অফিসারের ভুলে বিমানবন্দরে
দু’দিন আটকে ৯ বাংলাদেশি
বিমানসংস্থার এক অফিসারের ভুলে দু’দিন ধরে কলকাতায় আটকে পড়লেন ন’জন বাংলাদেশি যুবক। তাঁদের হেনস্থা অবশ্য এখানেই শেষ হয়নি। বৈধ টিকিট থাকা সত্ত্বেও ওই ন’জনকে শেষপর্যন্ত অতিরিক্ত প্রায় ৬০ হাজার টাকা গুনাগার দিতে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। তাঁদের জন্য দু’দিন ধরে খাবারের ব্যবস্থাও করতে হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়াকে। সংস্থার যে অফিসারের ভুলে ওই কাণ্ড ঘটেছে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিমানসংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই ন’জন যুবক বাংলাদেশের জিএমজি বিমানসংস্থার উড়ানে শনিবার বিকালে কলকাতায় আসেন। তাঁরা বাংলাদেশের মাদারিপুর জেলার বাসিন্দা। কলকাতা থেকে কাতার বিমানসংস্থার উড়ানে দোহা ঘুরে তাঁদের মাসকট যাওয়ার কথা ছিল। এঁরা সকলেই শ্রমিকের কাজ করতে সেখানে যাচ্ছিলেন। সকলেই গরিব পরিবারের। কয়েকজন নিজেদের জমি বিক্রি করে বিমানের টিকিট কেটেছেন বলে বিমানবন্দরের অফিসারদের জানিয়েছেন। কলকাতা বিমানবন্দর ছুঁয়ে গেলেও তাঁদের কলকাতা তথা ভারতে ঢোকার কোনও অনুমতিপত্র বা ভিসা ছিল না।
এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী, যে বিমানসংস্থার উড়ানে তাঁরা কলকাতায় এসেছিলেন, সেই সংস্থাই পরবর্তী বিমানসংস্থার হাতে তাঁদের তুলে দেবে। জিএমজি সংস্থার এক অফিসারের কথায়, “শনিবার রাত আটটার মধ্যে ওই ন’জন যাত্রীকে এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কারণ, কাতার বিমানসংস্থার হয়ে কলকাতায় যাবতীয় কাজ (গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং) এয়ার ইন্ডিয়া করে থাকে।” আশা করা হয়েছিল, রবিবার ভোর চারটে নাগাদ কাতারের বিমান কলকাতা ছাড়ার কিছুক্ষণ আগেই এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে ওই যুবকদের তুলে দেওয়া হবে কাতার সংস্থার অফিসারদের হাতে। তাঁরা ওই উড়ানে দোহা ঘুরে মাসকট উড়ে যাবেন।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যার পরে ওই যুবকদের কথা বেমালুম ভুলে যান এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার। ওই যুবকেরা অপেক্ষা করতে থাকেন আন্তর্জাতিক বিল্ডিং-এর দোতলায় ট্রানজিট লাউঞ্জে। ভারতের ভিসা না থাকায় ওই লাউঞ্জ থেকে বিমানবন্দরের অন্যত্র যাওয়ারও অনুমতি ছিল না তাঁদের। এয়ার ইন্ডিয়ার মুখপাত্র জানিয়েছেন, কাতারের উড়ান ছাড়ার চল্লিশ মিনিট আগে ওই যুবকদের কথা মনে পড়ে সংশ্লিষ্ট অফিসারের। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ওই ন’জনকে কাতার বিমানসংস্থার কাছে নিয়ে যাওয়া হলে জানিয়ে দেওয়া হয়, এখন আর তাঁদের উড়ানে নেওয়া যাবে না। সংস্থার এক অফিসার জানিয়েছেন, তখন বোর্ডিং কার্ড দিয়ে, অভিবাসন, শুল্ক দফতর, নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তাঁদের তুলতে গেলে ওই উড়ান ছাড়তে দেরি হয়ে যেত। অন্য যাত্রীদের মধ্যে অনেকেরই দোহায় নেমেই অন্য উড়ান ধরে গন্তব্যে যাওয়ার কথা থাকে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা দোহায় পৌঁছে পরবর্তী উড়ান পেতেন না। ফলে, বৈধ টিকিট থাকা সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে কাতার বিমানসংস্থার উড়ানে উঠতে পারেননি ওই বাংলাদেশি যুবকেরা।
সোমবার ভোরেও কাতারের উড়ান ধরতে পারেননি ওই যুবকেরা। কারণ, রবিবার ভোরের উড়ানের যে বৈধ টিকিট তাঁদের কাছে ছিল, তা সোমবারে ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেয় কাতার বিমানসংস্থা। এ বার দোহা যেতে গেলে ওই যুবকদের সব মিলিয়ে অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে বিমানসংস্থা জানায়। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ওই যুবকদের। সোমবার সারা দিন এ নিয়ে টালবাহানা চলে। শেষে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মঙ্গলবারের ভোরের উড়ানে দোহা যাওয়ার টিকিট কাটেন ওই যুবকেরা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.