তেলের দাম বাকি
কলকাতায় আটকে রইলেন ৫৬০ বিমানযাত্রী
তেল ভরার বকেয়া টাকা না দেওয়ায় কলকাতা বিমানবন্দরে সোমবার রাত থেকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রইল ইরানের এক বেসরকারি বিমানসংস্থার দু’টি যাত্রিবাহী বিমান। বেশ কয়েক ঘণ্টার টালবাহানার পর অবশ্য মঙ্গলবার বেলা তিনটে নাগাদ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয় বিমানগুলি। কিন্তু তেল সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে বিমানসংস্থার এই গোলমালের জেরে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হল যাত্রীদের। অসুস্থও হয়ে পড়লেন কয়েক জন।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সোমবার রাতে ইরানের বিমানসংস্থা ‘মহান’-এর একটি এয়ারবাস ৩১০ এবং একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান কলকাতা বিমানবন্দরে নামে। এয়ারবাসে ছিলেন ১৭৬ জন যাত্রী। বোয়িংয়ে ছিলেন ৩০৫ জন। ব্যাঙ্কক থেকে ইরানের রাজধানী তেহরানে যাওয়ার মাঝে কলকাতায় এসে তেল ভরতে নেমেছিল বিমানগুলি। কিন্তু কলকাতায় নামার পরে তাদের তেল দেওয়া সম্ভব নয় বলে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। কারণ, তেলসংস্থা বকেয়া টাকা দেয়নি। পাশাপাশি, এ বারে তেল ভরার জন্য অগ্রিম টাকা দাবি করে তেলসংস্থা। এই গোলযোগে সব থেকে সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। বিমান দু’টিতে মোট বিমানকর্মী-সহ ৫৬০ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁরা সবাই বিদেশি হওয়ায় ভারতে ঢোকার জন্য ছাড়পত্র ছিল না বলে খবর।
বিমানবন্দরের এক অফিসার জানান, এয়ারবাসটি কলকাতায় নামে রাত সওয়া আটটায়। কিন্তু টাকা না পেলে তেল দেওয়া হবে না বলে ইন্ডিয়ান অয়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর পরই টানাপোড়েন শুরু হয় দু’তরফে। রাত সওয়া বারোটা নাগাদ ১৭৬ জন যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে বিমানবন্দরের দোতলায় লাউঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই ছিলেন। ফলে এ দিন কলকাতার অনেক আন্তর্জাতিক বিমানের যাত্রীই ওই লাউঞ্জে গিয়ে আর বসার জায়গা পাননি বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে।
সোমবার রাত সওয়া একটায় ৩০৫ জন যাত্রী নিয়ে নামে দ্বিতীয় বিমানটি। তেল সরবরাহ করা নিয়ে তাকেও একই কথা জানায় ইন্ডিয়ান অয়েল। যথেষ্ট জায়গা না থাকায় এই বিমানের যাত্রীদের আর লাউঞ্জে জায়গাও দিতে পারেননি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তেল সরবরাহ নিয়ে এই জটিলতার কথা ইরানের রাজধানী তেহরানে, বিমানসংস্থার কর্তাদের। খবর যায় দিল্লির ইরানি দূতাবাসেও।
লাউঞ্জে জায়গা না মেলায় রাত সওয়া একটা থেকে বিমানের ভিতরেই অপেক্ষা শুরু করেন যাত্রীরা। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার কষ্ট সহ্য না পেরে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার বেলা পৌনে এগারোটা নাগাদ বমি শুরু হয় ঘাবানি নার্গিস নামে ৫৬ বছরের ইরানি মহিলার। তাঁর চিকিৎসা করতে শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরের চিকিৎসক পি হাইত বিমানে উঠে পড়েন। একই রকম অসুস্থ হয়ে পড়েন মহানাজ সুজানি বলে এক তরুণীও। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বিমান ও লাউঞ্জ মিলিয়ে প্রায় ১৭ জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মাঝেই মঙ্গলবার প্রাতরাশ এবং দুপুরের খাবার পাঠানো হয় যাত্রীদের কাছে।
বিমানবন্দরের এক কর্তা জানান, ইদানীং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে দেশে ফেরার পথে তেল ভরার জন্য নিয়মিত কলকাতায় নামছিল এই বিমানসংস্থার উড়ান। ইন্ডিয়ান অয়েল-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এন শ্রীকুমার জানান, এত দিন দিল্লি থেকে তেল নিত সংস্থাটি এবং বিমান নামার আগেই জ্বালানির অগ্রিম টাকা দিয়ে দিত। আচমকাই সপ্তাহ দু’য়েক আগে থেকে কলকাতা থেকে তেল ভরতে শুরু করে। শ্রীকুমারের কথায়, “কলকাতা থেকে তেল নেওয়ার অগ্রিম টাকা দিচ্ছিল না। ধারে তেল দেওয়ার চুক্তি না থাকলেও বিশ্বাসের খাতিরে তেল দেওয়া হচ্ছিল।” কিন্তু সোমবার রাতেই ঠিক হয়, বকেয়া তেলের দাম এবং অগ্রিম টাকা না পেলে আর তেল দেওয়া হবে নয়। সোমবার রাতেই বিমানসংস্থার মালিককে এ কথা জানানো হয়। তার পরেই বিমানসংস্থার তরফে মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লির একটি ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানো হয়।
কত টাকা বাকি ছিল তা না জানালেও শ্রীকুমার বলেছেন, “আগামী কয়েকটি উড়ানের জন্য অগ্রিম টাকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.