দাসেরবাঁধের কঙ্কাল-কাণ্ডে সিআইডি চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট পেশ করতে চলেছে বলে সোমবার হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন সরকারের কৌঁসুলি। মঙ্গলবার সিআইডি-র পক্ষ থেকে এই মামলায় জেলবন্দি সিপিএম কর্মী মদন সাঁতরা ও বৈদ্যনাথ সাঁতরাকে রাজসাক্ষী করতে চেয়ে আবেদন জমা পড়ল মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে। বিচারক অবশ্য এ দিন কোনও নির্দেশ দেননি। সোমবারই আদালতে হাজিরার দিন রয়েছে মদন ও বৈদ্যনাথের। |
২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের হামলার পর কয়েক জন তৃণমূল কর্মী ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান বলে অভিযোগ। জুনের গোড়ায় মদন সাঁতরাই দাসেরবাঁধের কোথায় ওই ‘নিখোঁজ’দের দেহ পোঁতা হয়েছিল, তা দেখিয়ে দেন বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত, সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকেও গ্রেফতার করে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। মদনবাবু সিআইডি-র কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ধরা পড়েন বৈদ্যনাথও। তাঁদের পিয়াশালা ও দাসেরবাঁধে নিয়ে গিয়ে ন’বছর আগের ঘটনাক্রম বোঝার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা অফিসারেরা। কয়েক জন ‘প্রত্যক্ষদর্শী’র জবানবন্দিও নথিভুক্ত করেন তাঁরা। মদন-বৈদ্যনাথদের জেরা করেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে দাবি সিআইডি-র। পরে এই দু’জন বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দিও দেন। এ দিন তাঁদের রাজসাক্ষী করতে চেয়ে আদালতে সরাসরি আবেদন করল সিআইডি।
এ দিন দুপুরে সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার পূর্ণশিব মুখোপাধ্যায় মেদিনীপুর আদালতে আসেন। পরে সরকারি আইনজীবী তারাগতি ঘটক বিচারকের কাছে সিআইডি-র লিখিত আবেদনটি জমা দেন। তারাগতিবাবু আবার এ দিনই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক, মেদিনীপুরের সিজেএম-সহ প্রশাসনিক বিভিন্ন মহলে ব্যক্তিগত একটি অভিযোগও জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, এই মামলায় সরকার পক্ষের হয়ে মেদিনীপুর আদালতে সওয়াল করার কারণে সোমবার রাতে তাঁর মোবাইলে ফোন করে ও মেসেজ পাঠিয়ে কে বা কারা শাসিয়েছে। জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
গত ২৬ অগস্ট নারায়ণগড়ের মণিনাথপুরে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হওয়ার পরে সেগুলি ১১ বছর আগে, ২০০০ সালের ২ নভেম্বর থেকে ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল কর্মী প্রবোধ দাসের বলে দাবি উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতে হাড়গোড় শনাক্তকরণে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এ দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রবোধবাবুর স্ত্রী আরতি দাস, বৃদ্ধা মা স্বর্ণলতা দাস-সহ চার আত্মীয়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হল। এই ঘটনায় ৩৬ জন সিপিএম নেতাকর্মীর নামে গুমখুনের অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত করছে সিআইডি। তিন সিপিএম কর্মী গ্রেফতারও হন। |