পুরুলিয়ায় ব্যাহত যান চলাচল
বেহাল নিকাশি, বৃষ্টিতে জলমগ্ন বাঁকুড়া
দিনের বৃষ্টিতে জল জমেছে বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায়। রাস্তা ছাপিয়ে বেশ কিছু এলাকায় ঘরবাড়ির মধ্যেও ঢুকেছে জল। ভেঙে পড়েছে কিছু মাটির বাড়িও। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য এই দুর্দশা বলে দাবি করে পুরসভায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। এর পরেই দ্রুত জল বের করার জন্য দমকল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন পুরপ্রধান শম্পা দরিপা। এলাকায় যাওয়ার সময়ে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কখনও ঝিরঝিরে, কখনও জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ওই দিন বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে ১৪৯.৩ মিলিমিটার। এসডিও শ্যামল মণ্ডল বলেন, “৮৯৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪টি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।”
ঘরে ঢুকেছে জল। বাঁকুড়ায় অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।
শুক্রবার নতুনচটি-সার্কস ময়দান এলাকায় গিয়ে দেখা গেল খানাখন্দে ভরা রাস্তায় হাঁটুর উপর দিয়ে জল বইছে। শুধু তাই নয়, এলাকার বেশ কিছু বাড়ির ভিতরে জল ঢুকেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণব পুইতান্ডিরাদের ক্ষোভ, “যখন বৃষ্টি হয় তখনই জল জমে যায়। রান্না ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় রান্নাবান্না বন্ধ। এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা বলে কিছুই নেই। আমারা জলের মধ্যে বাস করছি। অথচ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খোঁজ পর্যন্ত নেননি।” অবস্থা আরও খারাপ বাঁকুড়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেলগড়িয়ায়। প্রায় কোমর পর্যন্ত জল। ওই এলাকার অধিকাংশ বাড়ি মাটির। ফলে বাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কায় মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন। এলাকার বেলিয়াড়া প্রাথমিক স্কুলেও জল ঢুকে পড়েছে। ফলে দু’দিন ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসী রঞ্জিত বাউরি, অশোক সূত্রধররা বলেন, “প্রতি বর্ষায় এই ভাবে জল জমে যায়। এলাকার কাউন্সিলরের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। চাইলেও তাঁদের পাশে পাওয়া যায় না। স্কুলও জলমগ্ন। বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় উঠব বুঝতে পারছি না।” একই রকম অবস্থা বাঁকুড়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডেও। ওই ওয়ার্ডের কমরারমাঠে জল জমে যাওয়ায় বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। নরেশ গোস্বামী, বিজয় সাউরা বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য পুরসভার উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন।
এ তো গেল ওয়ার্ডের চিত্র। রাস্তার হাল আরও খারাপ। এমনিতে সংস্কারের অভাবে রাস্তা বেহাল। তার উপরে বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগের শেষ নেই। বাঁকুড়ার সেকেন্ড ফিদারোড, লালবাজার মুচিপাড়া, ময়রাবাঁধের জামাইপাড়া জলমগ্ন। রাস্তায় জল জমে থাকায় যানচলাচল ব্যহত হয়েছে। ভৈরবস্থান মোড়ে এ দিন প্রায় ১ ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। অনেক বাস ঘুর পথে চলেছে। পুরপ্রধান বলেন, “রাস্তা, নিকাশি নালা সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কাউন্সিলরদের নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আলোচনায় বসব। পুজোর পরে সব এলাকায় নিকাশি নালা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে তাঁদের জন্য ত্রিপলের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষের জন্য ত্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
শুধু বাঁকুড়ায় নয়, নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় দক্ষিণ পুরুলিয়ার কয়েকটি এলাকায় নীচু সেতুর উপর দিয়ে জল বইছে। এর ফলে বিঘ্নিত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বোরো থানার দিঘি হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক শরৎচন্দ্র মাহাতো জানান, শুক্রবার নোয়াডি গ্রামের কাছে নীচু সেতুতে বুক সমান জল। ফলে পড়ুয়ারা স্কুলে যেতে পারেনি। জয়পুর গ্রামের টটকোনদীর উপরে নীচে সেতুতেও শুক্রবার কোমর সমান জল ছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.