ভূমিকম্পের জেরে বদলানো হতে পারে বহুতল নির্মাণের বিধি |
রবিবারের ভূমিকম্পের থেকে বড় কোনও কম্পনে মহানগরীর বহুতলের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবে কলকাতা পুরসভা। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো বাড়ি তৈরির নিয়মেরও অদলবদল ঘটানো হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞদের কাছে কী কী জানতে চাওয়া হবে তার রূপরেখা তৈরি করার জন্য আজ, বুধবার পুরভবনে কেএমডিএ এবং পুরসভার কর্তারা বৈঠকে বসছেন।
রবিবার নেপাল-সিকিম সীমান্তের প্রবল ভূমিকম্পের সামান্য আঁচ লেগেছিল কলকাতায়। রাজ্যের অন্য অংশের সঙ্গে কেঁপে উঠেছিল মহানগরীও। আতঙ্কে বহুতলগুলি থেকে নেমে আসেন মানুষ। রবিবারের বিকেলে ভিড়ে ঠাসা শপিং মল খালি হয়ে যায় নিমেষে। উল্টোডাঙার একটি পুলিশ আবাসনের দেওয়ালে ফাটল ধরা ছাড়া বড় ঘটনা কিছু ঘটেনি। শহরের ২০-২৫ তলার বহুতলেও কোনও ফাটল ধরেনি বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
কিন্তু রবিবারের ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের থেকে জোরালো কোনও ভূমিকম্পের আঁচ কি কলকাতার পুরনো বাড়ি কিংবা বহুতল সামলাতে পারবে? |
এ দিন মেয়র বলেন, “এ বারের ভূমিকম্পে কলকাতার কোনও বহুতল বা পুরনো বাড়ির ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আরও বড় ধরনের ভূমিকম্পের প্রভাব থেকে কলকাতার বাড়িগুলিকে কী ভাবে বাঁচানো যায়, তার জন্য আমরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেব।” মেয়র আরও বলেন, “বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ মানতে পুরসভা নিজেদের সাধ্যের মধ্যে সব কিছুই করবে। প্রয়োজন হলে পুরসভার বিল্ডিং রুল্স-এ নতুন সংযোজন করার কথাও ভাবা হচ্ছে।”
বহুতলের অবস্থা থেকেও পুরসভা বেশি চিন্তিত শহরের পুরনো বাড়িগুলি নিয়ে। কারণ, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হয় না। মেয়র বলেন, “বর্তমান পুর-আইনে ওই সব বাড়িকে ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করে নোটিস দেওয়া ছাড়া পুরসভার আর কিছু করার নেই। তাই এই ব্যাপারেও নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে। প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ন করার কথাও ভাবতে হবে।” মেয়র জানান, শহরের বাড়িগুলির গঠনগত নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন এবং পূর্ত দফতরের অফিসারেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিয়েছেন। আজ, বুধবার পুরভবনে ওই সব বিভাগের অফিসারদের মধ্যে কথা হবে।
পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বাড়ি তৈরির বর্তমান নিয়মাবলী যথেষ্ট কড়া। কিন্তু অনেকেই তা মেনে চলেন না। যাঁরা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করছেন, তাঁদের কড়া শাস্তি চান পুর-আধিকারিকেরা। বুধবারের বৈঠকে তাঁরা বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান আধিকারিকদের কেউ কেউ। |