পশ্চিমে তৎপর কৃষি দফতর
সারের দামে রাশ টানতে অভিযান
ড়া দামে সার বিক্রি বন্ধে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে অভিযানে নামল কৃষি দফতর।
অভিযোগ, বিক্রেতারা দিনের পর দিন চাষিদের কাছ থেকে বস্তা-পিছু (৫০ কিলো) দেড়শো থেকে দু’শো টাকা বেশি দাম নিচ্ছেন। বাধ্য হয়েই চড়া দামে সার কিনছেন চাষিরাও। বস্তুত, রাজ্য জুড়েই মুদ্রিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে সার বিক্রির অভিযোগ উঠছে কয়েক বছর ধরেই। দুই মেদিনীপুরে সম্প্রতি একাধিক কৃষক সংগঠন এবং চাষিরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। বার বার কৃষি দফতরেও বিষয়টি জানিয়েছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে কৃষি দফতর। খুচরো ও পাইকারি দোকানে হানাও দেন দফতরের আধিকারিকরা। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দুই জেলা জুড়েই সারের এই কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কৃষি দফতরের আধিকারিকরা ডিলার ও খুচরো বিক্রেতাদের গুদামে গিয়েও তল্লাশি শুরু করেছেন। দফতর সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহ ধরে অভিযান চালিয়ে দুই জেলায় বেশ কিছু সার বিক্রেতাকে শো-কজ করার পাশাপাশি সাসপেন্ড করা হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এমনকী লাইসেন্স বাতিলের মতো পদক্ষেপও করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তপনকুমার ভুঁইয়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) ধীরেন্দ্রনাথ মান্না বলেন, “অভিযান এখনও চলছে। প্রতি দিনই জেলার বিভিন্ন ব্লকের গ্রামগঞ্জে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নির্ধারিত মূল্যেই যাতে চাষিরা সার পান, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অসাধু ডিলার এবং খুচরো ব্যবসায়ীদের সার বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”দুই আধিকারিকেরই দাবি, ইউরিয়া বাদে গত আর্থিক বছর থেকে অন্য সব সারে সরাসরি সরকারি নিয়ন্ত্রণ নেই ঠিকই। দাম ঠিক করেন সার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিই। কিন্তু সরকার যেহেতু ভর্তুকি দেয়, তাই কোম্পানি-নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও যদি কেউ বেশি দামে বিক্রি করে তা হলে সেই বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার কৃষি দফতরের রয়েছে।
বেশি দামে যে দুই জেলায় সার বিকোচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি-সহায়ক ব্যবসায়ী সমিতিও। সমিতির সভাপতি নন্দলাল ঘোষ বলেন, “ডিলারদের গুদামে সার প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি সার পৌঁছে না দেওয়ায় আমাদের পরিবহণ খরচ দিন দিন বাড়ছে। বাধ্য হয়েই আমরা বেশি দাম নিচ্ছি।” একাধিক সার প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রতিনিধির পাল্টা দাবি, রেকে মাল নামার পর ডিলারদের গুদামে সার পৌঁছানোর পঞ্চাশ ভাগ খরচ নিয়মমাফিকই বহন করা হয়। এই চাপানউতোরের মধ্যে কৃষি দফতর সূত্রের ব্যাখ্যা, এক শ্রেণির বিক্রেতার বেশি মুনাফার লোভই বেশি দামের কারণ। তবে অভিযান শুরু হতেই অনেক ব্যবসায়ীর টনক নড়েছে বলে দাবি কৃষি দফতরের। পশ্চিম মেদিনীপুরের সহ-কৃষি অধিকর্তা দুলাল দাস অধিকারী জানান, জেলায় ২৩৪ জন পাইকারি ও ১৯৫২ জন খুচরো সার বিক্রেতা রয়েছেন। অভিযান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ১১ জন ডিলারের লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হয়েছে। লাইসেন্সে ছাড়াই সার বিক্রির জন্য ৩ জনের নামে মামলা শুরু করা হয়েছে। ৭০ জনকে শো-কজ এবং ২১ জনকে সতকর্র্ করা হয়েছে। সার বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১১ জনকে। পূর্ব মেদিনীপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) ধীরেন্দ্রনাথ মান্না জানান, জেলায় মোট ডিলারের সংখ্যা ৭৯, আর খুচরো বিক্রেতা ১২৫৭ জন। এঁদের মধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে ১৬ জনকে। শো-কজ করা হয়েছে ১৩৮ জনকে। অভিযান চলছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.