|
|
|
|
বাংলাদেশকে দেখে শিখুন, হিনাকে বলেছেন কৃষ্ণ |
অগ্নি রায় • নয়াদিল্লি |
সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে দেখে শিক্ষা নিন। সাম্প্রতিক বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানের হিনা রব্বানি খারকে ঠিক এই কথাই বলেছেন এস এম কৃষ্ণ। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় কৃষ্ণ সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত দু’বছরে ঢাকা যে ভাবে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাস ঘাঁটিগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক পদক্ষেপ করেছে, হিনার কাছে তা তুলে ধরেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। কৃষ্ণ জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশ আজ অনেক কাছাকাছি। এর পিছনে তাদের এই পদক্ষেপগুলি বিরাট ভূমিকা নিয়েছে। এরই জেরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের আসন্ন বাংলাদেশ সফরে বেশ কিছু ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে, যেগুলি নিয়ে বহু বছর দু’দেশের মধ্যে মতানৈক্য ছিল।
ঠিক একই ভাবে পাকিস্তানকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন কৃষ্ণ। জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার নেতা হাফিজ সঈদের প্রসঙ্গটি সুনির্দিষ্ট ভাবে তুলে ধরেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, মুম্বই হামলার পিছনে অন্যতম মস্তিষ্ক হাফিজ সঈদ যে ভাবে প্রকাশ্যে ভারত-বিরোধী জিগির চালিয়ে যাচ্ছে, তা অবাঞ্ছিত।
এর ফলে ভারত-পাতিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনার সঞ্চার হচ্ছে। ভারতের দাবি, অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক হাফিজকে। পাশাপাশি ভারত-বিরোধী সন্ত্রাস ঘাঁটিগুলিও ধ্বংস করা হোক।
 ভারতের মাটিতে পা রেখেই কাশ্মীরের হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষ্ণ। সূত্রের খবর, পাক নেতৃত্বকে বলা হয়েছে হুরিয়ত নেতৃত্ব যদি বিচ্ছিন্নতাবাদ ছেড়ে গণতান্ত্রিক প্রথায় নির্বাচনের পথে হাঁটে, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ভারত সরকারের বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কিন্তু একশো কুড়ি কোটি ভারতবাসীর প্রতিনিধিত্ব করছে যে সরকার, তার সঙ্গে কথা না বলে হুরিয়তদের সঙ্গে আগে আলোচনা করার পাক-সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লি কিছুতেই মানতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে ভারত এতটাই উষ্মা প্রকাশ করে যে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে হিনা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রসঙ্গটিই আর তোলেননি।
বিদেশ মন্ত্রকের অফিসারেরা মনে করেছেন, ভারতের চাপের ফলে তড়িঘড়ি যে পাক মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাস ঘাঁটিগুলি বন্ধ হয়ে যাবে, বা মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের বিচার দ্রুত শেষ হয়ে যাবে, এমন নয়। কিন্তু এটাও ঠিক, ওসামা বিন লাদেন হত্যার পরবর্তী পর্যায়ে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে রয়েছে পাক প্রশাসন। পাকিস্তানকে মার্কিন সামরিক সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। আফগানিস্তানের প্রশ্নে ভারতের ভুমিকাকে সমর্থন করছে ওয়াশিংটন।
পাশাপাশি ইসলামাবাদের পরম মিত্র চিনও সম্প্রতি পাক-সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছে। আবার অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেও এই সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। এই সার্বিক পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়ে যাওয়ার কৌশলই নিয়েছে নয়াদিল্লি। |
|
|
 |
|
|