|
|
|
|
গণ-আন্দোলন নিয়েই ফের কোন্দল কংগ্রেসে |
আশিস বসু • আগরতলা |
ত্রিপুরায় বাম-বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরেই ফের প্রধান বিরোধী দল, কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে চলে এল।
পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে হঠিয়ে বিরোধীদের ক্ষমতা দখলের ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মাস কয়েক আগে বিরোধী কংগ্রেস জোটবদ্ধ হওয়ার একটা চেষ্টা করেছিল। দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব পিছনে সরিয়ে সব গোষ্ঠীর নেতারা এক মঞ্চে হাজির হয়ে ত্রিপুরার দেড় দশকের সরকারকে উৎখাতের অঙ্গীকার করেছিল। আজ সেই ‘ঐক্য’ ফের অতীত।
কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহের নেতৃত্বাধীন কিষাণ-শ্রমিক-যুব কর্মী সমিতির সদস্যরা আজ আগরতলার বটতলা সংলগ্ন জয়নগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জমা হয়ে ২৫ দফা দাবিতে আইন-অমান্য আন্দোলন করে। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেসের বক্তব্য: পুরোটাই প্রদেশ নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে করা হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুরজিৎ দত্তর বক্তব্য, “প্রদেশ কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই আজকের আইন-অমান্য আন্দোলন করা হয়েছে। এমনকী কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও এ বিষয়ে অবহিত নয়।” প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, কংগ্রেস নয়, বীরজিৎবাবু নিজের ভাবমূর্তি বাড়াতেই কংগ্রেসকে এড়িয়ে এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। ওই নেতার মতে, এই ঘটনাকে ঘিরে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের দলীয় কোন্দল আবার যে ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল তাতে আগামী ১৬-১৭ মাস ব্যাপী রাজ্যে বামফ্রন্ট-বিরোধী কংগ্রেসের ঘোষিত আন্দোলন কতটা কার্যকর হবে সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। |
|
বীরজিৎ গোষ্ঠীর মিছিল। শুক্রবার।উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী |
রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ২৫ দফা দাবি আদায়ের জন্য আজকের আইন-অমান্য আন্দোলন করা হয়েছে বলে বীরজিৎবাবু জানান। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কৃষি প্রকল্প ও অনুদান প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার কৃষকদের অন্ধকারে রেখে সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের কৃষির ক্ষতিসাধন করছে। রাজ্যে কৃষি উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কৃষকরা সেচের সুযোগ পাচ্ছেন না। নির্মাণ-শিল্পে যুক্ত কর্মীদের জন্য বিমা চালু, স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবাদের জন্য ভাতা দেওয়া ও দরিদ্র ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক নীতির অবসানের কথাও এই দাবি-সনদে রয়েছে। প্রদেশ নেতৃত্বের উষ্মা প্রসঙ্গে বীরজিৎবাবু কিছু না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, একটি সভা করেই প্রদেশ কংগ্রেস কাজ সেরেছে। কোনও আন্দোলন সংগঠিত করছে না। সেই কারণেই বীরজিৎবাবুকে এককভাবে এগিয়ে আসতে হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ প্রদেশ নেতৃত্বের একাংশ আন্দোলন-বিমুখ হয়ে পরোক্ষে সিপিএমকেই মদত দিচ্ছে।
আজকের আন্দোলনে যোগদানের জন্য বীরজিৎবাবুরা বিরোধী দলনেতা রতনলাল নাথ, বিধায়ক সুদীপরায় বর্মন-সহ রাজ্য নেতৃত্বের প্রথম সারির অনেক নেতাকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কেউই অবশ্য উপস্থিত ছিলেন না। প্রসঙ্গত, এই আন্দোলনকে ঘিরে গত ১০ ও ১১ জুলাইয়ের হিংসাত্মক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকেও রাজ্য পুলিশকে উপযুক্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা, উভয়পক্ষই আজ সংযত ছিল। |
|
|
|
|
|