‘দিদি’ আসবেন না জেনে হতাশ বাংলাদেশ, সতর্কও
রকারি ভাবে কেউ মুখ খুলছেন না, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকা না-ও আসতে পারেন জানার পরে ঢাকায় কিঞ্চিৎ হতাশা তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ঢাকা সফরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও থাকছেন জানার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয়ে হয়েছিল প্রস্তুতি। বাংলাদেশের আমজনতার মধ্যে মমতাকে ঘিরে একটা আগ্রহ ও কৌতূহল বরাবরই রয়েছে। ২৮ অগস্ট বনগাঁয় পেট্রাপোল সীমান্তে সুসংহত চেকপোস্ট উদ্বোধনের দিন তার কিছুটা আঁচও মিলেছিল। সেই ‘মমতা আপা’কে ঢাকা-সফরে কী ভাবে স্বাগত জানানো হবে, দেশের গর্ব জামদানি আর ইলিশ তো বটেই, আরও কী কী দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো যায়, তা নিয়েও রীতিমতো গবেষণা চলছিল। কিন্তু রবিবার দুপুরে তাঁর সফর বাতিলের সম্ভাবনার কথা জানাজানি হতেই ছবিটা বদলে গেল। ঢাকায় বহু মানুষেরই প্রার্থনা, সিদ্ধান্ত বদলে বাংলাদেশে আসুন ‘মমতা দিদি’।
সরকারি ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর বাতিলের খবর ঘোষণা না হওয়ায় সরকার বা বিরোধী কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করছেন না। সরকারি কর্তাদেরও মুখে কুলুপ। কিছুটা সতর্কতাও। আসলে মনমোহন সিংহের আসন্ন সফরে তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়েই সব চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে। ওই চুক্তি নিয়ে লাভক্ষতির হিসেব কষছে সব পক্ষই। মমতার ঢাকা সফর বাতিলের পিছনেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে অসন্তোষ। আর এটা জানার পরেই সতর্ক বাংলাদেশের সরকার-বিরোধী সব পক্ষ। ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের এক সূত্র অবশ্য জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকা সফরে আসছেন না, এমন কোনও তথ্য তাঁদের জানা নেই। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, বেসরকারি ভাবে তাঁরা জেনেছেন, মমতা আসবেন না। তার পরে দিল্লিতে হাই কমিশনের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন, মমতাকে ঢাকায় আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জলসম্পদমন্ত্রী রমেশচন্দ্র সেন আনন্দবাজারকে বলেছেন, “সংবাদমাধ্যম থেকে তাঁর না আসার সম্ভাবনার কথা জেনেছি। তবে আমাদের বিশ্বাস, উনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতা অসন্তুষ্ট মানে বাংলাদেশকে বেশি জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে দিল্লি। তাঁদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়িত হলে এই প্রচারটাই উঠে আসবে যে, হাসিনার সরকারের চাপে পশ্চিমবঙ্গকে সন্তুষ্ট না করেও ঢাকাকে বেশি জল দিতে রাজি হয়েছে দিল্লি। তাতে রাজনৈতিক ভাবে শেখ হাসিনার সরকার যতটা লাভবান হবে, ততটাই বিপাকে পড়ে যাবে করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সতর্ক তারা। প্রকাশ্যে অন্তত সকলেই মন্তব্য এড়িয়ে যাচ্ছেন। অন্য দিকে বিরোধীরাও চুপ। তাদের তরফে রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
মমতার সফর বাতিলের খবর শুনে হতাশ সাধারণ মানুষও। ঢাকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবে শুনে ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় জ্যোতি বসু ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিচক্ষণতা ও দক্ষতা তাঁদের দুই বাংলায় জনপ্রিয়তা দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় মমতার ভূমিকা ও উপস্থিতি খুবই জরুরি ছিল।” এক সরকারি কর্তার কথায়, “ মমতা দিদি এলে না এলে ছিটমহল হস্তান্তর নিয়ে যে আশা দেখা দিয়েছে, তা ধাক্কা খেতে পারে।”

এই সংক্রান্ত আরও খবর...
রাজ্যের আপত্তি, তবু বেশি জল ঢাকাকে
• ‘বঞ্চনা’র হাতিয়ার হারিয়ে ‘বিড়ম্বনা’ বাড়ল সিপিএমের
• চুক্তি নিয়ে কৌতূহলী উত্তরবঙ্গ, উদ্বিগ্নও



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.