যুবভারতীতে ঢুকে যখন হাত বুলিয়ে কৃত্তিম ঘাসে দেখছেন তখনই এল টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আলেসান্দ্রো সাবেইয়ার ফোন। ‘একটু পরে করছি’ বলে মোবাইল পকেটে রেখে দিলেন জুলিয়ান কামিনো। তারপর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা ক্রীড়া দফতরের লোকজনের কাছে জেনে নিলেন, মাঠের মাপ কত। ঘুরে ঘুরে দেখলেন ড্রেসিংরুম, টানেল। মুখে ফুটে উঠল হাসি। ডানহাতের বুড়ো আঙুল তুলে উদ্যোক্তা সি এম জি কর্তাদের বোঝালেন, “কোনও সমস্যা নেই।”
সাই ঘুরে হোটেলে পৌঁছে কিছুক্ষণের মধ্যেই দৌড়োলেন নিজের ঘরে। ফোন করলেন ‘টিম বস’-কে। উদ্বিগ্ন মেসি-আগুইয়েরাদের জন্য পাঠালেন সবুজ সঙ্কেত। বলে দিলেন, “ঘাস থেকে সামান্য গরম উঠছে। তবে কোনও সমস্যা নেই।”
শুক্রবার সকালে কামিনোর ‘সঙ্কেত’-এর সঙ্গে সঙ্গেই লিওনেল মেসির আর্জেন্তিনা বনাম ভেনেজুয়েলার হাই প্রোফাইল ম্যাচের বল যেন তীব্র গতিতে গড়াতে শুরু করল। উদ্যোক্তা সেলিব্রিটি ম্যানেজমেন্ট তো বটেই, রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বসে থাকা ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রও যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। বিকেলে তারই রেশ যেন ছড়িয়ে পড়ল ক্রীড়ামন্ত্রীর মুখে। “এখনও স্টেডিয়ামের চল্লিশ শতাংশ কাজ বাকি, মানছি। কিন্তু যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে, আশা করছি সব কাজ ২৫ অগস্টের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কলকাতার সুনাম যাতে অক্ষুন্ন থাকে সে জন্য যা করতে হয় করব।” |
মাঠের ভিতরের বেশিরভাগ কাজ শেষ পর্যায়ে। কিন্তু যুবভারতীর প্রবেশ পথ থেকে টানেল এবং আশেপাশের অনেক কাজ বাকি। সেই কাজ শেষ করতে এ দিন বিকেল থেকে যেন দ্বিগুণ উৎসাহে নেমে পড়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী। স্টেডিয়াম চত্বরের মধ্যে বাসের ডিপো, গ্যারাজ এবং ডেকরেটার্সদের বাঁশ রাখা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল কয়েকদিন ধরে। এ দিন তা সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বলে দিলেন, “ও গুলো তিন দিনের মধ্যে সরিয়ে দেব। স্টেডিয়ামের ঢোকার ডান দিকে যে ভাঙা টিনের বেড়া রয়েছে তাও সরানোর নির্দেশ দিয়েছি। স্টেডিয়াম চত্ত্বরে কোথাও কোনও জঞ্জাল থাকবে না।”
মেসি-আগুয়েরোদের জন্য স্টেডিয়াম সংস্কারের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি রাতে দর্শকদের যাতে খেলার পর ফিরতে অসুবিধা না হয় তা নিয়ে সোমবারই কথা বলতে চান ক্রীড়ামন্ত্রী। পরিবহনমন্ত্রী সুব্রত বক্সির সঙ্গে। সন্ধ্যা সাতটায় ম্যাচ। খেলা শেষ হতে হতে রাত ন’টা হয়ে যাবে। মদনবাবু বললেন, “শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাতে একটি নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে দর্শকরা স্টেডিয়াম আসতে পারেন সে জন্য সোমবার কথা বলব।” এ দিকে, আর্জেন্তিনা ও ভেনেজুয়েলার বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে লক্ষাধিক দর্শকের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশও আলোচনা শুরু করেছে। জানা গেছে, প্রায় তিন হাজারেরও বেশি পুলিশ ওই দিন মোতায়েন থাকবে স্টেডিয়াম ও আশে পাশে। যুবভারতীতে শুক্রবার কামিনোর ছবি তুলেছেন উৎপল সরকার। |