দমেননি দুর্যোগেও, দার্জিলিংমুখী বহু বাঙালি
ভূমিকম্প এবং দুর্যোগ ঠেকাতে পারেনি ওঁদের। ১৫ জনের দলের এক জনও বাতিল করেননি মঙ্গলবারের দার্জিলিং সফর। হইহই করে সকলে পৌঁছে গেলেন শিয়ালদহ স্টেশনে।
দলটিতে রয়েছেন বছর সত্তরের রবীন পাল। সঙ্গে স্ত্রী কৃষ্ণা ও কন্যা দেবারতি। রবীনবাবু বলেন, “১৯৭৪ সালে এক সহকর্মীর সঙ্গে দার্জিলিং গিয়েছিলাম। কিন্তু সপরিবার এই প্রথম। তাই এই দুর্যোগও দমাতে পারেনি আমার উৎসাহকে।”
অভয় দিচ্ছেন ওই দলের নেতা অমর ঘোষালও। তাঁর কথায়, “ভয় কীসের? উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে এ নিয়ে ১২৫ বার যাচ্ছি। আমরা যে সব জায়গায় যাচ্ছি, সেখানে বড় কোনও বিপত্তি হয়নি।”
সত্যকাম বাগচী-চিত্রা বাগচী, নিত্যগোপাল চক্রবর্তী-নিভা চক্রবর্তীরাও এ দিন রওনা হলেন দার্জিলিংয়ের উদ্দেশ্যে। বছর খানেক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি থেকে অবসর নেওয়া সত্যকামবাবু বলেন, “কলেজ জীবনে আমি আর চিত্রা দার্জিলিং গিয়েছি। এতদিন পরে আবার যাচ্ছি। প্রচার মাধ্যমে যতটা দেখাচ্ছে, আমার মনে হয় পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয়।” তাঁদের দলটি ফিরবে সাত দিনের মাথায়। ভূমিকম্প ঘিরে তৈরি হওয়া আতঙ্ক দমাতে পারেনি তাঁদেরও। শেক্সপিয়র সরণির যে ভ্রমণসংস্থা ওঁদের নিয়ে যাচ্ছে, তার তরফে শম্ভু ঘোষ বলেন, “৩ অক্টোবর আমরা ১৭ জনের আরও একটি দলকে দার্জিলিং পাঠাব। ওঁদের এক জনও যাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেননি।”
বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের এক ভ্রমণসংস্থা পুজোর সময়ে চার জনের একটি পরিবারকে দার্জিলিং বেড়ানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সংস্থার তরফে দেবরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “ওই পরিবার সফর বাতিল করেনি। ৪ অক্টোবর ওঁরা রওনা হবেন। এই ক’দিনে পাহাড়ের পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেও আশা করছি।”
দার্জিলিং যেতে তেমন ভয় না পেলেও কারও কারও ভয় রয়েছে সিকিম নিয়ে। মধ্য কলকাতার একটি পর্যটন সংস্থার তরফে নন্দিনী সেন এ দিন বলেন, “পুজোর সময়ে কয়েকটি পরিবারকে সিকিমে ঘোরার ব্যবস্থা করে দিয়েছি আমরা। তার মধ্যে ছ’জনের একটি পরিবারের যাওয়ার কথা ছিল ১৫ অক্টোবর। এ দিন ফোনে ওঁরা সফর বাতিলের কথা জানিয়েছেন। উত্তর কলকাতার ওই পরিবারে বছরখানেকের একটি বাচ্চা আছে।”
অন্য দিকে, শেক্সপিয়র সরণির একটি ভ্রমণসংস্থা সিকিম সফরে দু’টি দল নিয়ে যাচ্ছে ২ এবং ১৪ অক্টোবর। দু’টি সফরেই রয়েছে ২২ জন করে পর্যটক। এই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এখনও কেউ ওই সফর বাতিল করেননি। তবে ২-৩ জন তাদের অফিসে ফোন করে জানতে চেয়েছেন, সে সময়ে বেড়াতে যাওয়া নিরাপদ কি না।
গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর ছুটি কাটানোর জন্য বাঙালির সবচেয়ে পছন্দের কিছু জায়গার মধ্যে সিকিম অন্যতম। নানা গোলমালের জন্য বেশ কিছু দিন ধরে দার্জিলিং হয়ে উঠেছিল ব্রাত্য। পাহাড়ে শান্তি ফেরায় এই বছর পুজোয় ফের নতুন করে উৎসাহ তৈরি হয়েছে দার্জিলিং ভ্রমণ নিয়ে। তাই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিকিম-দার্জিলিংয়ের পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু লোকের কপালে ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ। হোটেলের মালিক-শ্রমিক থেকে গাইড, টাঙাওয়ালা, গাড়ির ব্যাপারি অনেকেই এ বারের পুজোর মরসুমে ভাল উপার্জনের আশা করেছিলেন।
কিন্তু পরিস্থিতি কেমন হবে, এখন তা নিয়ে চিন্তায় ওঁরা সকলেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.