|
|
|
|
|
|
|
...গন্ধ এসেছে |
সৃষ্টিসুখের উল্লাসে
থিমের হাটে তাসের ঘর থেকে আলোর কথা।
নতুনত্বের সন্ধানে ঘুরে এলেন দেবাশিস দাস |
|
একেই বলে রথ দেখা ও কলা বেচা!
ঠাকুর দেখতে দেখতে সখের জিনিস কেনার সুযোগও মিলবে এ বার পুজোর মণ্ডপে। অভিনব এই পরিকল্পনা প্রতাপাদিত্য রোডের ত্রিকোণ পার্ক বারোয়ারি দুর্গাপুজো কমিটির। অভাব যাঁদের নিত্যসঙ্গী অথচ সৃষ্টির নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন এমনই কিছু শিল্পী এ বার পুজোর সাত দিন থাকবেন এই মণ্ডপে। বিভিন্ন জেলা এবং ভিন রাজ্য থেকে আসছেন এই সব শিল্পী। গালা, ডোকরা, বাঁশ, তালপাতা বা মাটির তৈরি শিল্পসামগ্রী দর্শনার্থীরা পছন্দ করে কিনতেও পারবেন। সঙ্গে থাকছে বাউল, সাঁওতালি নৃত্য এবং পটচিত্রের শিল্পীরা। এ পুজোর থিম: দুঃখের তিমির থেকে মঙ্গল আলোকে। উদ্যোক্তাদের কথায়: কষ্ট স্বীকার করেও যাঁরা সৃষ্টিসুখে রয়েছেন, উৎসবের দিনগুলোতে তাঁদের আনন্দে রাখতেই তাঁরা এই পরিকল্পনা করেছেন। |
|
বাষট্টি বছরের পিকনিক গার্ডেনের সুনীল নগর সর্বজনীনের পুজোর থিম: কর্মফলেই মানুষ দেবতা হয়ে ওঠে। এখানে দেখা যাবে মানুষ তাঁর নিজের কাজের গুণে কী ভাবে দেবতা হয়ে ওঠে তারই দৃশ্যায়ন। কসবার জগন্নাথ ঘোষ রোড পুজো কমিটি এ বারই প্রথম থিমের পুজো করছে। এই পুজোর থিম: ‘আলোর কথা।’ ব্রেইল পদ্ধতির সাহায্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রণীত বর্ণপরিচয়ের বিভিন্ন বিষয়কে তুলে ধরা হবে মণ্ডপসজ্জায়। বন্ডেল রোডের একুশ পল্লি সর্বজনীনের এ বারের থিম ‘পুরুষাকৃতি’। দুর্গার আর এক নাম ‘পুরুষাকৃতি’। পুরুষের দেওয়া শক্তির সাহায্যে দুর্গা কী ভাবে মহিষাসুর বধ করেছিলেন, সেটাই তুলে ধরা হবে এই মণ্ডপসজ্জায়।
তবে থিমের দৌড়ে না থাকলেও দর্শনার্থীদের নজর কাড়ার পরিকল্পনা নিয়ে ময়দানে নেমেছে আনন্দ-আরতি ক্লাব পরিচালিত পিকনিক পার্ক সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। মণ্ডপটি হবে গোলাকার। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে কাগজের মণ্ড, ঘট, বাঁশ, ডালা, রংবাহারি দড়ি এবং বিভিন্ন ধরনের মুখোশ। মনোহরপুকুর রোডের মঞ্জুশ্রী আসর পরিচালিত দক্ষিণ কলকাতা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের এ বার পয়ষট্টি বছর। উদ্যোক্তারা জানান, থিম পুজো না হলেও নজরকাড়া মণ্ডপ গড়তে কারিগররা এসেছেন দিঘা থেকে। পটুয়াপাড়া থেকে এই পুজোর প্রতিমা আসবে।
|
|
এ বার পঁচাত্তর বছরে পা দিল চক্রবেড়িয়া লেনের পদ্মপুকুর বারোয়ারি সমিতি। আয়োজকরা জানিয়েছেন, মণ্ডপ হচ্ছে প্যাগোডার আদলে। এই পুজোর নিরঞ্জন শোভযাত্রা আকর্ষণীয়। গঙ্গাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের ভবানীপুর ঋত্বিক ক্লাব এ বার তাদের মণ্ডপ সাজাচ্ছে তাস দিয়ে। থিম: তাসের ঘর। মণ্ডপের কারিগরেরা এসেছেন পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। পিকনিক গার্ডেন সানরাইজ ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে পুরীর জগন্নাথদেবের রথের আদলে। পণ্ডিতিয়া রামকৃষ্ণ সেবক সমিতির মণ্ডপটি গড়া হচ্ছে মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের অনুকরণে। মায়াপুর থেকেই এসেছেন এই পুজোর মণ্ডপ গড়ার কারিগররা। পণ্ডিতিয়া সন্ধ্যা সঙ্ঘের আটান্ন বছরের সাবেক রীতির মণ্ডপ ও প্রতিমা প্রতি বারই দর্শকদের নজর কাড়ে। |
|
নজর কাড়া পুজোর তালিকায় রয়েছে তিলজলা যুবকবৃন্দ, প্রতাপাদিত্য রোডের চতুষ্কোণ পার্কের শারদীয়া সম্মিলনীর পুজো, বন্ডেল রোড সংলগ্ন এলাকার নাটোরপার্ক বালক সঙ্ঘের গিরীন্দ্রশেখর সর্বজনীন দুর্গোৎসব। এই এলাকায় একটি রাস্তার নাম প্রখ্যাত মনোরোগ চিকিৎসক প্রয়াত গিরীন্দ্রশেখর বসুর নামে রয়েছে। তাই এই পুজোর সঙ্গে গিরীন্দ্রশেখরের নাম যুক্ত হয়েছে। তবে এই সব এলাকায় এ বার বেশ কিছু পুজো কমিটি থিমের দৌড়ে পা রাখেনি। টানা কয়েক বছর থিম করার পরে সেই ভাবে সাড়া না মেলায় এ বার থিম পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাদের। পাশাপাশি, এ বার নতুন করে থিম পুজোয় ফিরেছে বেশ কয়েকটি কমিটি।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
|
|
|
|
|