গত কালই দেখা গিয়েছে বাব আল-আজিজিয়া প্রাসাদে প্রবল রোষে গদ্দাফির মূর্তি ভাঙছেন এক দল তরুণ বিপ্লবী। বোঝা গিয়েছিল যে শেষ প্রহর আর দূরে নয় লৌহমানবের ৪২ বছরের শাসনের। আজও দিনভর একই দৃশ্য দেখা গেল ত্রিপোলিতে। গদ্দাফি-পূর্ব লিবিয়ার পতাকা ও ছয় মাসের লড়াইয়ে নিহত ‘শহিদ’দের ছবি হাতে ঘুরতে দেখা গিয়েছে জনতাকে। তবে গদ্দাফির ছায়া থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি তাঁর রাজধানী।
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থাতেই ছেলে সইফ আল-ইসলামের টেলিভিশন চ্যানেলে এক অডিও বিবৃতিতে আজ লিবিয়াকে সন্ত্রাসমুক্ত করার ডাক দেন কর্নেল মুয়াম্মর গদ্দাফি। দাবি করেন, তাঁর বাব আল-আজিজিয়া প্রাসাদ ছেড়ে যাওয়াটা প্রতিরোধ কৌশলেরই অঙ্গ। লিবিয়াকে ‘দখলদার’দের থেকে মুক্ত করতে না পারলে, যুদ্ধক্ষেত্রেই শহিদ হবেন বলেও দাবি করেন তিনি। |
আজ দেখা গিয়েছে ত্রিপোলির বিভিন্ন প্রবেশপথে তল্লাশি চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। তবে পুরো শহর এখনও তাদের হাতে এসেছে কী না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় বেনগাজিতে থাকা বিরোধীদের সর্ব্বোচ্চ নেতৃত্বই। আজ স্থানীয় সময় দুপুর বারোটা নাগাদ বাব আল-আজিজিয়া প্রাসাদ ও তার আশপাশের অঞ্চলে ফের বোমা বর্ষণ করে ন্যাটোর বিমান। শহরের প্রধান কেন্দ্র গ্রিন স্কোয়্যারেও সরকারি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এ রকম কিছু জায়গা ছাড়া, শহরের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ আপাতত বিদ্রোহীদের হাতে।
বেনগাজিতে বিদ্রোহী জাতীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুস্তাফা আবদেল জলিল আজ জানান, দ্রুত তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবেন। আগামী আট মাসের মধ্যে জাতীয় আইনসভা ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করানোর কথাও জানান তিনি। ত্রিপোলির অবস্থা নিয়ে জলিল জানান, গত তিন দিনের লড়াইতে রাজধানীতে অন্তত ৪০০ লোকের মৃত্যু হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা দু’হাজারের কাছাকাছি। তবে খুব দ্রুত ত্রিপোলিতে শান্তি ফিরে আসবে বলে তিনি দাবি করেন। বিরোধী নেতৃত্বও এ বার বেনগাজি থেকে ত্রিপোলিতে যাবেন। গদ্দাফি ও তাঁর ছেলেদের বিচার লিবিয়াতেই হবে বলেও জানান জলিল।
তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ার গদ্দাফি-উত্তর রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলও। আজ বুধবারই কাতারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বিদ্রোহী কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা। নতুন লিবিয়ার পুনর্গঠনের ব্যাপারে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে বলে বিরোধী সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে গদ্দাফির খোঁজ না মেলা পর্যন্ত কিছুতেই পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না বেনগাজির বিদ্রোহী নেতৃত্ব। বিরোধী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জলিলের কথাতেই তা স্পষ্ট। তিনি আজ খোলাখুলি বলেন, ত্রিপোলি দখলে আসলেও, গদ্দাফির খোঁজ না মেলা পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না।
|
ভূমিকম্পের জেরে সেনেট বসল ভূগর্ভে |
ভূমিকম্পের জেরে ভূগর্ভস্থ ঘরে বসল মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সেনেটের অধিবেশন। মঙ্গলবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ওয়াশিংটন সহ আমেরিকার কিছু অংশ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৫.৯। কম্পনের কেন্দ্র ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের কাছে। ভূমিকম্পের জেরে গত কাল মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশন ক্যাপিটল হিল ভবনে বসতে পারেনি। আজ তাই ইউনিয়ন স্টেশনের কাছে একটি ভূগর্ভস্থ ঘরে অধিবেশন বসে। কম্পনের ফলে পেন্টাগন সহ বেশ কিছু সরকারি ভবন খালি করে ফেলা হয়। কেঁপে উঠেছিল হোয়াইট হাউসও। তবে এই ঘটনায় প্রাণহানি বা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। |