অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি কাল, ‘বাজেট’ নিয়ে বিতর্ক
বিধানসভায় কাল, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক বিবৃতি দেবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কিন্তু প্রথাগত বাজেট পেশ না-করে রাজ্য সকার কেন বারবার আর্থিক বিবৃতি এবং ভোট-অন-অ্যাকাউন্টের পথে যেতে চাইছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। ফলে, এ বার আর পূর্ণাঙ্গ বাজেট হবে কি না, তা নিয়ে বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশন শুরু হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেও ধোঁয়াশা কাটেনি। রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফেও যে হেতু রাজ্যকে বাজেট পেশ করারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা-ই এই নিয়ে কৌতূহল এবং ধোঁয়াশা, দুই-ই তুঙ্গে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানিয়েছেন, তাঁর বিবৃতির মধ্যেই অর্থমন্ত্রী ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
নতুন সরকারের আমলে বিধানসভার প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার থেকে। পর দিনই অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি এবং সে দিনই তা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনা শুরু হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহে আলোচনা হবে দফাওয়াড়ি ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অধিবেশন চলবে বলে এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে। অধিবেশন বসার আগে এ দিনের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক থেকেই স্পষ্ট, রাজ্যের আর্থিক হাল কেন রাজ্য স্পষ্ট করে জানাচ্ছে না এবং কেন পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে বিরোধী শিবির। অর্থমন্ত্রীর বিবৃতির বিষয়টিকে যেন অন্তত ‘বাজেট নিয়ে আর্থিক বিবৃতি’ বলা হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই সরকার পক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে বিরোধী বামফ্রন্ট।
বাজেট নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই বিধানসভার নিরাপত্তা আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে। এতটাই যে, তা নিয়েও নতুন একটি কমিটি গড়া হয়েছে! বিধানসভায় সরকার পক্ষের দলনেতা তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ ৭ সদস্যের ওই কমিটিতে আছেন আরও দুই মন্ত্রী সুব্রত বক্সী ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিধানসভায় ‘বহিরাগত’দের ‘অবাঞ্ছিত প্রবেশ’, বিধায়কদের গাড়ি রাখা-সহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ওই কমিটি পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। শোকপ্রস্তাব হয়ে আজ প্রথম দিন বিধানসভার অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। তার পরে ওই কমিটির বৈঠকে বসার কথা পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে।
কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর বিবৃতির পরে ওই দিন শেষার্ধে এবং শুক্রবার দিনভর তা নিয়ে আলোচনা হবে। তার পরে আগামী সপ্তাহে ১৬ থেকে ১৯ অগস্ট বিপর্যয় মোকাবিলা, দমকল, অসামরিক প্রতিরক্ষা, শ্রম, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, কারা, খাদ্য, পরিবেশ, সংখ্যালঘু, মাদ্রাসা এবং বিদ্যুৎ দফতরের ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হবে। বাকি দফতরগুলির বিষয়ে সূচি ঠিক হবে ১৮ তারিখ কার্য উপদেষ্টা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে। স্পিকার বিমানবাবু এ দিন বলেন, “অর্থমন্ত্রী আর্থিক বিবৃতি দেবেন ১১ তারিখ। ওই বিষয়ে বিরোধীদের বেশ কিছু প্রশ্ন আছে। অর্থমন্ত্রী তাঁর ব্যাখ্যা দেবেন।” বস্তুত, রাজ্য সরকার মনে করে, গত ১৪ জুন তারা যে বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি বিধানসভায় দিয়েছে, তা-ই বাজেট। তবে সেই সময় পাশ করানো হয়েছিল তিন মাসের ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট। এ বার প্রয়োজনে অতিরিক্ত কর বিল এনে রাজ্য সরকারের করপ্রস্তাব পেশ করা হতে পারে। বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু অবশ্য বলেন, “সাংবিধানিক দিক থেকে তাতে কোনও অন্যায় নেই। কিন্তু বাজেট করলে তবেই একটা সরকারের অর্থনৈতিক দিশা বোঝা যায়। ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট কোনও কার্যকরী সরকারের লক্ষণ নয়। দিল্লির কাছ থেকে যে আর্থিক সাহায্যের কথা বলা হচ্ছে, সেটাও রাজ্য সরকার তাদের তহবিলের অতিরিক্ত উৎস হিসাবে বিধানসভায় দেখাবে, এটাই প্রত্যাশিত।”
অধিবেশন শুরুর আগে এ দিন প্রথাগত সর্বদল বৈঠকেও বিধানসভার কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালাতে সব দলের সহযোগিতা চেয়েছেন স্পিকার। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বিধানসভার এই অধিবেশনেই চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইছে বিধানসভা। ইতিমধ্যেই গাড়ির জন্য বিধানসভা থেকে দেড়শো স্টিকার ‘ইস্যু’ হয়েছে, যা সাম্প্রতিক কালে হয়নি! আরও আবেদন জমা পড়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, এ বার স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলনেতা এবং মন্ত্রীদের গাড়িই শুধু বিধানসভা ভবনের ভিতরে রাখা যাবে। বিধায়কদের নামিয়ে তাঁদের গাড়ি বাইরে চলে যাবে। সেই সব গাড়ি কোথায় রাখা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চালাবে নবগঠিত কমিটি। স্পিকারের বক্তব্য, “বার অ্যাসোসিয়েশন এবং হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলব। বিধানসভার সীমানা-প্রাচীরের গায়ে যে ভাবে গাড়ি থাকে, অধিবেশন চলাকালীন তা থাকুক, আমরা চাই না। আলোচনা করেই বিষয়টা মেটাতে চাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.