|
|
|
|
যাত্রা সফল করতে আডবাণী আজ দ্বারস্থ আরএসএসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নরেন্দ্র মোদীর অনশন শেষ হতে না হতেই রথযাত্রা নিয়ে ফের সক্রিয় হয়ে উঠলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। আগামিকাল নাগপুরে গিয়ে আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন তিনি। রথযাত্রা নিয়ে আরএসএসের পূর্ণ সমর্থন হাসিল করাই তাঁর উদ্দেশ্য। এ ছাড়া, আডবাণীর ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়েও আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে। বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করবেন আডবাণী।
আডবাণী শিবিরের এক নেতা আজ বলেন, “আগামিকাল সকালে নাগপুরে নিয়ে আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান বিজেপির এই প্রবীণ নেতা। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত এখন নাগপুরে। তাঁর সঙ্গেও বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” আডবাণীর দূত হিসাবে আজ অনন্ত কুমার নাগপুরে গিয়ে আরএসএস নেতাদের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনা করেছেন। তারপরেই তাঁর নাগপুর সফর চূড়ান্ত হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর গডকড়ীও এখন তাঁর নাগপুরের বাসভবনে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান আডবাণী।
আডবাণী আরএসএস এবং দলের সকলের সঙ্গে আলোচনা না করেই এক তরফা ভাবে রথযাত্রা ঘোষণা করায় খুশি নন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। তবে আডবাণী যেহেতু দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই রথযাত্রা করতে চাইছেন, তাই প্রকাশ্যে সঙ্ঘ এই যাত্রাকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিজেপির- মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী বিতর্ক যে ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে ক্ষুব্ধ সঙ্ঘ নেতৃত্ব। গত সপ্তাহে আরএসএস নেতারা বৈঠকে স্থির করেন, আডবাণীর রথযাত্রা সমর্থন করা হলেও তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানানো হবে। সঙ্ঘের পক্ষ থেকে ভাইয়াজি জোশী আরএসএসের সেই মনোভাবের কথা আডবাণীকে জানিয়েও দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে আডবাণী এগিয়ে থাকতে চাইলেও সঙ্ঘ নেতৃত্বের কাছে অবশ্য দাবি করেন, সেই অভিপ্রায় তাঁর নেই। তাঁর রথযাত্রার সঙ্গে আগামী লোকসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। সংসদের গত অধিবেশনের শেষ দিনে রথযাত্রা ঘোষণার সময়েই তিনি প্রকাশ্যে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাতেও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় নিয়ে নিয়ে বিতর্ক থামেনি।
আরএসএস নেতৃত্ব চান, এ মাসের শেষে দিল্লিতে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকেই আডবাণী ঘোষণা করুন, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী নন। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, যাত্রার আগেই যদি আডবাণীকে ঘোষণা করতে হয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী নন, তা হলে যাত্রার প্রাসঙ্গিকতাও অনেক কমে যাবে। আরএসএসের পাল্টা যুক্তি, গত লোকসভা নির্বাচনেই আডবাণীকে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ভোটে ভরাডুবি হয়েছে দলের। পরের নির্বাচনে দলের দ্বিতীয় সারির নেতাদের সুযোগ দেওয়া উচিত। আডবাণী যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চান, তা হলে তা বিজেপির ‘মেন্টর’ হয়েই করুন। তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রিত্বের বিষয়টি যোগ করার অর্থ নেই। আরএসএসের এই মনোভাবের পর তাঁর রথযাত্রা পাছে সফল না হয়, সেই আশঙ্কা আছে আডবাণীর। বিজেপির প্রবীণ নেতা স্বাভাবিক ভাবেই তা ঠেকাতে চান।
প্রথমে গুজরাতের সর্দার পটেলের জন্মস্থল থেকে এই যাত্রা শুরুর ইচ্ছা ছিল আডবাণীর। কিন্তু সদ্য গুজরাতে তিন দিনের অনশনের মাধ্যমে মোদী নিজের নেতৃত্ব অনেকটাই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। তা ছাড়া রথযাত্রা ঘোষণার আগে মোদীর সঙ্গেও আলোচনা করেননি আডবাণী। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গুজরাতের বদলে নীতীশ কুমারের রাজ্য বিহার থেকেই যাত্রা শুরু করার কথা ভাবছেন আডবাণী। জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মদিনে তাঁর গ্রাম থেকেই এই যাত্রা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। নীতীশ যেহেতু মোদীর অনশন বয়কট করেছেন, সে কারণে গুজরাতের বদলে বিহার থেকে যাত্রা শুরু করে পাল্টা বার্তা দিতে চান আডবাণী। প্রকাশ্যে অবশ্য আডবাণী শিবির বলছে, জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মদিন ১১ অক্টোবর রথযাত্রা শুরু করতে চান আডবাণী। স্বাভাবিক ভাবে তাঁর জন্মস্থল থেকেই সেই যাত্রা শুরু করা বাঞ্ছনীয়। এর মধ্যে আর কোনও রাজনীতি নেই। |
|
|
 |
|
|