|
|
|
|
‘জতুগৃহ’ বরাকর রুদ্ধ যানজটেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
শতাব্দিপ্রাচীন বাজার। সেখানে না আছে যথাযথ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, না দমকল ঢোকা-বেরোনোর উপযোগী চওড়া রাস্তা।
কাপড়ের গুদামে আগুন লাগার পরে বরাকর বাজারে স্থায়ী অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। বাজার এলাকায় দমকলের গাড়ির যাতায়াতের জন্য চওড়া রাস্তা তৈরির দাবিও উঠেছে।
কুলটি পুর কর্তৃপক্ষের কাছে বৃহস্পতিবারই মৌখিক ভাবে এই দাবি জানানো হয়েছিল। রাজ্যের মন্ত্রীর কাছেও গণস্বাক্ষরিত আবেদনপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এলাকাবাসী। কুলটির পুরপ্রধান তথা বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অবৈধ দখলদার সরিয়ে রাস্তা চওড়া করার কাজও শুরু করেছে কুলটি পুলিশ। |
|
এই ছবি নিত্যদিনের। বাজার এলাকায় শৈলেন সরকারের তোলা ছবি। |
বৃহস্পতিবার বরাকর স্টেশন রোডে একটি কাপড়ের গুদামে আগুন লাগে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়ানো এই পুরনো এই বাজারে কোনও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই। আগুন লাগলে প্রায় ১৯ কিমি দূর থেকে আসানসোল দমকলকে আসতে হয়। অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অতীতেও এ রকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তবু কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। গোটা এলাকা কার্যত ‘জতুগৃহ’ হয়ে আছে।
বস্তুত শুধু অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থার অভাব নয়, ওই এলাকায় পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থাও নেই। রাস্তার বেশির ভাগই অবৈধ দখলদারদের কব্জায়। সরু রাস্তায় যানজটে থমকে যায় দমকলের গাড়িও। বৃহস্পতিবারও তা-ই ঘটেছে। ফলে, যত দ্রুততার সঙ্গে আগুন নেভানোর কথা, দমকল কর্মীরা তা পারেননি। দমকলের ওসি সেলিম জাভেদ বলেন, “যানজটের জন্য ইঞ্জিনের গতি থমকে গিয়েছে। জলের অভাবেও আমরা হিমসিম খেয়েছি। বহু দূর থেকে জল এনে আগুন নেভাতে হয়েছে।” তাঁর মতে, বরাকর বাজারকে ভবিষ্যতে আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা করতে রাস্তা চওড়া করা জরুরি। বাজারের মধ্যে একটি জলাধারও বানাতে হবে। এ রকম কয়েকটি প্রস্তাব পুরসভাকে পাঠাচ্ছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। |
|
ফাইল চিত্র। |
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা অনেক বার আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার আবেদন করেছেন। কিন্তু ফল হয়নি। দখলদার হটিয়ে রাস্তা চওড়া করার অনুরোধ করেও কিছু হয়নি। বরাকর চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি গিরিধারীলাল অগ্রবালের খেদ, “বাজারের মধ্যে জলাধার বানানো এবং নিয়ামতপুর থেকে বরাকরের মাঝখানে দমকলের অন্তত একটি গাড়ি রাখার অনুরোধ জানিয়েছি আমরা। কোনওটিই হয়নি।” বস্ত্র ব্যবসায়ী তথা বরাকর নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি রামমোহন ভরের আশঙ্কা, “কবে যে সব সুদ্ধ পুড়ে ছাই হয়ে যাব, তা-ই ভাবছি।” পাশাপাশি, সচেতনতা বৃদ্ধির কথাও উঠছে। বরাকর বাজারে প্রচুর দাহ্য পদার্থের ব্যবসা রয়েছে। ওই ব্যবসায়ীরা যাতে নিজেরাই বিকল্প অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখেন, তার জন্য বণিক সংগঠনগুলি আবেদন জানিয়েছে।
পুরপ্রধান তথা বিধায়ক উজ্জল চট্টোপাধ্যায় জানান, যানজট কমাতে পুলিশকে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই বরাকর পুলিশ ফাঁড়িতে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, বণিক সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। পরে আরও কয়েকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। গুরুত্ব দিয়ে ওঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।” |
|
|
|
|
|