|
|
|
|
মুর্শিদাবাদে জোট নিয়ে দ্বন্দ্ব কাটছে না কংগ্রেস-তৃণমূলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
মুর্শিদাবাদে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ তৃণমূল।
এটাই ‘দলীয় নির্দেশ’। তা মেনেই শুক্রবার দলত্যাগী কংগ্রেস এবং বাম সদস্যদের নিয়ে সামশেরগঞ্জের চাচণ্ড পঞ্চায়েত দখল করল তৃণমূল। অথচ ওই পঞ্চায়েতে ছিল না কোনও তৃণমূল সদস্য। এর আগে সোমবার সাগরদিঘি ব্লকে ৩ প্রধান-সহ ৫১ জন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সেখানে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এসেছে দল।
১৩ সদস্যের চাচণ্ড পঞ্চায়েতে ৮ জন কংগ্রেসের, ফরওয়ার্ড ব্লকের ৩ জন এবং এক জন করে আরএসপি ও সিপিএমের সদস্য ছিলেন। মাস দুয়েক আগে ফরওয়ার্ড ব্লকের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে ২ তৃণমূল ও বাম সদস্যের সমর্থন নিয়ে ৩ কংগ্রেস সদস্য দলেরই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। শুক্রবার ডাক দেওয়া হয় অনাস্থা সভার। উপস্থিত ছিলেন ওই ৭ সদস্য। সভায় যোগ দেননি বাকি ৫ কংগ্রেস ও এক ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য। বিরোধী ৭ সদস্যের ভোটে অপসারিত হন কংগ্রেসের প্রধান ফারুক হোসেন। সামশেরগঞ্জের বিডিও তাপস ঘোষ বলেন, “১৩ জনের মধ্যে ৭ জনের উপস্থিতিতে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়েছে। অপসারিত হয়েছেন কংগ্রেস প্রধান। বিকল্প প্রধান নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতে উপপ্রধান কাজ চালাবেন।”
এরপরেই এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন ৩ কংগ্রেস এবং বাকি দুই সিপিএম ও আরএসপি সদস্য। অনাস্থায় যোগ দেওয়া ৭ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজল মামুদ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “অনাস্থায় যোগ দেওয়া ৭ পঞ্চায়েত সদস্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এখন থেকে আইনগত ভাবে তৃণমূলের সদস্য হিসেবে কাজ করবেন তাঁরা।” তৃণমূলের সঙ্গে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের এই রেষারেষি মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় যে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে পঞ্চায়েত স্তরে সাগরদিঘি ও সামশেরগঞ্জের ঘটনা তারই দৃষ্টান্ত। ফজল মামুদের কথায়, “জোটসঙ্গী হলেও এ জেলায় কংগ্রেসের কাজ তৃণমূলের বিরোধিতা করা। কাজেই আমরাও কংগ্রেসকে কোথাও এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। এটাই দলীয় নির্দেশ। তা মেনেই চাচণ্ড থেকে কংগ্রেস প্রধানকে অপসারণ করা হয়েছে।”
চাচণ্ড পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানকে অপসারণে তৃণমূলের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। সামশেরগঞ্জ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “তৃণমূল বামফ্রন্টের চার সদস্যকে নিয়ে কংগ্রেসের তিন সদস্যকে ভাঙিয়ে এই অনাস্থা এনে পঞ্চায়েতে অস্থিরতা তৈরি করেছে। বামেদের সঙ্গে নিয়ে এ ভাবে কংগ্রেসের প্রধানকে অপসারণে প্রমাণিত জেলায় বামফ্রন্টের সঙ্গী তৃণমূল। অনাস্থার সমর্থন করেছেন যে তিন সদস্য তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
সিপিএমের বাসুদেবপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক রোবজুল ইসলাম বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে দলের এক সদস্য আছেন। তিনি দলকে না জানিয়ে কেন ভোটাভুটিতে যোগ দিলেন সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আরএসপি’র ধুলিয়ান জোনাল সম্পাদক রওশন আলি অবশ্য বলেন, “ওই সদস্য দলকে জানিয়েই অনাস্থায় যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।” |
|
|
|
|
|