জিতাষ্টমীর দিন পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল বিষ্ণুপুরের রাজবাড়িতে। মঙ্গলবার ছিল জিতাষ্টমী। এ দিন পটে আঁকা দুর্গা ‘বড়ঠাকুরানি’ (মহাকালী) এলেন রাজবাড়িতে। জোড়বাংলা মন্দিরের পাশে বিল্বতরুমূলের বেদিতে দেবীকে স্থাপন করা হয়। আজ, বুধবার পুজো প্রাঙ্গণে গর্জাবে ৯টি কামান। রাজবাড়ির সামনে গোপালসায়র থেকে নবপত্রিকা ওঠার সময় তিনটি, মৃণ্ময়ী মন্দিরের সামনে পটের পুজোর সময়ে আরও তিনটি। সব শেষে ভোগ নিবেদনের সময়ে গর্জাবে তিনটি কামান। তার পরেই বড়ঠাকুরানির অধিষ্ঠান হবে দেবী মৃণ্ময়ীর বাঁ পাশে। ষষ্ঠী ও সপ্তমীতে আসবেন মেজ (মহাসরস্বতী) এবং ছোট ঠাকুরানি (মহালক্ষ্মী)। তাঁরাও পট দুর্গা। বসবেন রাজবাড়ির বাঁ পাশেই। |
এই পুজোর নানা বৈচিত্র রয়েছে। প্রতিমা গঙ্গামাটির। কখনও নিরঞ্জন হয় না। রঙ চটে গেলে নতুন করে রঙ করতে হয়। প্রতি বছর ২২ ইঞ্চি চওড়া এবং ৩৩ ইঞ্চি লম্বা তিনটি পট আঁকেন বিষ্ণুপুরের ফৌজদার পরিবারের পট শিল্পীরা। এই কাজের জন্য তাঁদের জমি দান করেছিলেন মল্লরাজারা। রাজবাড়ির অন্যতম সদস্য জ্যোতিপ্রসাদ সিংহঠাকুর বলেন, “মহারাজা জগৎমল্ল ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন। প্রচীন প্রথা মেনে জিতাষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত একটানা পুজো চলে।” ওই পরিবারের সদস্য পিন্টু সিংহঠাকুর ও তরুণ সিংহঠাকুর বলেন, “মহানবমীতে পুজো খচ্চরবাহিনীর। সে পুজো মাঝ রাতে গোপনে হয়। রাজ পরিবারের প্রতিনিধি ছাড়া শুধু পুরোহিত থাকেন। দশমীর দিন নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর রীতি রয়েছে।” দেবী মৃণ্ময়ীর চালচিত্রও আলাদা। ডান দিকে কার্তিকের নীচে সরস্বতী, বাঁ দিকে গণেশের নীচে লক্ষ্মী। উপরে রয়েছেন ভূত-প্রেত নিয়ে নন্দী, ভৃঙ্গী-সহ শিব। মাঝে অসুরের সঙ্গে যুদ্ধরত দুর্গা। যাই হোক ঐতিহ্যের টানে প্রথম দিন থেকে এখানে ভিড় করেন বাসিন্দারা। |