বৈঠকে ঠিক হয়, দ্রুত ওই এলাকায় ক্যনাল সংস্কারের কাজ শুরু হবে। সেচ দফতরের আধিকারিকেরা জানান, ধান বাঁচাতে ক্যানালে আরও বেশি পরিমাণ জল ছাড়ার চেষ্টা করা হবে।
মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা দেবব্রত রায় বলেন, “সেচ দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। মেমারির যে এলাকায় ক্যানালের মুখ বুজে গিয়েছে, সেখানে ৬০ জন সংস্কারের কাজ করবেন। আশা করা যায়, শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।” মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রাজকুমার রায় বলেন, “মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে ক্যানাল সংস্কার করেছে। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। অল্প পরিমাণে জল ছাড়ার জন্যই জল মিলছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”
কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “মাঝেরগ্রামের চাষিদের এমন সমস্যার কথা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।” |