|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
বইবাজার এবং জঙ্গল সাফাই |
বইপোকা |
মার্জারীকে সহসা বড় ‘মিস’ করিতেছি। সেই যে আপন সহজ পাঠ পড়িয়া গেল, আর এ মুখো হয় নাই। চারপায়ীর উপর বসিয়া ভাবিতেছিলাম... আহা, বলিয়াছিল বড় ভাল, ‘আজ শনিবার, আজ বইপাড়ার জঙ্গল সাফ করিবার দিন।’ হেনকালে যেন কর্ণকুহরে আঘাত করিল সেই পরিচিত ধ্বনি, ‘মিয়াঁও’। সত্যই মার্জারী! প্রসন্ন বদন, কিঞ্চিৎ গর্বও যেন লাগিয়া আছে হাসিটিতে। বলিল, ‘সে দিন ত নিজের মত করিয়া সহজ পাঠ পড়িতেছিলাম বলিয়া তিরস্কার করিলে, যাহা বলিতেছিলাম তাহা ত এই বার ঘটিতে চলিয়াছে।’ বলিলাম, খোলসা করিয়া বল। ফ্যাঁচ করিয়া হাসিয়া মার্জারী বলিল, ‘কেন! পরশু ত পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডই জঙ্গল সাফ করিতে নামিতেছে। যে ভূরি ভূরি গ্রন্থ প্রডাকশন করিয়াও বেচিতে পারা যায় নাই সেই সকলকে স্বল্প হইতে স্বল্পতর মূল্যে পাঠকের ঘরে খেদাইবার আয়োজন ত পরশুই শুরু। আফিম খাইয়া ঝিমাইলে কি আর খবর রাখা যায়!’ বুঝিলাম, বইবাজারের কথা বলিতেছে। নীরব রহিলাম। সত্যই ত, বইবাজারে ঘুরিয়া বারংবার মনে হইয়াছে এই প্রকারে যাহাদের বিক্রী করিতে হয় তাহারা কি এতই ফেলনা, নাকি প্রচারের সুসংহত পদ্ধতি নাই বলিয়াই এই হাল? চিন্তামগ্ন হইয়াছিলাম। চটকা ভাঙিয়া দেখি মার্জারী নাই। ভাবিয়াছিলাম, তাহাকে বুঝাইব, দুর্বল পকেটেরও যে জ্ঞানদুগ্ধে অধিকার আছে সেই কথাটির বইবাজারে প্রতিষ্ঠা হয়। বঙ্গীয় পাঠক যে ভালর কদর সমসময়ে করিতে পারেন না, বইবাজার তাহারও প্রমাণ। কিন্তু এ মার্জারী সুবিচারক এবং সুতার্কিকও বটে, সুতরাং না বুঝিবার পক্ষে ইহার অধিকার আছে। |
|
|
|
|
|