রাজ্যে ‘বন্ধ-অবরোধ-ভাঙচুরের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে ফের কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশিই রাজ্যের যুব সমাজের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘অন্যায়-অত্যাচার’ দেখলে রুখে দাঁড়ান। প্রশাসন তাঁদের পাশে থাকবে।
কসবার রাজডাঙায় মঙ্গলবার নতুন স্টেডিয়ামের (যার আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘গীতাঞ্জলি’) উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্ধ-অবরোধ-ভাঙচুরের রাজনীতি আর নয়। ৩৪ বছরে এই রাজনীতিই বাংলার সর্বনাশ করে দিয়েছে! এখন গড়ার রাজনীতির সময়।” রাজ্যের আর্থিক সঙ্গটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেও মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, “টাকা নেই, গড়তে পারছি না। এর মধ্যে ভাঙলে কী করে হবে?” |
ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই বন্ধ-অবরোধের পথ থেকে সরে এসেছিলেন মমতা। গত বেশ কয়েক বছর বিরোধী শিবিরে থাকার সময়েও তৃণমূল কোনও বন্ধ ডাকেনি। এমনকী, তাঁদের তৎকালীন জোটসঙ্গী এসইউসি-র বন্ধককেও সমর্থন করেননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রী হয়েও সেই মর্মে এখন কড়া বার্তা দিচ্ছেন ‘প্রশাসক’ মমতা। বস্তুত, গত ২১ জুলাই তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশে বিপুল জমায়েত হলেও শহরে যাতে যানজট না-হয়, তার দিকে লক্ষ্য রেখেছিল রাজ্য প্রশাসন। সেই প্রচেষ্টা অনেকাংশে সফলও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সমাবেশের আগেরদিন মমতা ‘তৃণমূল নেত্রী’ হিসেবে আমজনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। তার পর থেকেই বিভিন্ন সময়েই মমতা বন্ধ-অবরোধের রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন। রাজ্যের ‘বিশৃঙ্খল’ ভাবমূর্তির অবসান ঘটাতেই মুখ্যমন্ত্রীর ওই বার্তা বলে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের অভিমত। এদিন এমনকী, স্টেডিয়াম উদ্বোধনে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।
অতীতে বাংলার যে ‘প্রতিবাদী’ চরিত্র ছিল, তার পুনরুদ্ধারের কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “অন্যায় দেখলে, অত্যাচার দেখলে এগিয়ে আসুন। প্রতিবাদ করুন। প্রশাসন আপনাদের পাশে থাকবে।” শাসক দল হয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা বহু জায়গায় ‘অত্যাচার’ চালাচ্ছেন, ‘সন্ত্রাস’ করছেন বলে অভিযোগ আসছে। সেই প্রেক্ষিতেও এ দিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মমতা বলেছেন, “সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না। তোলাবাজি চলবে না। আমরা গুণ্ডা তৈরি করতে চাই না। উন্নততর মানুষ গড়তে চাই।” |