|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
জলাশয় |
সৌন্দর্যের সন্ধানে |
দেবাশিস দাস |
অবশেষে বাসিন্দাদের দাবি মিটতে চলেছে। কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলির চারটি জলাশয়কে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। কেএমডিএ সূত্রে খবর, সংস্থার বোর্ডের বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন হয়ে গিয়েছে।
জলাশয়গুলির পাড় সুদৃশ্য রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। থাকবে আলোর ব্যবস্থা। বাতিগুলি পুরনো দিনের মতো হবে। পথ পেভার ব্লক দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হবে। তার মাঝে থাকবে ঘাসের আস্তরণ। পথের দু’পাশে থাকবে রংবাহারি গাছের সারি। সুসজ্জিত পথের পাশে থাকবে ছোটদের জন্য পার্ক। থাকছে ফুড কোর্টও। জলাশয়ের পাড়ে বসার জন্য থাকবে সুসজ্জিত বেঞ্চ। যাঁরা বেড়াতে আসবেন তাঁদের জন্য একটি জলাশয়ে প্যাডেল বোটে ঘোরার ব্যবস্থা থাকবে। একটি জলাশয়ের মাঝখানে থাকবে দ্বীপ। সেই দ্বীপও সুদৃশ্য রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। দ্বীপের মধ্যে থাকবে পাম গাছ। এই দ্বীপে কেউ যেতে পারবেন না।
|
|
জলাশয়-পরিকল্পিত রূপে |
কেএমডিএ সূত্রে খবর, এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। আপাতত ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই সব জলাশয় থেকে আয়ের পরিকল্পনাও করেছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে ফুড কোর্টের লিজ, প্যাডেল বোটের ভাড়া এবং বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ। রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কর্পোরেট সংস্থাকে যুক্ত করেও আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে কেএমডিএ-র।
বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলির বৃজি সংলগ্ন এই জলাশয়গুলিতে এখন মাছচাষ করে ‘বৃজি-পাটুলি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড’। সমিতি সূত্রে খবর, ৬৫টি মৎস্যজীবী পরিবার এই জলাশয়গুলিতে মাছচাষে যুক্ত। সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা চাই জলাশয়গুলির সৌন্দর্যায়ন হোক। তার পাশাপাশি আমাদের রুজি রোজগারের বিষয়টিকেও একটু গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করুক কেএমডিএ। আমাদের দাবি, মৎস্যজীবীদের বসার জায়গাটি সারিয়ে দেওয়া হোক।”
|
|
জলাশয়, এখন যেমন। |
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাইপাসের দু’ধারে এই জলাশয়গুলি দীর্ঘ অবহেলায় রয়েছে। গাড়ি ধোয়া থেকে প্রাতঃকর্ম সবই হয় এ সব জলাশয়ে। এক সময়ে এই সব জলাশয়ে নানা পাখিও আসত। কিন্তু পরিবেশ দূষণের কারণে আজ পাখির সংখ্যাও কমে গিয়েছে। ‘বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি উপনগরী নাগরিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সুবোধ রায় বলেন, “ওই সব জলাশয়ের সঙ্গে যে-সব মৎস্যজীবী যুক্ত তাঁদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে সৌন্দর্যায়ন হলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”
কলকাতার মেয়র এবং কেএমডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মৎস্যজীবীদের তরফে কয়েক জন প্রতিনিধি আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের রুজি রোজগারে কোনও অসুবিধে হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু তাঁদের জানিয়েছি যেখানে সৌন্দর্যায়ন হবে সেখানে কোনও স্থায়ী কাঠামো রাখা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই প্রকল্পের কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|