আরামবাগে বিক্ষোভের মুখে সূর্যকান্ত
লীয় কর্মসূচিতে এসে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রকে।
মঙ্গলবার দুপুরে আরামবাগে এসেছিলেন সূর্যবাবু। জখম এক দলীয় সমর্থককে দেখে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল থেকে বেরোনোর মুখে জনা পঞ্চাশ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সূর্যবাবুকে ঘিরে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি তোলেন। কালো পতাকা দেখানো হয় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি তথা রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সূর্যবাবুকে। কিছু ‘গো-ব্যাক’ লেখা পোস্টারও সাঁটা হয়েছিল হাসপাতাল চত্বরে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে বিরোধী দলনেতাকে যাওয়ার পথ করে দেয়। সূর্যবাবু পরে এক সভায় বলেন, “রাজ্য প্রশাসন আমাদের হাতে নেই। আমি মন্ত্রী নই। তবু গো-ব্যাক বলছে। কী দলের হাতে শাসন ব্যবস্থা বুঝুন!”
ছবি: মোহন দাস।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আরামবাগ উপসংশোধনাগারে পৌঁছন সূর্যবাবু। সেখানে নানা অভিযোগে বিচারাধীন দলের কয়েক জন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন। বেলা ৩টে নাগাদ মূল কর্মসূচি, মহকুমাশাসকের অফিস-সংলগ্ন জুবিলি পার্ক মাঠে বামফ্রন্টের ডাকা গণ অবস্থানে যোগ দেন বিরোধী দলনেতা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘লাগামছাড়া সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে এবং ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’র দাবিতে বামফ্রন্টের এই কর্মসূচি। অবস্থান চলে বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরে তেরো দফা দাবিতে মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক বলেন, “সন্ত্রাস বন্ধে, শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে শীঘ্রই সর্বদল বৈঠক ডাকা হবে।”
এ দিনের কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের হাজিরার সংখ্যায় বাম নেতারা সন্তুষ্ট ছিলেন না। অনিল বসু, বিনয় দত্ত, বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, সমর সামন্ত, নৃপেন চট্টোপাধ্যায়, রূপচাঁদ পাল-সহ বেশির ভাগ বাম নেতাই ঘুরেফিরে সে কথা উল্লেখ করেছেন। এ-ও বলেছেন, ‘তৃণমূলের বাধায়’ বাম কর্মী-সমর্থকেরা সকলে আসতে পারেননি। সূর্যবাবু বলেন, “যাঁরা কালো পতাকা ও তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে গো-ব্যাক বলছেন, তাঁদের বলতে চাই, আমাদের মারছেন। কংগ্রেসও আপনাদের হাতে মার খাচ্ছে। নিজেরাও প্রচণ্ড মারপিট করছেন। বাঁচবেন কী করে! আপনারা তো এখন দলের কাছেও নিরাপদ নন।”
সূর্যবাবুর কথায়, “নির্বাচনের পর থেকে শুধুই বদলা চলছে। এ দিকে, সর্বত্রই আবার রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে পাচ্ছি। তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিষয়ে রাজ্যপাল, প্রধানমন্ত্রী সর্বত্রই জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকেও এ কথা লিখিত ভাবে একাধিক বার জানিয়েছি। আজ পর্যন্ত কোনও জবাব পাইনি।” ফেরার পথে খানাকুলে জোনাল অফিসেও যান সূর্যবাবু। এখানেই গত শুক্রবারসিপিএম নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি বলেন, “উনি শুধু সভা-সমিতিতে বলছেন, সন্ত্রাস নেই। কোথাও রক্তগঙ্গা বয়ে যায়নি। সন্ত্রাস দূরবীন নিয়ে দেখতে হবে।” এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে আরামবাগ মহকুমায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের একাধিক ‘উদাহরণ’ তুলে ধরেন সূর্যবাবু। বিরোধী নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মহকুমায় ঘরছাড়া বাম কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা ২০৪৯ জন। ২১৪টি দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ১৪ জন মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ধর্ষিতা হয়েছেন অনেকে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমাদের উপরে যত আক্রমণ হচ্ছে, আমাদের ততই তাকত বাড়ছে।”
এ দিকে, সূর্যবাবুকে কালো পতাকা দেখানো নিয়ে তৃণমূল নেতা তথা চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার বলেন, “আমাদের দলের এমন কোনও কর্মসূচি ছিল না। সিপিএম তাদের সমর্থকদের সাজিয়ে এই কাণ্ড করেছে।” যদিও এ দিনের বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূল ব্লক যুব সভাপতি এবং টাউন যুব সভাপতি সুদীপ্ত চক্রবর্তী এবং রাজেশ চৌধুরীর বক্তব্য, “সূর্যকান্তবাবু কঙ্কাল-কাণ্ডের নায়ক। আরামবাগকে অশান্ত করতে এসেছেন। ওঁর এখানে আসাকে কেন্দ্র করে এ দিনই আমাদের দলের দুই কর্মীকে মারধর করা হয়। তিনি হাসপাতালে নিজেদের দলের কর্মীদের দেখে গেলেন। আমাদের প্রহৃত কর্মীদের খোঁজও করলেন না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.