|
|
|
|
সদলে শিলিগুড়ি ঘুরে বেড়ালেন মন্ত্রী-মেয়র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভূমিকম্পের পর শিলিগুড়ি শহরের পরিস্থিতি সরজমিনে ঘুরে দেখলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। মঙ্গলবার সকালে তাঁরা পুরসভা, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেটের বাস্তুকারদের ‘টিম’ নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা যান। ক্ষতিগ্রস্ত শিলিগুড়ি কলেজের গ্রন্থাগার বন্ধ রাখতে বলেন। একই কারণে শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলের হস্টেল থেকে ছাত্রীদের সরাতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বিধান রোডের একটি বহুতল কাত হয়ে পড়ার খবর পেয়ে সেখানেও যান। পুরসভার তরফে ওই ভবনের একাংশ থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলায় নির্মীয়মাণ বাড়িঘর কোথায় কী পরিস্থিতে রয়েছে তা খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত আপাতত আগামী ১৫ দিন নতুন বাড়ির নথিভুক্তকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এ দিন থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করা হল। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোনও বাড়ির রেজিস্ট্রেশন যাতে না হয় তা প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেয়রের তরফে চিঠি করে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। |
 |
মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
ইতিমধ্যেই বাস্তুকাররা জানিয়েছেন, পাহাড় ছাড়া শিলিগুড়ির সমতল এলাকায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে বাড়িগুলি বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাসিন্দারা নির্বিঘ্নে বাড়িতে থাকতে পারেন।” মন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী এবং পুর দফতরের সঙ্গে কথা বলছি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত করে ভূমিকম্প প্রবণ এই এলাকায় বাড়িঘর তৈরির ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশিকা জারি করা হবে। আইআইটি’র তরফে বিশেষজ্ঞ দলকে দিয়ে একটি সমীক্ষাও হবে। শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে মিলনপল্লি এলাকায় একটি মন্দিরের চূড়া এবং সংলগ্ন অংশ বিপজ্জনক দেখে মন্ত্রী তা দ্রুত ভেঙে সরানোর নির্দেশ দেন পুর কর্তৃপক্ষকে। শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলের ছাত্রী হস্টেলের মেরামতির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল কলেজগুলি সরকারের তরফে সংস্কার করা হবে। যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।” পুর এলাকায় অবৈধ নির্মাণ নিয়েও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ দিন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য আলাদা করে শিলিগুড়ির লাইসেন্স বিল্ডিং সার্ভেয়ারদের (এলবিএস) নিয়ে বৈঠক করেন। বিভিন্ন নির্মাণ কাজের কোথায় কী ক্ষতি হয়েছে সে ব্যাপারে তাঁদেরকেও ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছেন। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে অন্তত ৪০ হাজার বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পুরসভার তরফে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ দিন পরিদর্শনকারী দলটি প্রথমে শিলিগুড়ি কলেজের গ্রন্থাগার এবং অন্যান্য অংশ ঘুরে দেখেন। দলটি শিলিগুড়ি বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে মাস্টার্স প্রীতনাথ মেমোরিয়াল প্রাথমিক স্কুল, বরদাকান্ত স্কুল ঘুরে দেখে। অন্য দিকে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে কবি সুকান্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবনটির নিচ তলায় বিপজ্জনক ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরা। স্কুলটি বন্ধ রাখা হয়েছে। দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের তরফে এ দিন জানানো হয়, আজ, বুধবার সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বামফ্রন্টের ৭ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কার্শিয়াঙে যাবেন। শিলিগুড়ির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরেও একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। তাদের পক্ষে একটি ‘রিলিফ ফান্ড’ তৈরি করা হচ্ছে। সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা ঘুরলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পরেও বিশেষজ্ঞ বাস্তুকারদের এনে ক্ষতিগ্রস্থ ভবন পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। যে কোনও সময় বড় বিপদ হতে পারে।” মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য বলেছেন, এ সব নিয়ে সিপিএম নেতাদের ভাবতে হবে না। রাজ্য সরকারের তরফে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা১ই করা হচ্ছে।” |
|
|
 |
|
|