তৃণমূলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ, খুলল ত্রাণ শিবির
গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। শুক্রবার সকাল থেকেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে উত্তেজনা ছড়ায় মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেনাডিহি, মহাতাবনগর, রানিপাটনা ও সংলগ্ন এলাকা। চলে ব্যাপক বোমাবাজি, লুঠপাট। আতঙ্কে অনেকে কাঁসাই সাঁতরে খড়গপুরের দিকে চলে যান। পরিস্থিতি এমন যে নদীর ওপারে খড়্গপুরের গোপালপুরে তৃণমূলের দলীয় উদ্যোগে ত্রাণ শিবির পর্যন্ত খুলতে হয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পথে আটকে যায় পুলিশের গাড়িও। শতাধিক মহিলা পথ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষমেশ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে ও পুলিশি তৎপরতায় দুপুরের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার আইসি পবিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে লুঠের সরঞ্জাম বোঝাই একটি ছোট লরি। গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা সরাসরি মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের অতর্কিত হামলার জেরেই গোলমাল ছড়ায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের কথায়, “এলাকায় শান্তি ফেরাতে সকলকেই উদ্যোগী হতে হবে। ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।”
মহিলাদের হাতাহাতি চন্দ্রকোনা রোডে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের নানা প্রান্তে রাজনৈতিক সংঘর্ষ হচ্ছে। কোথাও দ্বন্দ্ব সিপিএম-তৃণমূলে। কোথাও বা গোলমালে জড়াচ্ছে তৃণমূলের ভিন্ন গোষ্ঠী। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশের হিমসিম দশা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই চাপা উত্তেজনা ছিল মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেনাডিহি, রামনগরে। রাতে বেনাডিহিতে তৃণমূলের দলীয় বৈঠক ছিল। তার পরই অশান্তি ছড়ায়। রামনগর থেকে আসা কিছু তৃণমূল কর্মীকে বেনাডিহির কয়েক জন মারধর করে বলে অভিযোগ। রামনগরে সেই খবর পৌঁছতে উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার সকালে রীতিমতো পরিকল্পনা করে বেনাডিহি, মহাতাবনগর, রানিপাটনা ও আশপাশের গ্রামে হামলা চালানো হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। চলে বোমাবাজি, যথেচ্ছ লুঠপাট। হামলাকারীরা ৮-১০টি ছোট লরিতে চেপে এসেছিল। গোলমালের জেরে প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করেন গ্রামবাসী। অনেকে পাশের কাঁসাইয়ে ঝাঁপ দেন। নদীর ওপারে খড়গপুর গ্রামীণ এলাকা। সেখানকার গোপালপুরে তৃণমূলের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন জনা পঞ্চাশেক গ্রামবাসী। গোলমালের খবর পেয়ে এলাকায় আসেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। তিনি অবশ্য গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা সরাসরি মানতে চাননি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার বালি খাদানের কর্তৃত্ব কার হাতে থাকবে, তা-ও এ দিনের সংঘর্ষে ইন্ধন জুগিয়েছে।
এ দিন দুপুরে চন্দ্রকোনা রোড বিট হাউসের সামনেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। দু’দলেই মহিলাদের সংখ্যা ছিল বেশি। হাতাহাতিতে দু’জন আহত হন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও ঘটনাটি গোষ্ঠী সংঘর্ষ হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, পুরোনো এক ঘটনার জেরেই চন্দ্রকোনা রোডে এ দিন গোলমাল বাধে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.