অসমেও বার্ড-ফ্লু, উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী
মানুষকে বোঝানোর পরে শুরু হল হাঁস-মুরগি নিধন
হাঁস-মুরগির মালিকদের কয়েকজনকেই নিধনকর্মী হিসেবে নিয়োগ করে বার্ড-ফ্লু আক্রান্ত এলাকায় মঙ্গলবার পাখি মারার কাজ শুরু করল প্রশাসন। ওই এলাকার পোষা পায়রাও নিধন করা হবে।
নদিয়ার তেহট্টের বেতাই ও পুঁটিমারিতে হাঁস-মুরগি নিধনের আগে স্থানীয় মানুষের কাছে পরিস্থিতি বুঝিয়েও বলেছে প্রশাসন। এলাকা ঘুরে দেখে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীও। তিনি বলেন, “যাঁদের বাড়ির পাখি মেরে ফেলা হবে, তাঁরা ভবিষ্যতে সরকারি ফার্ম থেকে বিনামূল্যে হাঁস-মুরগির ছানা পাবেন।” তাই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে প্রথম দিনে সহযোগিতাই পেয়েছে প্রশাসন।
সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, বার্ড ফ্লু-র খবর পাওয়া গিয়েছে অসম থেকেও। ধুবুড়ির আগমনীতে বামনডাঙা গ্রামে বার্ড ফ্লু ধরা পড়েছে। সোমবার থেকে ওই গ্রাম ও তার চারপাশের তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হাঁস-মুরগি নিধন শুরুও হয়ে গিয়েছে। উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ কেন্দ্রীয় প্রাণী সম্পদ বিকাশ ও উন্নয়ন মন্ত্রককে পশ্চিমবঙ্গ ও অসম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, বার্ড ফ্লু মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, রাজ্য থেকে তার দৈনিক রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
তেহট্টের বেতাইয়ে শুরু হল নিধন। মঙ্গলবার সকালে। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
এ দিন মহাকরণে রাজ্যের প্রাণী কল্যাণ বিকাশ দফতরের সচিব এ কে অগ্রবাল জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ওই দু’টি গ্রাম-সংলগ্ন তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হাঁস-মুরগি নিধনের জন্য পৃথক ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তার ভিত্তিতেই এই দিন নিধনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, কাজ শেষ করতে দিন পাঁচেক সময় লাগবে। তিনি বলেন, “১৪ সেপ্টেম্বরের আগের কয়েক দিনে ওই দু’টি এলাকায় প্রায় ৮৫০টি হাঁস-মুরগি মারা গিয়েছে। আর নিধন করতে হবে প্রায় ৫২ হাজার।” নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ওই দু’টি গ্রামের চারপাশে তিন কিলোমিটার এলাকার বাইরে হাঁস-মুরগি এবং ডিম খাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই। আক্রান্ত এলাকার হাঁস-মুরগি যাতে কোনও ভাবেই বাইরে চলে না যায়, সে জন্য কড়া সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন।
এ দিন সকালেই তেহট্টের মহকুমাশাসকের দফতরে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে দুই গ্রামে চলে যান মন্ত্রী। সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারপরে প্রত্যন্ত মাঠের মধ্যেও গিয়ে দেখে আসেন, নিধনের পরে হাঁস-মুরগি কোথায় পোঁতা হবে। নিধনকর্মীদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেন। দুপুর থেকেই তৈরি হয়ে ছিলেন নিধনকর্মীরা। তাঁদের একবার করে প্রশিক্ষণ দিয়ে দেওয়া হয়। তারপরে ওষুধও খাওয়ানো হয়। বিকেল নাগাদ বিশেষ পোশাক পরে কাজে নামার আগে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তারা তাঁদের আরও একবার করে কী করতে হবে, তা বুঝিয়ে দেন। তার আগে টানা প্রায় দশ-বারো ঘণ্টা মাইকে প্রচার করা হয়েছে। ওই দুই গ্রামেই সারা দিনই একটু ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। অনেক পরিবারের পুরুষেরা কাজে বাইরে যাননি। মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, “যাঁদের হাঁস মুরগি মারা হচ্ছে, তাঁদেরই নিধনকর্মী হিসেবে নিয়োগ করছি। কারণ, তা হলে নিধনকর্মী হিসেবে তাঁরা পারিশ্রমিক পাবেন। সেই সঙ্গে ওই হাঁস-মুরগি মারার জন্য ক্ষতিপূরণও পাবেন। প্রশাসনও সেক্ষেত্রে বাধা কম পাবে।” এই দিন বিকেলে একটি সর্বদলীয় সভা ডেকে মহকুমাশাসক বার্ড ফ্লু নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটিও তৈরি করেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.