নতুন শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘দলতন্ত্রে’র অভিযোগের মধ্যেই অন্য ঘটনার সাক্ষী রইল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মেডিক্যালের নীতি-নির্ধারণ কমিটিতে স্থান হয়েছে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয় পালের। তবে এ নিয়ে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। কারণ এই কমিটিতে একজন আইনজীবী ছাড়া চিকিৎসা-বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত নন এমন সদস্য বড়জোর দু’জন থাকেন। কিন্তু মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে অন্তত তিন জন এমন সদস্যের ঠাঁই হয়েছে নীতি-নির্ধারক কমিটিতে।
রাজ্যে পরিবর্তনের পরেই প্রাক্তন বামমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীর স্ত্রী সুনন্দাদেবীকে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন করে ‘আমরা-ওরা’র উর্ধ্বে ওঠার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর অবশ্য বারবারই ‘দলতন্ত্রের দাপটে’ অভিযুক্ত হয়েছে তৃণমূল। মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ) ক্ষেত্রেও সম্প্রতি তাই হয়েছে। কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় সহ এক দলের যুব নেতা। অথচ, মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পান্ডা কিংবা খড়্গপুরের সিপিএম বিধায়ক নাজমুল হকের সেখানে জায়গা হয়নি। বামফ্রন্টের প্রতিনিধিদের কার্যত উপেক্ষা করে নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মু, দাসপুরের তৃণমূল বিধায়ক অজিত ভুঁইয়াকে। অথচ, এঁদের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে এমকেডিএ’র এলাকা পড়ে না।
নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকে অবশ্য যোগ দিলেন না বিজয়বাবু। কেন? সে নিয়ে খোদ সিপিএমের অন্দরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক বৈঠক হয়। বিকেলে শুরু হয় নীতি-নির্ধারণ কমিটির বৈঠক। মূলত, গবেষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত নানা পরামর্শ দিয়ে থাকে এই কমিটি। রাজ্যে পালাবদলের পর কমিটির চেয়ারম্যান বদল হলেও আগের কমিটির বাকি সকল সদস্যই নতুন কমিটিতে রয়েছেন। আগের কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন চিকিৎসক দিবাকর সামন্ত। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন চিকিৎসক গোলক মাঝি। ১০ জনের এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি, হাসপাতাল সুপার রামনারায়ণ মাইতি, শিশুবিভাগের প্রধান চিকিৎসক মৌসুমী ঘোষ, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ারর্সের ডিন জয়ন্ত দে, ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের সোমনাথ দাস, আইনজীবী ক্ষিতীশ পলমল, মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান শিক্ষক সুনিষ্ঠানন্দজি, জয়ন্ত সাহা ও বিজয় পাল। এঁদের মধ্যে এ দিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বিজয় পাল, জয়ন্ত সাহা ও জয়ন্ত দে। বিজয়বাবু অবশ্য গরহাজিরার কারণ জানাননি। |