প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ
স্কুলে আসা তফসিলি জাতি-উপজাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘বুকগ্রাণ্ট’-এর টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার চরমণ্ডল সিএমপিপিবিকে ফুলমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে। ইন্দ্রদ্যুতি বিশ্বাস নামে ওই প্রধানশিক্ষককে শুক্রবার ভাবানীপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। বনগাঁর এসডিপিও বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক কালিপদ মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে ইন্দ্রদ্যুতিাবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” যদিও ইন্দ্রদ্যুতিবাবুর বক্তব্য, “এটা আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ এদিন তাঁকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আষাঢ়ু শাখায় স্কুলের অ্যাকাউন্টে ২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা জমা হয়। অভিযোগ, প্রধানশিক্ষক ইন্দ্রদ্যুতিবাবু ওই মাসেরই ১৯, ২৩ ও ২৯ তারিখ মোট তিন দফায় ওই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেন। কিন্তু ওই টাকা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলি করা হয়নি। স্কুলের পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক অমর শীলকে জানানো হয়। সেই সঙ্গে ওই প্রধানশিক্ষকরে বিরুদ্ধে ওঠা নানা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে পরিচালন সমিতি।

ধৃত প্রধানশিক্ষক।--নিজস্ব চিত্র।
পরিচালন সমিতির সম্পাদক কালিপদ মণ্ডল বলেন, “গত ফব্রুয়ারি মাসে ব্যাঙ্ক থেকে এসসি, এসটি বুক গ্রাণ্টের জন্য তিন দফায় ২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা প্রধানশিক্ষক তুলে নিলেও তা ছাত্রছাত্রীদের দেননি। যদিও সঙ্গে সঙ্গে তা ছাত্রছাত্রীদের বিলি করা নিয়ম। এর পর গত ৫ অগস্ট বাগদা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।” শুধু বুকগ্রাণ্টের টাকাই নয়, ইন্দ্রদ্যুতিবাবুর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ১৩ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে সহকর্মীদের মারধর করার অভিযোগ করা হয় থানায়। সেই সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। পরিচালন সমিতির অভিযোগ, সহ শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, বিধায়ক তহবিল থেকে প্রাপ্ত টাকা, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা, অতিরিক্ত বিল্ডিং তৈরির ক্ষেত্রে সঠিকভাবে খরচ করেননি ইন্দ্রদ্যুতিবাবু। এমনকী সচিত্র পরিচয়পত্রের জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে মাথাপিছু যে ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল তারও কোনও হিসাব দেননি তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্কুলে ৩০ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। এ সবের জন্য তাঁকে শো-কজও করা হয়েছিল। অভিযুক্ত ইন্দ্রদ্যুতিবাবু অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর স্ত্রী জয়শ্রীদেবী জানান, গত ১৩ জুলাই স্কুলে ওই মারধরের ঘটনার পরে তাঁর স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। তাঁর স্বামী ব্যাঙ্ক থেকে যে ওই টাকা তুলেছিলেন তা ঠিক। কিন্তু অসুস্থতার কারণেই তিনি সেই টাকা তিনি দিতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, ৫ অগস্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরে পরদিন তাঁর স্বামীকে শো-কজের চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ১৫ দিনের মধ্যে উপস্থিত থেকে অভিযোগের উত্তর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জয়শ্রীদেবী আরও বলেন, “সম্পাদকের কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিলাম, আমার স্বামী স্কুলে যোগ দিতে চান। এবং ওই টাকা তিনি ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার স্বামীকে স্কুলে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। এ দিন আদালতে ইন্দ্রদ্যুতিবাবুর আইনদীবী সমীর দাস বলেন, ‘‘আমরা আদালতে জানিয়েছি যে আমার মক্কেল সমস্ত টাকাই ফেরত দিয়ে দেবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.