ভার নিচ্ছেন আজ
বিশ্বমান পাবে প্রেসিডেন্সি, আশাবাদী নতুন উপাচাযর‌্
প্রেসিডেন্সিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার ‘চ্যালেঞ্জ’কে বাস্তবায়িত করার ‘আশা’ নিয়েই আজ, মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন মালবিকা সরকার। এই কাজে তিনি মেন্টর গ্রুপের সহযোগিতা পাবেন বলেও আশাবাদী।
প্রেসিডেন্সির প্রথম উপাচার্য অমিতা চট্টোপাধ্যায়ের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৫ অক্টোবর। মালবিকাদেবীকে আপাতত এক বছরের জন্য অন্তর্বর্তী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির এই প্রাক্তন অধ্যাপিকা প্রেসিডেন্সি কলেজেরই স্নাতক। সোমবার ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় ফিরে তিনি বলেন, “নিজে যেখানে পড়েছি, সেখানেই উপাচার্য হিসেবে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি ভীষণ উত্তেজিত। তা ছাড়া প্রেসিডেন্সিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা চলছে, সেটা বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এর বাস্তবায়ন নিয়ে আমি আশাবাদী। না-হলে এই দায়িত্ব নিতাম না।”
মালবিকা সরকার
অমিতা চট্টোপাধ্যায
প্রেসিডেন্সির উপাচার্য হিসেবে মালবিকাদেবীর নাম ঘোষিত হয়েছে ১১ অক্টোবর। এ দিন তিনি বলেন, “নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সে ভাবে কারও সঙ্গে আলোচনা করিনি। তবে খবর পেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিস থেকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি। ডানডিল ও সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগও প্রেসিডেন্সির সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”প্রেসিডেন্সিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে মেন্টর গ্রুপ গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডিনার অধ্যাপক সুগত বসু যার চেয়ারম্যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে মেন্টর গ্রুপ একগুচ্ছ সুপারিশও করেছে।
তবে বেশ কিছু প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের মতভেদ প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। নতুন উপাচার্য অবশ্য আশাবাদী যে, মেন্টর গ্রুপের সঙ্গে মিলেই তিনি প্রেসিডেন্সির উৎকর্ষ ফেরাতে পারবেন। মালবিকাদেবীর কথায়, “ওঁরা যা বলছেন সেটাই করতে হবে, এমন কথা মেন্টর গ্রুপের সদস্যেরা কখনওই বলেননি। আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের বিষয়ে আমার কথা তাঁরা শুনবেন।”

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্সির মানের ক্রমশ অবনমন ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। এবং শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন, রাজনীতির অতিরিক্ত হস্তক্ষেপই এর অন্যতম কারণ। অভিযোগ, বাম আমলে দক্ষতার চেয়েও আলিমুদ্দিনের ‘ঘনিষ্ঠতা’ই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদপূরণের অন্যতম ‘যোগ্যতা’ হিসেবে গণ্য হত। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে নতুন সরকার একাধিক বার শিক্ষাকে রাজনীতি-মুক্ত করার কথা বলেছে। রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে প্রেসিডেন্সিকে কি দলতন্ত্রমুক্ত করা যাবে?
এ প্রসঙ্গে বর্তমান ও প্রাক্তন উপাচার্য একমত। মালবিকাদেবী বলছেন, “আমার মনে হয়, চেষ্টা করলে এটা অবশ্যই সম্ভব।” আর প্রাক্তন উপাচার্য অমিতাদেবীর বক্তব্য, “আমার এক বছরের মেয়াদে কখনওই রাজনীতির প্রভাব বুঝতে পারিনি। বামফ্রন্ট আমলেও নয়, নতুন সরকার আসার পরেও নয়।”
তবে প্রেসিডেন্সির গৌরব যে ক্ষুণ্ণ হয়েছে, নতুন উপাচার্য সে কথা মানেন। আর হৃতগৌরব ফিরিয়ে তাকে ফের স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করাকেই ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিচ্ছেন মালবিকাদেবী। কী ভাবে সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবেন?
নতুন উপাচার্য বলেন, “প্রাধান্য স্থির করে কাজ করতে হবে। কোনটা আগে করা দরকার, তা কাজে যোগ দিলে বুঝতে পারব। তবে পঠনপাঠনের জন্য প্রয়োজনীয় যা কিছু, যেমন গ্রন্থাগার, গবেষণাগার, পড়ানোর উপকরণ ইত্যাদিতে বিশেষ জোর দেওয়ার কথা ভেবেছি।” তাঁর মতে, “ভাল শিক্ষক এলে ভাল ছাত্র আসবেই। প্রেসিডেন্সিকে তো উৎকর্ষকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। তাই অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ুয়ারা এখানে কিছু বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।”

সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্সিকে আন্তর্জাতিক দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে বলেই আশা করছেন নতুন উপাচার্য।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.