|
|
|
|
মরণ-বাঁচন টেস্টে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রাখছেন দু’দেশের দুই প্রাক্তন |
 |
রায়নাদের চেয়ে আমার মা-ও
শর্ট বল ভাল খেলবে জিওফ্রে বয়কট |
|
সিরিজে ০-২ পিছিয়ে পড়ার পর ভারত তৃতীয় টেস্টে কী ভাবে উঠে দাঁড়াবে ভেবে পাচ্ছি না। সত্যি বলতে কী, জাহির খান ওদের বোলিংয়ে সেরা আশা ছিল, বিশেষ করে এজবাস্টনের পিচ-পরিবেশের নিরিখে। কিন্তু চোটের জন্য সফর থেকেই ও ছিটকে পড়ার পর আমি কোনও আশা দেখছি না যে, অপরীক্ষিত আর পি সিংহ-কে টিমে ঢুকিয়ে ভারত দু’বার ইংল্যান্ডকে অলআউট করে দেবে।
কিছু ভারতীয় সমর্থক হয়তো আশা করছেন যে, লন্ডনের সংঘর্ষ বার্মিংহামেও ছড়িয়ে পড়ায় এজবাস্টন টেস্ট হয়তো ভণ্ডুল হয়ে যাবে। দুঃখিত, আমি সে রকম কিছু ঘটার সম্ভাবনা দেখছি না। অতএব ভারতের কাছে সরাসরি মরণবাঁচন টেস্ট এটা এবং সেটাও ফের একটা দারুণ সবুজ উইকেটে!
এখনও যে বাউন্সি উইকেটে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সেরা বাজি সচিন-রাহুল-লক্ষ্মণই সেটা আপনারা ক’জন লক্ষ্য করেছেন? ক’জন দেখেছেন যে, লাফিয়ে ওঠা বলের সামনে ভারতের একজনও তরুণ ব্যাটসম্যান কোনও কাজে আসে না? সুরেশ রায়না...ওরে বাবা! আমার মা-ও বোধহয় শর্ট বলের সামনে ওর চেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন! আর সেটা এখন সবাই জেনে গেছে। ইংল্যান্ড বোলাররা নির্ঘাত শর্ট বল-ই করবে এবং রায়নার জন্য অপেক্ষা করবে। |
 |
পারবেন কি সহবাগ আলো জ্বালাতে? -রয়টার্স |
হ্যাঁ, ভারতে পিচগুলো স্লো আর নিচু। বল বড়জোর ব্যাটসম্যানের বুক পর্যন্ত ওঠে। কিন্তু সচিন-রাহুল-লক্ষ্মণ তো আজকের ভারতীয় তরুণদের মতো ওই উইকেটে খেলে-খেলেই বড় হয়েছে! সোজাসাপ্টা উত্তর হল, ওরা তিন জন কিংবা ওদের সমসাময়িকরা যখন ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে উঠেছিল, তখন এখনকার মতো ওয়ান ডে ক্রিকেট নিয়ে এত বিশাল মাতামাতি ছিল না। তখনও টেস্ট ক্রিকেটই সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। ‘মাতামাতি’ শব্দটা আমি যখন লিখছি, ধরে নিতে হবে ভেবেচিন্তেই লিখছি। শেষ পাঁচ বছরে ক্রিকেট যে হারে টাকা উপার্জনকেই মোক্ষ ভেবেছে, অতীতে কখনও সে রকম হয়নি ধন্যবাদ টিভি সম্প্রচার এবং আইপিএল-কে আর দেশে-দেশে গজিয়ে ওঠা টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে-র ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে! বাণিজ্যিকরণ এখন ক্রিকেট খেলাটার অপরিহার্য নিয়ম।
আমি বাজি ফেলে বলতে পারি যে, এখন কোনও তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটার সচিন হতে চায় না। যদিও ওদের বয়সে সচিন অবশ্যই সুনীল গাওস্কর হতে চাইত। এখনকার তরুণ ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ান ডে-র বেশি স্বপ্ন দেখে না। পরের এনডোর্সমেন্ট-এর বেশি ওদের দৃষ্টি এগোয় না। আর পি সিংহ-কেই দেখুন। আইপিএলে সেরা বোলারদের এক জন, কিন্তু টেস্ট ম্যাচের পরিসংখ্যান কী?
আর কেনই বা একজন উঠতি ক্রিকেটার টেস্ট প্লেয়ার হতে চাইবে? টেস্ট ক্রিকেটে সে রকম প্রচুর টাকা কোথায়? কেন একজন তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটার পেস বোলার হতে চাইবে? গোটা দেশে একটাও ঘাসের উইকেট নেই, যেখানে সে নিজের স্কিলের পুরোপুরি চর্চা করতে পারবে। উঠতি ক্রিকেটারের ভুল টেকনিক শোধরানোরও সময় নেই। কারণ, খুব কাছেই তার পরের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার দিন! আগে এ সবের জন্য কর্মকর্তাদের দোষারোপ করা হত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, প্লেয়াররাও সমান দোষী। সে জন্য তারা আমাদের সমবেদনাও হারাচ্ছে।
শুধু ভারতীয় ক্রিকেটকে দোষ দিয়েই বা কী হবে? অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড বাদে টেস্ট ক্রিকেট সর্বত্র যে ভাবে অগ্রাধিকার তালিকায় নীচের দিকে চলে যাচ্ছে, আমার ভয় হচ্ছে, পনেরো বছরের মধ্যে টেস্ট ম্যাচই না উঠে যায়! বিশ্ব ক্রিকেট যে ভাবে সীমিত ওভারের ম্যাচ নিয়ে পাগলামি শুরু করেছে তাতে শুধু ক্রিকেটারদের দোষারোপ করে লাভ নেই।এহেন পরিস্থিতিতে কোনও একটা টেস্ট ম্যাচের ফলাফল খুব বিশাল ব্যাপার নয়। যা-ই হোক, ভারতের ভাল করার জন্য শর্ত খুব সরলদারুণ ভাল বোলিং (যার সম্ভাবনা প্রায় নেই)। দারুণ ভাল ব্যাটিং (সহবাগ-গম্ভীর ফেরায় সেটা হলেও হতে পারে)। এবং টেস্ট ক্রিকেটকে তার ন্যায্য সম্মান দিয়ে খেলা! |
|
|
 |
|
|