ক্লাস টেনের ছাত্ররাই পুজোটা করবে, এমনই রেওয়াজ স্কুলের। পটোপাড়া থেকে স্কুল কাছেই। আশা ছিল, বিকেল নাগাদই প্রতিমা পেয়ে যাবে। স্কুলের দারোয়ানের ঘরের পাশে ঝুপড়ি বেঁধে অনেক দিন থেকেই বাস করে তিন ঠেলাওয়ালা। তাদেরই এক জনের ঠেলা নিয়ে পটোপাড়া থেকে নিয়ে আসা হবে প্রতিমা, এটাই প্রতি বছরের বন্দোবস্ত। কিন্তু, বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত অন্তত বার তিনেক পটোপাড়ায় গিয়ে ঘুরে এসেছে বাদলরা। তখনও ফিনিশিং টাচ বাকি। এক সঙ্গে গোটা চারেক প্রতিমা শেষ করবার কাজ চলছে। ‘এই তো ভাই, আধ ঘণ্টার মধ্যেই তোমাদের ঠাকুরটা হয়ে যাবে’, প্রতিমা শিল্পীর এই আশ্বাসে বুক বেঁধে বার বার ওরা এসেছে আর খালি হাতে ফিরে গেছে।
প্রতিমা কত দূর এগোল, তার আগের দিন সন্ধেতেই বন্ধুরা মিলে এসে দেখে গেছে। তখন লোডশেডিং চলছে। পটুয়া প্রায় একা হাতেই সব সামলাচ্ছে। হাতে মোমবাতি ধরে স্বামীকে আলো দেখাচ্ছে তার বউ। পটোর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে অসীম বলেছিল, ‘‘আচ্ছা, এরা কি মন থেকে ঠাকুর গড়ে? কোনও মডেল লাগে না?’’ সনৎ জবাব দিয়েছিল, ‘‘মডেল তো হাতের কাছেই। ওর বউকে দেখলি না?’’ বাদল ঠিক ভেবে উঠতে পারছিল না, ও রকম ঘোমটা-টানা রুগ্ণ এক মহিলা কেমন করে পূর্ণ যৌবনা মাটির প্রতিমার মডেল হতে পারে। কিন্তু, কথাটা মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত প্রতিমা হাতে পাওয়া গেল রাত এগারোটায়। ঠেলার ওপরে প্রতিমা রেখে তার বেদির কাঠামোর বাঁশের সঙ্গে শক্ত দড়ি দিয়ে ঠেলায় বেঁধে দেওয়া হল। কিন্তু, ঠেলাওয়ালা বলল, কেবল নীচে দড়ি বাঁধলে হবে না। ছেলেদের কেউ এক জন ঠেলায় উঠে দাঁড়িয়ে ঠাকুরকে ধরে রাখুক।
বাদলের চেহারাটা বন্ধুদের মধ্যে ছোটখাটো। কাজেই, তাকেই ঠেলায় উঠে পড়তে বলা হল। কিন্তু, ঠেলায় উঠে তো বাদল নিজেই টলোমলো। কোনও রকমে ঠাকুরের গায়েই হাত ঠেকিয়ে নিজেকে ব্যালান্স করল বাদল। গায়ে মানে তো সরাসরি বুকে। মুখে বা গলায় হাত দিয়ে নিজের শরীরের ভর রাখতে গেলে প্রতিমার ক্ষতি হতে পারে। একটু ইতস্তত করে প্রতিমার বুকেই হাত রাখল বাদল। |
ঠেলা চলতে শুরু করল। অসমান পথে হোঁচট খেতে খেতে চলল ঠেলা। আর, বাদল বুঝল, দু’হাতের মুঠোয় প্রতিমার বুক চেপে না ধরলে নিজেই উল্টে পড়ে যাবে। মনের মধ্যে কী যেন একটা পাপবোধ। এ ভাবে বুক হাতের মুঠোয় নেওয়া? মুঠোর মধ্যে হাতের তালুতে মূর্তির স্তনের সম্পূর্ণ গড়ন স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। প্রতিমার দিকে না তাকিয়েও কেবল হাতের স্পর্শে বাদল অনুভব করল বর্তুল স্তনের আদিম আকর্ষণ। অনুভব করল স্তনের বৃন্ত দু’টি। ওই মাঘ মাসের হিম-ঝরা গভীর রাতেও কপালে ঘাম দিল বাদলের। মেয়েদের বুক নিয়ে নিজেরা বন্ধুরা অনেক কথা আলোচনা করেছে। কিন্তু এখনও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কারওরই স্তন স্পর্শ করবার অভিজ্ঞতা হয়নি। আর, বাদলের কিনা সেই অভিজ্ঞতা হল প্রতিমার বুকে হাত দিয়ে?
এই অনুভবের কথা অনেক দিন পরে প্রেম পর্ব একটু পুরনো হওয়ার পরেই অহল্যাকে বলেছিল বাদল। শুনে অহল্যা হেসেছিল। তার পর এক দিন চোখের কোণে হেসে জানতে চেয়েছিল, ‘‘একটা আস্ত মেয়েকে পেয়েও মাটির মূর্তির বুকের কথা ভাবা ছাড়তে পারলে না!’’ প্রেমিকাকে জড়িয়ে ধরে বাদল বলেছিল, ‘‘নাঃ। তোমার বুক ছুঁলেই ওই পুরনো কথাটা মনে পড়ে যায় যে!’’ জীবনের প্রথম বুক-ছোঁয়ার রোমাঞ্চ থেকে কিছুতেই বেরোতে পারছিল না বাদল।
বাদল নিজের কথাটা ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারে না। কেমন করে বলবে, কৈশোর ওই অভিজ্ঞতা থেকে সে সত্যিই বেরিয়ে আসতে পারেনি। আবার, এও তো সত্যি, অহল্যার বুকও তাকে আলাদা ভাবে টানে। কেননা, মৃৎ-মূর্তির বুকের মধ্যে রহস্য নেই। সরাসরি যা দেখা যায়, তার গভীরে আর কোনও কিছু আবিষ্কার করবার নেই। কিন্তু, মানবীর বুকের কী অপার রহস্য। রহস্যটা আরও তীব্র মনে হত গলার সোনার হারের ছোট্ট লাল চুনির লকেটটা দুই বুকের খাঁজে অদৃশ্য হয়ে গেলে। অহল্যার বারংবার শাড়ির আঁচল সরে যাওয়ার ফাঁকে ওর দুই বুকের মধ্যেকার উপত্যকাকে মনে হত অতলান্ত। সেই গভীরে ডুব দেওয়ার সম্মতি আদায় করতে কম সময় তো লাগেনি। আর, সেই অতলান্তে ডুব দিয়ে মুক্তো খুঁজে পাওয়ার মতো করে প্রথমে টেনে আনা লাল চুনির লকেটটা। তার পরে আঙুল ছুঁয়েছে স্তনের শিউরে-ওঠা উৎসুক বৃন্ত দু’টি।
বিয়ের পরে রাতে শোবার ঘরের হাল্কা আলোয় অহল্যার সাদা সিল্কের রাত্রিবাস পরা বুকের ঢেউ দু’টি সে নির্নিমেষ তাকিয়ে দেখে। অহল্যা লজ্জা পায়। বলে, ‘‘কী, হচ্ছে কী!’’ বলে গায়ের ওপরে চাদর টানতে যায়। বাদল বাধা দেয়। তার পরে রাত্রিবাস সরিয়ে দেয়। ওর উৎসুক দৃষ্টির নীচে অহল্যার বুক দু’টি জেগে উঠতে শুরু করে। বাঁ বুকটি নিশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে তির তির করে কেঁপে কেঁপে ওঠে। এক সময় বর্তুল মাংসপিণ্ডের ভিতর থেকে ফুঁড়ে ওঠে স্তনের বৃন্ত দু’টি। বাদল অহল্যাকে বলে, ‘‘বাধা দিয়ো না, দেখতে দাও। জানো, বোঁটা জেগে না উঠলে মেয়েদের বুকের কোনও চরিত্র বোঝা যায় না। তার আগে অবধি কেবলই দু’টি মাংসের ঢিপি। বোঁটা দেখা গেলে মনে হয়, ও দু’টি যেন বুকের চোখ। আমার দিকে তাকিয়ে দেখছে। চোখ ছাড়া কি কারও মন বোঝা যায়?’’ বলতে বলতে মুখ নামিয়ে দেয় বুকে? জিভ খেলা করে বৃন্ত দু’টিকে ঘিরে। তার পর মুখ তুলে ফের তাকায়। বলে, ‘‘দ্যাখো, কেমন চকচক করছে!’’
সেই কৈশোরে দু’হাতের মুঠোয় সরস্বতী প্রতিমার বুক চেপে ধরা, বুকের বোঁটা দু’টি স্পষ্ট করে অনুভব করবার স্মৃতি বাদলকে এত বছর পরেও রোমাঞ্চিত করে। তাই বার বার অহল্যার খোলা বুকের বোঁটা না দেখলে ওর যেন বুক-দর্শন সম্পূর্ণ হয় না। কেমন করে, কত রকম করে অহল্যার খোলা বুক অনুভব করবে, মাথা খাটিয়ে তার নানা ফন্দি বের করত বাদল। এক বার যেমন মাথায় এল, সর্দি সারানোর জন্য ছোট্ট যে মধুর শিশিটা কিনে আনা হয়েছে, তার থেকে কিছুটা মধু বুকে ঢেলে দিলে কেমন হয়। অহল্যাকে আগে থেকে বুঝতে না দিয়ে ওর খোলা বুকে ঢেলে দিল মধু। তার পর জিভ দিয়ে সারা বুক থেকে চেটে চেটে মধু তোলার পর্ব। অহল্যা গোড়ায় রেগে গিয়েছিল। কিন্তু, বাদলের জিভের উষ্ণতা ক্রমেই ওর ভাল লাগছিল। মধুমেহনের পরে সে রাতের মিলনের কথা অনেক দিন পরেও মনে পড়ে যেত অহল্যার।
বাদলের এই পাগল-পাগল আদরের সময় অহল্যা একএক সময় ভুলে যেত, বাদল তার বুক স্পর্শ করে আসলে মৃৎ-মূর্তির স্তন স্পর্শের অভিজ্ঞতার জগতেই ফিরে যাচ্ছে কিনা। কিন্তু, বিয়ে যত পুরনো হতে লাগল, বিষয়টা নিয়ে বিরক্ত হতে শুরু করল অহল্যা। মনে সন্দেহ দৃঢ় হল, আদর করতে গিয়ে বাদল ওর বুক নিয়ে পাগলামি করবার সময় মনে মনে কল্পনা করে নেয় সেই মৃৎ প্রতিমাকেই।
অহল্যার বয়স হচ্ছে, প্রথম যৌবনের সেই ঘন সন্নিবদ্ধ দৃঢ় স্তন একটু একটু করে শিথিল হতে শুরু করেছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরী আদরের মাদকতাও ফিকে হয়ে আসছে। বুক নিয়ে বাদলের পাগলামিতে আপত্তি করতে শুরু করল অহল্যা। এক দিকে বাদলের মনের জটিলতা নিয়ে বিরক্তি, অন্য দিকে, শিথিল হতে শুরু করা স্তনে বাদলের রাক্ষুসে আদর ক্রমেই উৎপাত মনে হতে লাগল অহল্যার। বুকের গড়ন আর নষ্ট হতে দিতে রাজি নয় সে। বাদল হয়তো শিথিল স্তনের দিকেও নির্নিমেষ তাকিয়ে জীবনানন্দের ‘করুণ শঙ্খের মতো দুধে আর্দ্র’ বর্ণনাটুকুর অর্থ অনুভবের চেষ্টা করত। শিথিলতার সঙ্গে করুণ শব্দটি হয়তো মেলানো যায়। কিন্তু স্তন যখন দুধে আর্দ্র, তখন শুভ্র শঙ্খের কথা ভাবা যায়। কিন্তু, করুণ কেন? ভাবনা মনের মধ্যে কেবলই ঘুরপাক খেত।
ঘুমের আগে পাশ ফিরে অহল্যার বুক হাতের মুঠোয় নিয়ে শুতে ভালবাসত বাদল। কিংবা, মুখোমুখি শুয়ে অহল্যার বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে ঘুমোনো। নির্ভরতার আকাঙ্ক্ষার অসহায় প্রকাশ হয়তো। এক দিন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল অহল্যার। বাদলকে ঠেলে সরিয়ে অহল্যা বলে উঠল, ‘‘বুক নিয়ে বাড়াবাড়ি কোরো না তো? মেয়েদের বুক নিয়ে একেবারে অবসেসড হয়ে গেছ তুমি। বয়স কমছে, না বাড়ছে? সরো, গরম লাগছে। আমাকে নিজের মতো শুতে দাও। একেবারে পার্ভার্ট হয়ে যাচ্ছ তুমি।’’
কিছু দিনের মধ্যেই দু’জনের বিছানা আলাদা হল। অহল্যার শরীরের স্বাদ ক্রমেই বিরল হয়ে উঠতেই মধ্য চল্লিশের বাদল এক দিন কালী প্রতিমার বাঁধানো ছবি এনে ঢোকাল শোবার ঘরে। অহল্যা আর সহ্য করতে পারল না। ওদের ঘরও আলাদা হল। ওদের শরীরী সম্পর্ক এ বার প্রায় শেষ। অহল্যার পক্ষে এটা মেনে নেওয়া শক্ত ছিল যে, বাদল এ বার কালীর নগ্নতা নিয়ে নিজের কল্পনায় খেলা করবে। এই নগ্নতা অনেক স্পষ্ট। তাই সরস্বতীর ছবি নয়, বাদল ঘরে এনে তুলেছে কালীর ছবি। ঠাকুরের নগ্ন ছবি ঘরে রাখলে কারও চট করে কিছু অস্বাভাবিক মনে হবে না। কালীর বদলে কোনও নগ্নিকার ছবি ঘরে রাখলে বাদলের রুচি নিয়ে কথা উঠতে পারে। কিন্তু, কেন এই ছবি, অহল্যার তো তা অজানা নয়।
অহল্যার শরীর থেকে বঞ্চিত হয়ে বাদল আরও ডুবে যেতে লাগল তার কল্পনার নগ্নতায়। কালীর সুঠাম স্তনের দিকে অনিমেষ তাকিয়ে থাকে বাদল। ছবির ওপরে আঙুল রাখে। কিন্তু, ছবি তো ছবি-ই। আর, মূতি মূর্তি-ই। এক দিন বাদল প্রায় তিন দশক পরে ফিরে এসে সেই কালীঘাটের পটোপাড়ায়। জায়গাটার অনেক বদল হয়েছে। কিন্তু, মূর্তি গড়ার ব্যাকরণ তো পাল্টায়নি। মৃৎ-শিল্পীদের পাড়ার অলিগলিতে ঘোরে বাদল। দু’পাশে নানা অসম্পূর্ণ দেবী মূর্তি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাদল মূর্তিতে মাটি ধরানো দেখে। দেখে, কেমন নিটোল করে গড়া হয় প্রতিমার উরু, স্তন, হাত। স্তনের উপরে বৃন্ত দু’টি স্থাপন করে মৃৎ-শিল্পী। বাদলের মনে শৈশবের সরস্বতী আবার জীবন্ত হয়ে ফিরে আসে। খুব ইচ্ছে করে, আবার এক বার হাতের দু’মুঠোয় নিক মাটির প্রতিমার স্তন। অনুভব করুক স্তনের দৃঢ় বৃন্ত দু’টি। কিন্তু, ঠিক সাহস হয় না।
কিন্তু, কৈশোরের যৌনতার জগতে পরিক্রমা হঠাৎই ধাক্কা খায় একটু দূরের মূর্তিগুলিকে দেখে। এতক্ষণ সম্পূর্ণ মূর্তির দিকে তাকিয়েছিল বাদল। পাশে যে মূর্তিগুলি রয়েছে, সেগুলি মুণ্ডহীন। মাটির ওপরে এখনও রং-ও ধরানো হয়নি। ফাটা-ফাটা মাটির শরীর। সেগুলিরও উরু রয়েছে, স্তন রয়েছে। কিন্তু এই ধড়-সর্বস্ব নগ্নিকাদের দেখে বাদলের হঠাৎ গা গুলিয়ে ওঠে। মুণ্ডহীন এই নগ্নিকারা বাদলের কাছে আর কোনও আবেদন নিয়ে আসে না। কেবলই কয়েকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পরিণত হয়। ফের তাকিয়ে দেখে সম্পূর্ণ মূর্তিগুলির দিকেও। যা ছিল এক আকর্ষণের, তা-ই হয়ে গেল কেমন যেন বীভৎস। এই মূর্তিগুলিও কয়েক মুহূর্ত আগেকার তীব্র শরীরী টান হারিয়েছে। পাল্টে গেছে অর্থহীন, অবয়বহীন কাদার তালে। নিজেই ভেবে পায় না কেমন করে এতগুলো বছর মাটির মূর্তি ওর শরীরী চেতনাকে এমন করে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল।
বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে ঢুকে বাদল উল্টে ফেলে দেয় নগ্নিকা কালীর ছবি। মাটির প্রতিমা কিংবা ছবির প্রতিমার নগ্নিকাদের প্রতি এত বছরের আকর্ষণ এক লহমায় কোথায় যেন উধাও হল। বাদলের কাণ্ড দেখে হতভম্ব অহল্যা। বাদলের কিন্তু ততক্ষণে অহল্যার শরীরের জন্য মন কেমন করতে শুরু করেছে। সে অহল্যার পাশে গিয়ে বসে। চুপ করে তাকিয়ে থাকে বউয়ের দিকে। অহল্যা অবাক হয়ে বলে, ‘‘কী হল, ছবিটা যে ফেলে দিলে?’’ বাদলের গলায় কান্না পাকিয়ে ওঠে। ভাঙা গলায় বলে, ‘‘আর চাই না ছবি। আমি কেবল তোমাকে চাই। ।’’
তখন সন্ধ্যা নেমে গেছে। ওদের তিন তলার ঘরের জানলার ফাঁকে ত্রয়োদশীর প্রায় পূর্ণ চাঁদের আবছা সবুজ আলো। পুরনো রাগ, অভিমান আর মাটির প্রতিমার ওপর নিজের পুরনো ঈর্ষা ভুলে গিয়ে অহল্যা বাদলের কাছে আসে। বাদলের চোখের জলে ভিজে যায় অহল্যার বুকের কাপড়। তার পর শিশুর মতো আশ্রয়ের আশায় খোঁজে অহল্যার বুক। টেনে নামায় বুকের বসন। বুক কিছুটা নম্র। মৃণ্ময়ী মূর্তির মতো কঠিন ও অহঙ্কারী নয়। বাদল তো আশ্রয় পেতে চায় নরম বুকের কোমলতাতেই। তার অশ্রু ফোঁটা ফোঁটা হয়ে পড়ে অহল্যার বুকের ঠিক মধ্যেখানে। সেই স্বচ্ছ অশ্রুর মধ্যে দিয়ে খুব ধীরে ধীরে জেগে ওঠে বৃন্ত দু’টি। অস্পষ্ট চাঁদের আলোতেও তাদের ঈষৎ তামাটে রং বোঝা যায় অশ্রুজলের মধ্যে থেকেও। সেই রংটা বাদলকে টানে। বাদল হাতের মুঠোয় চেপে ধরে দুই স্তন। মুহূর্তে জেগে উঠতে থাকে অহল্যার শরীর। তার স্তনবৃন্তের উপর থেকে বাদলের জিভ শুষে নেয় নিজেরই অশ্রুবিন্দু। একই সঙ্গে আগুন আর জল। তার জিভের আর্দ্রতায় সিক্ত হতে থাকে বোঁটা দু’টি। বাদলকে বুকের মধ্যে আশ্রয় দিতে দিতে দিতে কেমন করে যেন অহল্যা জীবনে এই প্রথম অনুভব করে, বাদল তাকেই আদর করছে। কেবলই তাকে, কল্পনায় কোনও দেবীমূর্তির শরীরের অস্তিত্ব ছাড়াই।
অহল্যা বাদলকে বুকের ওপর টেনে নিয়ে উরু দু’টি প্রসারিত করে চোখ বুজে অস্ফুটে কেবল বলল, ‘‘এসো।’’
|