রাজ্য জুড়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে লোডশেডিং। আর, পরোক্ষে তার জন্য খানিকটা হলেও দায়ী অতিবর্ষণ। কারণ, অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য কোল ইন্ডিয়া অধিগৃহীত সব ক’টি কয়লা উত্তোলন সংস্থায় এ বছর কমে গিয়েছে উৎপাদন। ফলে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কয়লার অনুসারী শিল্পগুলিতে কয়লা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করা
যায়নি। শুক্রবার ইসিএলের কয়লা খনিগুলি পরিদর্শন করতে এসে এই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় কয়লা প্রতিমন্ত্রী প্রতীক প্রকাশবাপু পাটিল। তবে চলতি বছরেই এই ক্ষতি পুষিয়ে দেবেন বলে মন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন প্রতিটি সংস্থার আধিকারিকেরা।
এ দিন সকালে মন্ত্রী ইসিএলের কয়লা খনিগুলি পরিদর্শনে যান। তিনি জানান, এই রাজ্যে বেশ কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কয়লা পাঠানো সম্ভব হয়নি। তার প্রধান কারণ, কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া। কেন এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা গেল না, তার উত্তরেই মন্ত্রী বলেন, “এই রাজ্যে খনিগুলিতে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার একমাত্র কারণ অতিবৃষ্টি। অধিকাংশ খনিতেই জল ঢুকে যাওয়ায় উৎপাদন মার খেয়েছে।”
|
আসানসোলে কয়লা প্রতিমন্ত্রী।
ছবি: শৈলেন সরকার |
মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই ইসিএলের সিএমডি রাকেশ সিংহ দাবি করেন, বর্ষার শেষেই ইসিএলের শ্রমিক কর্মীরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বর্ষার জন্য যে পরিমাণ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে তা পূরণ করে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কয়লা চুরি আটকাতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমি বিস্তারিত রিপোর্ট পড়ে বুঝেছি কয়লা চুরি আটকানোর জন্য পুলিশি তৎপরতা বেড়েছে। রাজ্য সরকার বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ায় কয়লা চুরি অনেকটাই আটকানো গিয়েছে।”
বিভিন্ন সময়ে অবৈধ কয়লার গাড়ি পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তার পরে চুরির সেই কয়লা থানাতেই বছরের পর বছর মজুত থাকে। কিন্তু ইসিএল কর্তৃপক্ষ সেই কয়লা ফেরত না নেওয়ায় দীর্ঘদিন পড়ে থেকে মূল্যবান এই সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। কেন এই কয়লা ইসিএল কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে নিচ্ছেন না?
উত্তরে মন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১৩ অক্টোবর ইসিএলের সিএমডি রাকেশ সিংহের নেতৃত্বে আধিকারিকদের একটি দল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, বিভিন্ন থানায় জমে থাকা কয়লা দ্রুত ফিরিয়ে নেবে ইসিএল। এর ফলে বিভিন্ন খনি থেকে চুরি যাওয়া উন্নত মানের কয়লা শিল্পে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
আসানসোল, রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলের ধসপ্রবণ এলাকাগুলির পুনর্বাসন প্রকল্প কত দূর কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে ইসিএলের সিএমডি রাকেশ সিংহ জানান, এই কাজটি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)-র তত্ত্বাবধানে চলছে। পুনর্বাসনের জন্য জমি কিনতে ১৫৯ কোটি টাকা এডিডিএ কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে ইসিএল। পুনর্বাসনের কাজ খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে উচ্চস্তরের কমিটি। কমিটির কাছে কাজে অগ্রগতির খতিয়ান নিয়মিত জমা করছে এডিডিএ। |