রাজ্যপালের চিঠি ঘিরে এ বার শুরু হোর্ডিং-রাজনীতি |
শহরের আকাশরেখাকে হোর্ডিং-মুক্ত করতে মেয়রকে লেখা রাজ্যপালের চিঠি নিয়ে শুরু হল রাজনীতির চাপান-উতোর। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিম মঙ্গলবার বলেন, “হোর্ডিং সরানোর দায়িত্ব যে পুরসভার, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের চিঠিতেই তা স্পষ্ট।”
কলকাতায় রাজনৈতিক হোর্ডিং নিয়ন্ত্রণে গত সপ্তাহেই মহাকরণে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেও দলের তরফে প্রতিনিধিত্ব করে সেলিম বলেছিলেন, হোর্ডিং সরানোর কাজ পুরসভাই করতে পারে। এ দিন তিনি বলেন, “মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন যা বলেছেন, তাতে সিপিএমের অবস্থানই মান্যতা পেল।”
সিপিএমের এই বক্তব্যকে স্বাভাবিক কারণেই নস্যাৎ করেছেন মেয়র। তাঁর পাল্টা যুক্তি, “শহরে হোর্ডিংয়ের জঞ্জাল থেকে হকারের জঞ্জাল সবই জমেছে সিপিএমের ৩৪ বছরের রাজত্বে। আজ পুরসভার দায়িত্ব ব্যাখ্যা করতে যাঁরা এত তৎপর, তাঁরা পুরসভায় ক্ষমতায় থাকাকালীন হোর্ডিং সরাতে উদ্যোগী হননি কেন?”
সোমবার মেয়রকে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, নানা ধরনের হোর্ডিংয়ে শহরের হেরিটেজ-নির্মাণ এবং সবুজ, দুই-ই ঢাকা পড়ছে। দেশের অন্যান্য শহরে এমন ঘটে না। কলকাতাতেও এই সমস্যা ‘বাঞ্ছনীয়’ নয়। এই প্রসঙ্গেই সিপিএম নেতা সেলিমের অভিমত: হোর্ডিং সরাতে যে মুখ্যমন্ত্রীর সর্বদল বৈঠক ডাকার দরকার পড়ে না, রাজ্যপালই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। কারণ ওই কাজ রাজ্য সরকারকে করতে হলে মেয়রকে রাজ্যপাল চিঠি দিতেন না।
জবাবে শোভনবাবু বলেন, “শহরকে হোর্ডিং, যানজটের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছেন। সর্বদলীয় বৈঠকেও সেটাই স্পষ্ট। রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতেও ওই সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই কার্যত অনুমোদন দিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে রাজনীতির সুড়সুড়ি দেওয়া সুরুচির পরিচয় নয়। পুরসভা তার করণীয়টুকু করবে। ইতিমধ্যেই ধর্মতলা, বিবাদী বাগকে হোর্ডিং-মুক্ত করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে শহরের প্রবেশপথও হোর্ডিং-মুক্ত হবে।” মেয়র আরও জানান, হোর্ডিং-দূষণ রুখতে রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতাদের উপরে প্রয়োজনে যথেষ্ট পরিমাণ কর চাপানোর পরামর্শও দিয়েছেন। |