মেট্রোর এসি রেকে ফের বিভ্রাট |
অফিসের পথে যাত্রীদের দুর্ভোগ |
কলকাতার মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও ভিড়ের সময়ে ট্রেনে ওঠা সহজ নয়। আর যদি অফিসের ব্যস্ত সময়ে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল, যাত্রীদের পক্ষে সে অভিজ্ঞতা কেমন হয়? যান্ত্রিক বিভ্রাটের ধারা অব্যাহত রেখে মঙ্গলবার আবারও বিগড়ে গেল এসি রেক। বাতিল হল আপ ও ডাউনের চারটি করে ট্রেন। তার জের চলল আরও তিন ঘণ্টা।
প্রায় নিয়মিত এ ভাবে মেট্রো-বিভ্রাটে বীতশ্রদ্ধ যাত্রীরা।
এ দিন সকাল সাড়ে ন’টায় দমদম স্টেশন থেকে ছেড়েছিল যে এসি রেকটি, সেটি আট মিনিট পরে শ্যামবাজার পৌঁছেই অচল হয়ে পড়ে। মেট্রোর তরফে বলা হয়, “ট্রেনটির ব্রেক-বাইন্ডিং হয়েছিল। গাড়ি চলতে চলতে চাকা গরম হয়ে গেলে ব্রেকের এমন সমস্যা হতেই পারে।” মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারেরা স্টেশনে গিয়েও ট্রেনটিকে নাড়াতে পারেননি। শেষে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পরে খালি ট্রেনটি নড়ে ওঠে। তবে যাত্রীদের আর ওই ট্রেনে ওঠাতে ভরসা পাননি মেট্রোকর্তারা। হাজার তিনেক যাত্রীকে প্ল্যাটফর্মে রেখেই ৯-৫১ নাগাদ এসি রেক সোজা চলে যায় কারশেডে।
ততক্ষণে পিছনের স্টেশনগুলিতে যাত্রী-বোঝাই আরও অন্তত দু’টি ট্রেন আটকে পড়ে। কিন্তু প্রায় ১৩ মিনিটের বিরতির পরে সেগুলিতে পরের স্টেশনের যাত্রীদের ওঠার সুযোগ ছিল না। পুরো মেট্রো রুট জুড়ে প্রতি স্টেশনেই যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ট্রেনের দরজা বন্ধ করতে দেরি হয়। আরও অনিয়মিত হয়ে পড়ে ট্রেন চলাচল।
যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝের স্টেশনগুলি থেকে ওঠা দূরের কথা, ওই সময়ে দমদম থেকেই ট্রেনে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে। ট্রেনের ভিতরে দমবন্ধ করা ভিড়ে বয়স্ক, মহিলা ও শিশুদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ। কেউ কেউ মাঝখানের স্টেশনে নেমে যেতে চাইলেও ভিড় ঠেলে দরজা পর্যন্ত এগোনোটাই সম্ভব হচ্ছিল না।
বেলা ১২টা নাগাদ মেট্রোর মুখপাত্র প্রত্যুষ ঘোষ যখন দাবি করছেন, ‘‘পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক’, তখনও রবীন্দ্র সদন স্টেশনে স্কুল-ফেরত অসংখ্য শিশুকে নিয়ে অসহায় অপেক্ষায় অভিভাবকেরা। প্রত্যুষবাবু আরও দাবি করেন, নিয়মিত ঘোষণাও করা হয়েছে যাত্রীদের ট্রেন চলাচলের খবর জানাতে। তবে কোনও যাত্রীই তা শুনতে পাননি বলে অভিযোগ।
বেলা ১১টা নাগাদ অফিসপাড়ামুখী এক নিত্যযাত্রী কালীঘাট স্টেশনে পৌঁছে দেখেন, অস্বাভাবিক ভিড়। ট্রেন সময়মতো চলছে না। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে মেট্রোর তরফে কোনও ঘোষণা ছিল না বলে জানান তিনি। আধ ঘণ্টায় অন্তত চারটি ট্রেনের বদলে এল মাত্র দু’টি। ওঠা অসম্ভব। ভেবেচিন্তে তিনি উল্টো দিকের ট্রেন ধরে গেলেন রবীন্দ্র সরোবরে। সেখানে কালীঘাটের চেয়েও বেশি ভিড়। শেষ পর্যন্ত ওই স্টেশন থেকেই দমদমগামী ট্রেনে উঠলেন তিনি। চাঁদনি চক স্টেশনে যখন এসে নামলেন, ঘড়িতে ১২-১০। রোজকার ১২-১৩ মিনিটের জায়গায় প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট!
প্রত্যুষবাবু অবশ্য তখনও দাবি করছেন, “কন্ট্রোল তো বলছে, এখন সব ঠিকঠাক।” |