ফাঁপড়ের স্কুলমুখো শিশুদের রোজই ঠেলতে হচ্ছে গলা জল
য় ডোঙায় চেপে চাও। নয়তো বুক পর্যন্ত জল ঠেলতে হবে। কিন্তু খুদে পড়ুয়াদের দুর্ভোগ আরও বেশি। তাদের তো এক মাথা জল। কিন্তু এই দুর্ভোগ হত না যদি মাত্র ২০০ মিটার রাস্তা ফুট চারেক উঁচু করা হত।
প্রতি বছর বর্ষার সময় ওই রাস্তাটির উপর দিয়ে হাঁটু থেকে কোমর সমান উচ্চতায় জল বয়ে যায়। বর্ষার কয়েক মাস নবগ্রাম থানা এলাকার শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই দফরপুর-ফাঁপড় গ্রামের অভিভাবকদের অনেকেই তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চান না। প্রধানশিক্ষক তুষার রায় বলেন, ‘‘মাত্র ২০০ মিটার রাস্তা ফুট চারেক উঁচু করে দিলেই ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আসার সমস্যাটি অন্তত মিটে যায়।”
ডোঙায় চেপে পরীক্ষা দিতে স্কুলের পথে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের জুল্লুর রহমান বলেন, “স্কুল ছাড়িয়ে গ্রামের ভিতরেও প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তার একই রকম বেহাল দশা। ফলে মোট ৫০০ মিটার রাস্তার ওই দশা। কিন্তু ওই পুরো রাস্তাটি পিচ পাথর দিয়ে উঁচু করার আর্থিক ক্ষমতা নেই পঞ্চায়েতের। এ কারণে ওই ৫০০ মিটার রাস্তা পিচ পাথর দিয়ে নির্মাণ করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” তবে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ওই রাস্তা নির্মাণ করার কোনও প্রতিশ্রুতি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এখনও পাননি।
কলাবাগানের কাছে বহরমপুর-কান্দি রাজ্য সড়ক থেকে উত্তর দিকে বেশ কিছুটা ফাঁকা মাঠের পর ওই স্কুলটি রয়েছে দফরপুর-ফাঁপড় গ্রামের প্রান্তে। ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্র কবিরুল শেখ বলেন, “বর্ষার সময় তালগাছের ডোঙায় করে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কখন যে ডোঙা উল্টে যাবে সেই ভয়ে আমার কাঠ হয়ে থাকি।” ফারেজ শেখ বলে, “পরীক্ষা চলছে তাই স্কুলে এসেছি। পরীক্ষা না থাকলে মা স্কুলে আসতে দিত না।” স্কুলের সহশিক্ষক কাশীনাথ দাস বলেন, “কখনও আমরা, কখনও অভিভাবকেরা তালগাছের ডোঙায় চাপিয়ে ছাত্রছাত্রীদের জলে ডুবে থাকা রাস্তাটা পার করে স্কুলে পৌঁছে দিই। শিক্ষিকাকেও ডোঙায় চাপিয়ে স্কুলে নিয়ে যেতে হয় আমদেরই।” তাঁদের বক্তব্য, জল জমে থাকায় নানা রকম দূষণ বাড়ে। ছোট ছেলেমেয়েরাই তার শিকার হয় সবার আগে।
ওই গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের রুফান হাজরা বলেন, “দশ বছর ধরে পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের কাছ থেকে শুনছি, কান্দি-বহরমপুর হাইরোড থেকে গ্রামের ভিতর পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তার গোটাটাই পিচ পাথর দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আজও তার কিছুই হল না। পড়েনি একটি পাথরও। বরং ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে প্রতি বছর বর্ষার জলে ওই রাস্তার মাটি গলে যাওয়ায় আরও নীচু হয়ে গিয়েছে। ফলে বর্ষার সময় মাস চারেক ধরে দফরপুর-ফাঁপড় গ্রামের ছেলে বুড়ো সবাইকে গ্রামেই বন্দি হয়ে থাকতে হয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.