স্বামীর মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে আট বছর। গত তিন বছরে হাইকোর্টের তরফে দু’বার নির্দেশও জারি হয়েছে। তবু ইসিএলের তরফে তিন বছরের বকেয়া ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ ইসিএলের মৃত কর্মীর স্ত্রী সন্ধ্যা ঘোষের।
অন্ডালের কেন্দা এরিয়ার বহুলা কোলিয়ারির কর্মী ছিলেন নিমাইচন্দ্র ঘোষ। ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই বছরই ফেব্রুয়ারিতে তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা ঘোষ চাকরি অথবা আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আবেদন করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে। সন্ধ্যাদেবী জানান, এই আবেদনে কোনও ফল না হওয়ায় ২০০৬ সালে তিনি ফের আবেদন করেন সংস্থার সিএমডি-র কাছে। তার পরে সে বছরের ডিসেম্বর থেকে মাসিক ছ’হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু হয়। তবে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যে ভাতা বকেয়া রয়েছে তা তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে জানান সন্ধ্যাদেবী। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ওই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু মাস ছয়েক পরে সংস্থার তরফে চিঠি দিয়ে বকেয়া টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।
এর পরেই ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে সন্ধ্যাদেবী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কয়েক দিনের মধ্যে বিচারপতি এস পি তালুকদার ইসিএলকে নির্দেশ জারি করে আবেদনকারীর বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সন্ধ্যাদেবীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, তাতেও সংস্থা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে, এরিয়ার জিএম ২০০৮ সালের জুনে সন্ধ্যাদেবীকে চিঠি দিয়ে জানান, আইনত তাঁর কোনও বকেয়া পাওনা নেই। তার মাস দুয়েক পরে পার্থবাবু আইনি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বকেয়া মেটানোর জন্য আবেদন জানান। কিন্তু তাতেও কোনও সাড়া না মেলায় ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশ অবমাননার অভিযোগে সন্ধ্যাদেবী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বলে জানান তাঁর আইনজীবী।
পার্থবাবু জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর আদালত ইসিএলকে অবিলম্বে বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ জারি করেছেন। তিনি বলেন, “আদালতের নির্দেশ কেন মানা হয়নি, সে ব্যাপারে ইসিএলকে আগেই হলফনামা জমা দিতে বলেছিল আদালত। সেই হলফনামায় যে আদালত খুশি নয়, তা-ও জানিয়েছেন বিচারপতি।” ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় এ প্রসঙ্গে জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে আদালতের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |