|
|
|
|
সঙ্গী ফের অ-কংগ্রেসি দলগুলি |
বিজেপির বন্ধের প্রস্তাব এড়িয়ে গিয়ে পথে নামছে বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিজেপি চায় বামেদের নিয়ে ভারত বন্ধ ডাকতে। সে জন্য এনডিএ-র চেয়ারম্যান শরদ যাদবকে দিয়ে প্রস্তাবও পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু সেই প্রস্তাব এড়িয়ে বিজেপি-র আগেই ‘কার্যকর’ লোকপাল বিলের দাবিতে পথে নেমে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করে দিল বামেরা। ২৩ অগস্ট দেশ-জুড়ে প্রতিবাদ ধর্নার কর্মসূচিতে তাদের সঙ্গী হবে ৫ অ-কংগ্রেসি দল।
পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ-বিরোধী অবস্থান নিয়ে চলায় রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই আপাতত বন্ধের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না বামেরা। অ-কংগ্রেসি পাঁচ দলের সঙ্গে বৈঠকের আগেই বাম নেতারা নিজেদের মধ্যে ঠিক করে নিয়েছিলেন, এখনই ভারত বন্ধ ডাকা হবে না। তাতে বিরোধী হিসেবে বিজেপি-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও এড়ানো যাবে। এর পর চন্দ্রবাবু নায়ডু, এইচ ডি দেবগৌড়া, অজিত সিংহের দল-সহ ৫টি ধর্মনিরপেক্ষ অ-কংগ্রেসি দলের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্রকাশ কারাটরা।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, অণ্ণা হজারেকে নিয়ে মনমোহন সরকারের নাস্তানাবুদ অবস্থা দেখে কি ফের তৃতীয় ফ্রন্টের লক্ষ্যে এগোতে চাইছেন প্রকাশ কারাটরা? কারাট অবশ্য অন্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “এগুলো বিষয়ভিত্তিক প্রতিবাদ, অতীতেও আমরা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এক সঙ্গে ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছিলাম।” ২৩-এর কর্মসূচির বিষয়ে বাম নেতাদের যুক্তি, অণ্ণার আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলির পরিসরটাই দখল করে নিচ্ছে। অথচ স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ গেমস পর্যন্ত সব দুর্নীতি মামলাতেই বিরোধীরা, বিশেষ করে বামেরা সরব হয়েছে। অথচ অণ্ণার মঞ্চ থেকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে, সব রাজনৈতিক নেতাই দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই রাজনৈতিক দলগুলিও যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছে, মানুষকে তা বোঝাতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে। ঘরে বসে বন্ধের ডাক দিয়ে লাভ হবে না।
অণ্ণাকে সামনে রেখে লোকপাল বিল নিয়ে মনমোহন সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে অবশ্য কসুর করছেন না কারাটরা। এত দিন প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় না রাখার মতো কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি তুলেছে বামেরা। আবার অণ্ণা শিবিরের তৈরি জন-লোকপাল বিলের সব কিছু মেনে নিলে সরকারের সমান্তরাল প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়ে যাবে, সে কথাও মানছে তারা। জন-লোকপাল বিল পাশের দাবিতে অণ্ণা আজ যখন রামলীলা ময়দানে অনশনে বসেছেন, বামেরা তখন বলছেন পেশ হওয়া লোকপাল বিলের পুরো কাঠামোটাই ত্রুটিপূর্ণ। সিপিআই-প্রধান বর্ধন বলেছেন, “আমরা পুরো বিলটাই প্রত্যাহার করার দাবি তুলতে পারি।” কারাটেরও বক্তব্য, বিলটির খসড়া এতটাই ‘দুর্বল’ ও ‘অকার্যকর’ যে অল্প কিছু সংশোধন করে লাভ হবে না। কারাটের আশা, এ বিষয়ে এনডিএ-ও একই অবস্থান নেবে। কারণ তারাও জানিয়েছে, এই বিল আইনে পরিণত হলে কোনও লাভই হবে না।
তবে বিজেপি-র মতো প্রথমেই বন্ধের পথে যেতে না চাইলেও তাদের প্রস্তাব কিন্তু সরাসরি খারিজ করেনি বামেরা। উজ্জয়নে আরএসএস-এর সঙ্গে তিন দিনের বৈঠক আজ শেষ হয়েছে। সঙ্ঘ- নেতাদের একাংশ সরাসরি অণ্ণার পাশে দাঁড়ানোর পক্ষপাতী হলেও বিজেপি-তে এ নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিজেপি এ ব্যাপারে কী অবস্থান নেয়, বামেরা তা দেখে নিতে চায়। এর মধ্যে ২৩ অগস্টের কর্মসূচিতে কতটা সাড়া মেলে, তা-ও বোঝা যাবে। তবে এনডিএ ওই দিনেই প্রতিবাদ-কর্মসূচির ডাক দেবে না বলেই মনে করছে বামেরা।
উজ্জয়নের বৈঠক সেরে জন্মাষ্টমীর পর দিনই দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আয়োজন করা বিজেপি-র পক্ষে মুশকিল। সে ক্ষেত্রে বামেরাই আগে ‘কার্যকর’ লোকপাল বিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে এই বার্তা দেওয়ারও সুযোগ পাবেন কারাট-বর্ধনরা। |
|
|
|
|
|